Logo
Logo
×

সুরঞ্জনা

গ্রামীণ নারীর লড়াই খাদ্য ও পুষ্টির নিশ্চয়তায়

Icon

শিল্পী নাগ

প্রকাশ: ০৫ ডিসেম্বর ২০২১, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

গ্রামীণ নারীর লড়াই খাদ্য ও পুষ্টির নিশ্চয়তায়

করোনা সংক্রমণে সমগ্র বিশ্ব যখন অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে দিশেহারা, সে সময় বাংলাদেশের গ্রামীণ নারীরা লড়াই করছেন এ দেশের মানুষের খাদ্য ও পুষ্টির নিশ্চয়তা বিধানে। অথচ, কৃষক হিসাবে নারীদের স্বীকৃতি এবং ভূমি মালিকানা না থাকায় গ্রামীণ নারীরা প্রয়োজনীয় কৃষিঋণ এবং অন্যান্য সহায়তা পাচ্ছেন না। এ অবস্থার পরিবর্তনে দুর্বার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তোলা দরকার।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সানজিদা আক্তার বলেন, কোভিডকালীন দিনাজপুর, পাবনা, রাঙ্গামাটি ও সুনামগঞ্জের কিছু এলাকায় গ্রামীণ নারী কৃষকদের মাঠ পর্যায়ের অবস্থা পর্যবেক্ষণে এএলআরডি’র সহায়তায় একটি গবেষণা পরিচালনা করা হয়। গবেষণায় জানা যায়, ফসল উৎপাদনের পূর্বপ্রস্তুতি থেকে ফসল ঘরে তোলা পর্যন্ত নারীরা পুরুষের সমান কাজ করেন। এমনকি, গৃহপালিত হাঁস, মুরগি, গরু-ছাগল পালনেও নারীরা পুরুষের সমান কাজ করছেন। কোভিডকালীন নারীরা তাদের শেষ সম্বলটুকু বিক্রি করে সংসারের খরচ জুগিয়েছেন। এ সম্পর্কে নারীর কাছে কোনো তথ্য নেই, তারা সরকারি সেবা সম্পর্কে কিছুই জানেন না। এমনকি তারা মনে করেন, কৃষি সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ এবং অন্যান্য সেবা প্রাপ্তির বিষয়টি পুরুষদের জন্য। অধিকাংশ দরিদ্র নারীদের হাতে কোনো মোবাইল নেই। পরিবারের পুরুষ সদস্যটি সেই সুবিধা পেয়ে থাকেন। উৎপাদিত পণ্যের বাজারজাতকরণেও নারীরা সাংঘাতিকভাবে পিছিয়ে আছেন। বাজার বা ফসলের মাঠে নারীবান্ধব পরিবেশ তৈরি করতে হবে।

বারি’র ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. নাজিম উদ্দীন বলেন, আমাদের সমাজব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে হবে। নারীকে শ্রদ্ধাবোধ ও মর্যাদার জায়গা দিতে হবে। নারীর হাতে যৎসামান্য ভূমির মালিকানা থাকলেও তা প্রয়োগের সামর্থ্য নেই। এ অবস্থান থেকে উত্তোরণের একমাত্র উপায় বৃহত্তর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন গড়ে তোলা।

কৃষিতে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানো প্রসঙ্গে হাংগার ফ্রি ওয়ার্ল্ডের দেশীয় প্রতিনিধি আতাউর রহমান মিটন জানান, কৃষিবিষয়ক পড়াশোনা এবং গবেষণায় নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধিতে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা এবং সচেতনতা বাড়াতে হবে। কৃষিঋণ এবং এ বিষয়ক অন্যান্য সুবিধাদি নারীর হাতে পৌঁছে দিতে হলে বিশেষায়িত নীতিমালা দরকার। সামগ্রিক ভূমি, কৃষি সংস্কার প্রক্রিয়া নারীবান্ধব হতে হবে।

উত্তর অঞ্চলের বেসরকারি সংস্থা সিডিএ-র পরিচালক শাহ-ই-মবিন জিন্নাহ বলেন, সমঅধিকারভিত্তিক সমাজ গড়ে তোলার জন্য আইনি সংস্কার ও সামাজিক সংস্কারের পাশাপাশি কৃষি ভূমি সংস্কার করতে হবে। রাষ্ট্রের সব পরিকল্পনায় পরিবর্তনশীল লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে।

আদিবাসী নেত্রী সারা মারান্ডী বলেন, নারী কৃষক শ্রমিকরা পুরুষের সমান কাজ করলেও মজুরি কম পাচ্ছেন। শ্রমবাজারে নারীর অংশগ্রহণ বাড়লেও অর্থনৈতিকভাবে সমমূল্যায়ন ঘটছে না।

প্রভা রানি বলেন, চা বাগানে কর্মরত নারীদের কোনো নিরাপত্তা নেই। বাগানে বিভিন্ন বিষাক্ত পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে সুরক্ষায় নারীদের জন্য কোনো সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় না।

এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদার মতে, সমঅধিকার প্রতিষ্ঠায় আমাদের সবাইকে কাজ করতে হবে। এ আন্দোলনে সবাইকে যুক্ত করার জন্য আমাদের নিরন্তর প্রয়াস চালিয়ে যেতে হবে।

গ্রামীণ ঢাবি গবেষণা সম্বল কোভিড সেবা প্রাপ্তি

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম