Logo
Logo
×

সুরঞ্জনা

আসমার দিনরাত্রি

Icon

শওকত আলী রতন

প্রকাশ: ১৩ জুন ২০২১, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় বাবাকে হারান আসমা। ছয় বোন ও এক ভাইয়ের সংসারে উপাজর্নক্ষম কেউ না থাকায় স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার গঙ্গারামপুরের পৈতৃক ভিটা বিক্রি করতে বাধ্য হন। নিরুপায় হয়ে মা ও ভাইবোনদের নিয়ে চলে আসেন নবাবগঞ্জ উপজেলার কাশিমপুর এলাকায়। একটি ভাড়া বাড়িতে অবস্থান করেন। গ্রামে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করেন প্রয়োজনীয় নানা সামগ্রী। কখনো বাদাম, কখনো জুতা স্যান্ডেল, কাপড়, ঝাড়ু, নিমকি-চানাচুর আবার সবজি বিক্রি করে সংসার চালিয়েছেন। কিছুদিন পরই একমাত্র ভাইকে হারিয়ে আরও ঝুঁকির মধ্যে পড়েন। তারপরও হাল ছাড়েননি আসমা।

বোনদের বিয়ে হওয়ায় মাকে নিয়ে গড়েন সংসার। যখন যে কাজ পেয়েছেন তাই-ই করেছেন। দু’বেলা দুমুঠো ভাতের জন্য অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছে তাকে।

১০ বছর আগে উপজেলা প্রশাসন থেকে তিনি উপজেলার নবাবগঞ্জ বাজারে জেলা পরিষদ মার্কেটের একটি দোকান বরাদ্দ পান। তখন পেশা পাল্টিয়ে শুরু করেন সেলাইয়ের কাজ। লুঙ্গি সেলাইয়ের পাশাপাশি বস্তা দিয়ে ব্যাগ তৈরি করে বিক্রি করেন। সকাল ১০ থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দোকানে সময় দেন তিনি। কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবসের পেয়েছেন জয়িতা পুরস্কার।

বিয়ে করলেও সে বিয়ে বেশিদিন টেকেনি। স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করে। একমাত্র মেয়েকে নিয়ে আসমা এগিয়ে চলেছে নিজের লক্ষ্যে। মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন বছরখানেক আগে।

আসমার দীর্র্ঘপথ পাড়ি দেওয়ার ক্ষেত্রে বিভিন্ন সময় বুদ্ধি ও পরামর্শ দিয়েছেন নারী উদ্যোক্তা মাধুরী বণিক। নারীদের কর্মসংস্থান তৈরিতে সবার কাছে তিনি একটি সুপরিচিত মুখ।

এ প্রসঙ্গে আসমা জানান, একমাত্র মেয়ে মনিকা ইয়াসমিন সুরাইয়াকে বিয়ে দিয়েছি। মেয়ে শ্বশুরবাড়িতে সুখে শান্তিতে আছে এটাই আমার পরম শান্তি। একটা সময়ে সবার মুখে মুখে মাধুরী বণিকের নাম শুনতাম। একদিন দিদির সঙ্গে দেখা করি। দিদি আমাকে সাহস ও বুদ্ধি জুগিয়েছেন। যা আমার চলার পথে পাথেয় হয়ে থাকবে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম