মৌসুমি রোগের এ সময় চাই সঠিক পথ্য
সামসুন নাহার স্মৃতি
প্রকাশ: ০১ এপ্রিল ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ঋতু পরিবর্তনের এ সময় অনেকেরই বিভিন্ন ধরনের সংক্রামক রোগ দেখা দিতে পারে; যেমন-চিকেন পক্স, গুটি বসন্ত কিংবা সর্দি-কাশি, ঠান্ডা লাগা, জ্বর ইত্যাদি।
তাই এ সময় খাদ্য তালিকায় থাকা চাই পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ যুক্ত মৌসুমি ফল ও বিভিন্ন রঙের শাকসবজি। দেশীয় মৌসুমি ফল যেমন-পেয়ারা, আমড়া, কামরাঙা, বাউকুল, বরই ও বিদেশী ফলের মধ্যে মালটা, কমলা, আনার, নাশপাতি, ড্রাগন, আঙুর খাওয়া যেতে পারে।
ভিটামিন ‘সি’র সব থেকে ভাল উৎস হল লেবু। প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় একটি করে লেবু বা লেবুর তৈরি কোন খাবার যেমন-লেবুর শরবত, লেবু চা রাখলে ভালো হয়। এতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
* পেয়ারা : পেয়ারা খেতে যেমন সুস্বাদু পুষ্টিগুণেও ভরপুর। ভিটামিন ‘সি’ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ এ ফল ফ্রি রেডিকেলের হাত থেকে শরীরকে রক্ষা করে; যার ফলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
সর্দি, ঠান্ডা ,কাশি থেকে রক্ষা পেতে হলে প্রতিদিনে খাদ্য তালিকায় সবুজ পেয়ারা ফল হিসাবে কিংবা সালাদে বিভিন্ন ধরনের রেসিপি তৈরি করা যায়। অনেক শিশুরা ফল খেতে চায় না, তাদের জন্য বিভিন্ন ধরনের ফল দিয়ে জ্যাম-জেলি ঘরে তৈরি করে দিতে পারেন; এতে করে শিশুরাও পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ পেতে পারে।
* কমলা : রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্র বজায় রাখা, এমনকি ওজন কমাতেও কমলা সাহায্য করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে হলে কমলা রঙের এ ফলের জুড়ি মেলা ভাড়। কমলা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
* মালটা : মালটা প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য শিশু কিংবা বয়স্কদের জন্য মালটার জুস কিংবা মালটার চা হতে পারে অতুলনীয় পানীয়।
* আনার বা বেদানা : লাল রঙের এবং ছোট ছোট দানাযুক্ত এ ফলটি রক্তস্বল্পতা রোধে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। বেদানা রক্তকে পরিশুদ্ধ করতে পারে এবং শারীরিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
* বরই বা কুল : এ সময় বাজারে বিভিন্ন ধরনের বরই বা কুল দেখতে পাওয়া যায়। ছোট বাউকুল বা দেশি কুলকে আমরা যা-ই বলি না কেনো; রোগ প্রতিরোধ করতে চাইলে বরই কিংবা কুলের বিকল্প মেলা কঠিন। এ ফলে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’, মিনারেলস, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ পুষ্টি উপাদান যা শরীরের ফ্রি র্যাডিকেল মুক্ত করে দেহকে সুস্থ ও নিরোগ রাখতে সাহায্য করে।
এছাড়াও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য খেতে পারেন জাম্বুরা, আমলকী। মৌসুমি ফল দিয়ে বিভিন্ন ধরনের সালাদ, ভিন্ন ভিন্ন রেসিপি করেও খাবারে দেওয়া যেতে পারে। যেমন- চালতা কিংবা আমড়ার টক রান্না করা যেতে পারে, আমলকীর মোরব্বা করা যেতে পারে, এমনকি বাজারের কেমিক্যালযুক্ত জ্যাম-জেলি না কিনে ঘরেই এসব মৌসুমি ফল দিয়ে মুখরোচক জ্যাম-জেলি তৈরি করে শিশুদের সকালের নাস্তায় কিংবা স্কুলের টিফিনেও দেওয়া যেতে পারে।
লেখক : ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনিষ্ট অ্যান্ড ডায়েটিশিয়ান, উত্তরা ক্রিসেন্ট হসপিটাল, উত্তরা ঢাকা।
