একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন
ভোট নেই তবুও জোটে
মাঠে সক্রিয় ৯ জোট, আরও গঠনের উদ্যোগ * নিজ দলের চেয়ে প্রধান শরিক দলের প্রতীকে নির্বাচন করতে আগ্রহ বেশি * প্রার্থী হিসেবে ৪১ ভোট এবং দল হিসেবে ২৯৭ ভোট পাওয়ার রেকর্ডও আছে
রেজাউল করিম প্লাবন ও তারিকুল ইসলাম
প্রকাশ: ২৩ অক্টোবর ২০১৮, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
প্রতীকী ছবি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে শুরু হয়েছে জোট-মহাজোটের রাজনীতি। আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ ভোটের মাঠে কমপক্ষে নয়টি জোট সক্রিয়। আরও নতুন জোট গঠনের উদ্যোগ রয়েছে। ভোট থাকুক বা না থাকুক নামসর্বস্ব প্যাডনির্ভর অনেক দলও এসব জোটে ঢুকে পড়ছে। বিগত একাধিক সংসদ নির্বাচনের ফল পর্যালোচনা করে দেখা যায় আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টির বাইরে মাত্র কয়েকটি দলের নিজস্ব ভোট ব্যাংক আছে। পাঁচ ছয়টি দল বাদ দিলে বাকিদের সারা দেশে কোনো ভোট ব্যাংক নেই।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের অনেক শরিকেরও প্রায় একই অবস্থা। তবে ভোট না থাকলেও জোটে ভিড়তে বা আসন ভাগাভাগির ক্ষেত্রে তাদের দর কষাকষির শেষ নেই। এসব দলের বেশির ভাগ প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হলেও শরিকদের কাছ থেকে আসন বাগিয়ে নিতে কার্পণ্য করেন না। ভাগাভাগি প্রশ্নে মিল না হলে জোট ছাড়ার হুমকিও দেয়া হচ্ছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, জোটের প্রধান শরিকদের কাছ থেকে বেশির ভাগ সময় সুবিধা আদায়ে ব্যস্ত থাকে ছোট দলগুলো। ঘরোয়া অনুষ্ঠানে জোরালো বক্তব্য দেয়ার মধ্যেই তাদের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ। সম্মিলিতভাবে মাঠের লড়াইয়ে তাদের কখনই সমানতালে অংশ নিতে দেখা যায় না।
এদের তেমন ভোট ব্যাংকও নেই। এর পরও নির্বাচনে একটি প্রভাব বিস্তার করতে পারবে এ আশায় দলগুলোকে জোট নেয়া হয়। সংখ্যার দিক থেকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট সবচেয়ে বড়। কিন্তু দুঃসময়ে রাজপথে না নামলেও বিএনপির ওপর ভর করে বিভিন্ন সময় শরিকরা নানা সুযোগ-সুবিধা গ্রহণে তৎপর। মাঠে-ময়দানের আন্দোলনে কোনো ভূমিকা না থাকলেও বক্তৃতা-বিবৃতিতে তাদের জুড়িমেলা ভার।
২০০৮ সালের নবম ও ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজেদের ভোটে না থাকলেও জোটের আশীর্বাদে এলাকায় অপরিচিতমুখও এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। ফের সেই সুযোগ নিতে নাম ও প্যাডসর্বস্ব অনেক দল বড় দলগুলোর সঙ্গে জোট বাঁধার চেষ্টা করে যাচ্ছে।
জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন যুগান্তরকে বলেন, ভোট এলেই জোট বাড়ার প্রবণতা দেখা যায়। এ জোট হওয়ার পেছনে আদর্শের কোনো প্রেরণা কখনও কাজ করেনি। ছোট দলগুলো বড় দলের আশপাশে ভিড় করে। বিশেষ করে যাদের বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে তাদের চার পাশে এদের দেখা যায়।
তিনি বলেন, ২০ দল থেকে বেরিয়ে যাওয়া বলি বা ১৪ দলে ভেড়ানো বলি বা নতুন জোট গঠন বলি সবকিছুর পেছনেই স্বার্থ। ভোটের হিসাবে কখনও কোনো জোট হতে দেখা যায়নি।
বিগত সময়ে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ফলাফল পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ১৯৯১ সালে পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ভোট পায় ৩১.৮১ শতাংশ। বিএনপি ৩০.৮১ শতাংশ। জাতীয় পার্টি ১১.৯২, জামায়াত ১২.১৩, জাসদ ১.৫৪, সিপিবি ০.৯১, ন্যাপ ০.৭৬ শতাংশ। ১৯৯৬ সালে সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ভোট পায় ৩৭.৪৪, বিএনপি ৩৩.৬১, জাতীয় পার্টি ১৬.৪০, জামায়াত ৮.৬১, জাসদ ০.২৩, সিপিবি ১.১৯ শতাংশ। ২০০১ সালের অষ্টম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পায় ৪০.২১, বিএনপি ৪০.৮৬, জাতীয় পার্টি ৭.২৬, জামায়াত ৪.২৯ শতাংশ, জাসদ ১১৮৮২৪, সিপিবি ৫৬৮২৩ ভোট। ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পায় ৪৮.০৪, বিএনপি ৩২.৫০, জাতীয় পার্টি ৭.০৪, জামায়াত ০.৩৭, জাসদ ০.৭২। পঞ্চম, সপ্তম ও অষ্টম সংসদ নির্বাচনে অনেক বেশি দল অংশ নেয়। কিন্তু নবম সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধনের ব্যবস্থা নেয়া হয়। ওই নির্বাচন থেকে শুধু নিবন্ধিত দলগুলো অংশ নেয়ার সুযোগ পায়। ফলে ভোটে অংশ নেয়া দলের সংখ্যা আগের চেয়ে কমেছে।
নির্বাচন কমিশনের তথ্যমতে, দেশে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা ৩৯। অনিবন্ধিত দল আছে কমপক্ষে ২০০। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা আটটি। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটে নিবন্ধিত দল ৮। জাতীয় পার্টির (জাপা) নেতৃত্বাধীন ৫৮ দলীয় সম্মিলিত জাতীয় জোটে নিবন্ধিত দল আছে তিনটি। সিপিবি-বাসদের নেতৃত্বাধীন আট দলের জোটে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা তিন। ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন বহুল আলোচিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা মাত্র দুটি। নিবন্ধিত বাকি ১৫টি দলের মধ্যে সংসদে প্রতিনিধিত্ব আছে শুধু বিএনএফের।
নির্বাচন সামনে রেখে মহাজোট সম্প্রসারণের কোনো উদ্যোগ আছে কিনা জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এখন তো অনেক জোট হয়ে গেছে। জোটের মেলা দেখতে পাচ্ছি, জোট তারকাদের মেলা দেখতে পাচ্ছি। জনতার কতটা সমর্থন আছে এটি বিষয় নয়, আমি নেতা আমার সিল প্যাড থাকলেও তো দল।’
আগামী কয়েক দিনের ভেতরে অনেক কিছুই স্পষ্ট হবে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কাউকে কটাক্ষ করছি না। তাদের আরও মেলা সামনের দিকে দেখতে পাবেন। এগুলো দেখেই সামনের দিনে চিন্তাভাবনা করব। আমাদের ১৪ দলীয় জোট অনেক আগে থেকেই সক্রিয়, জাতীয় পার্টির সঙ্গে সমঝোতা আছে।’ তিনি বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচন না করলে জাতীয় পার্টি তো আবার ৩০০ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। তখন আমাদের তো আর জোট করার প্রশ্ন আসে না। মেরুকরণটা কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় তার ওপর নির্ভর করবে অ্যালায়ান্সের সমীকরণ।’
জানতে চাইলে ২০ দলীয় জোটের সমন্বয়ক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান যুগান্তরকে বলেন, জোটের বিষয়টি সবসময় ভোটের ওপর নির্ভর করে হয় না। রাজনৈতিক কৌশলের অংশ হিসেবেও অনেক সময় মিত্র বাড়ানো হয়। শরিক অনেক দলের হয়তো ভোট ব্যাংক নেই কিন্তু নির্বাচনে তারা একটা প্রভাব বিস্তার করতে পারে।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩৯টি নিবন্ধিত দলের মধ্যে ১২টি দল অংশগ্রহণ করে। এগুলোর মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ছাড়া অন্যরা তেমন ভালো করতে পারেনি। দশম নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট। ওই নির্বাচনে ১৫৩ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। ইসির তথ্য অনুযায়ী, যেসব আসনে নির্বাচন হয়েছে তাতে ভোট পড়েছে এক কোটি ৭৩ লাখ ৯২ হাজার ৮৮২, যা মোট ভোটের ৪২.০৪ শতাংশ। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিক গণতন্ত্রী পার্টি একটি আসনে প্রার্থী দিয়ে ভোট পেয়েছে দুই হাজার ৩১, যা মোট ভোটের ০.০১ শতাংশ। বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট একটি আসনে নির্বাচন করে পেয়েছে দুই হাজার ৫৮৫ ভোট, যা মোট ভোটের ০.০২ শতাংশ। একইভাবে গণফ্রন্ট একটি আসনে দুই হাজার ৭১৭ ভোট পেয়েছে, যা মোট ভোটের ০.০২ শতাংশ। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস দুটি আসনে পায় পাঁচ হাজার ৭২৫ ভোট। যা মোট ভোটের ০.০৩ শতাংশ। বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি ছয়টি আসনে ভোট পায় সাত হাজার ১২০। যা মোট ভোটের ০.০৪ শতাংশ। এছাড়া বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ) ২২টি আসনে নির্বাচন করে ভোট পায় এক লাখ সাত হাজার ৭৯০, যা মোট ভোটের ০.৬৩ শতাংশ। জাতীয় পার্টি-জেপি ২৮টি আসনে নির্বাচন করে এক লাখ ২৪ হাজার ৩৮৯ ভোট পায়। যা মোট ভোটের ০.৭৩ শতাংশ। বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন তিনটি আসনে (২টিতে নৌকা প্রতীক) নির্বাচন করে ভোট পায় এক লাখ ৭৭ হাজার ৪৪৯, যা মোট ভোটের ১.০৪ শতাংশ।
নির্বাচনে সবচেয়ে কম ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জাসদের আবু বকর মোহাম্মদ ফিরোজ। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে মশাল মার্কা নিয়ে নির্বাচন করে ৪১ ভোট পান, যা ওই আসনে প্রাপ্তভোটের শূন্য দশমিক শূন্য ছয় (০.০৬) শতাংশ। নির্বাচনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল ২৪টি আসনে নির্বাচন করে। দলটির প্রাপ্ত ভোট মোট ভোটের ১.১৯ শতংশ।
দশম সংসদে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ছয়জন সংসদ সদস্য আছেন। দলটি ১৮টি আসনে প্রার্থী দিয়ে প্রাপ্ত ভোট মোট ভোটের ২.১০ শতাংশ।
এদিকে নবম জাতীয় সংসদে মোট ৩৮টি দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। এতে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি ছাড়া অন্যদের অবস্থা নাজুক। নির্বাচনে মোট বৈধ ভোট পড়ে সাত কোটি ১২ হাজার ১৯১। নির্বাচনে গণতন্ত্রী পার্টি পাঁচটি আসনে নির্বাচন করে। তাদের প্রাপ্ত ভোট দুই হাজার ৫৫০। বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি পাঁচটি আসনে মোট ভোট পায় দুই হাজার ২১। বাংলাদেশ মুসলিম লীগ পাঁচটি আসনে নির্বাচন করে পায় এক হাজার ১১৩ ভোট। ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ দুটি আসনে মোট ভোট পায় এক হাজার ২০। ফ্রিডম পার্টি দুটি আসনে নির্বাচন করে। দলটির প্রাপ্ত ভোট ৫৬৬। বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এমএল) একটি আসনে নির্বাচন করে। দলটির প্রাপ্ত ভোট ২৯৭।
বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট মোমবাতি প্রতীকে ১৮টি আসনে ভোট করে ৩১ হাজার ৭৮৫ ভোট পায়, যা মোট ভোটের ০.০৫ শতাংশ। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস আটটি আসনে ভোট পায় ২৭ হাজার ৯২১। যা মোট ভোটের ০.০৪ শতাংশ। একইভাবে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি ১৪টি আসনে নির্বাচন করে ২৪ হাজার ১৪১ ভোট পায়। যা মোট ভোটের ০.০৩ শতাংশ। বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন ৩১টি আসনে ১৯ হাজার ৯০৫ ভোট পায়, যা মোট ভোটের ০.০৩ শতাংশ। বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ৩৩ আসনে ১৬ হাজার ৯৪৪ ভোট পায়, যা মোট ভোটের ০.০২ শতাংশ। প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল ২১টি আসনে ১৪ হাজার ২২৮ ভোট পেয়েছে। এটা মোট ভোটের ০.০২ শতাংশ।
ন্যাশনাল পিপলস পার্টি ৩০ আসনে প্রার্থী দিয়ে ১০ হাজার ৩৪৮ ভোট পায়। যা মোট ভোটের ০.০১ শতাংশ। জাতীয় পার্টি-জেপি সাতটি আসনে নির্বাচন করে ভোট পেয়েছিল সাত হাজার ৮১৮। যা মোট ভোটের ০.০১ শতাংশ। বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ পাঁচটি আসনে নির্বাচন করে ভোট পায় চার হাজার ৩৬৫। যা মোট ভোটের ০.০১ শতাংশ। গণফ্রন্ট ১৪টি আসনে নির্বাচন করে। তাদের প্রাপ্ত ভোট চার হাজার ৯, যা মোট ভোটের ০.০১ শতাংশ। ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন ১১ আসনে প্রার্থী দেয়। দলটির প্রাপ্ত ভোট তিন হাজার ৫৪২, যা মোট ভোটের ০.০১ শতাংশ। বিজেপি ১০টি আসনে নির্বাচন করে মোট ভোট পায় আট হাজার ৩৮৩, যা মোট ভোটের ০.০১ শতাংশ। এসব প্রার্থীর প্রায় সবারই জামানত বাজেয়াপ্ত হয়।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ হাতপাখা প্রতীক নিয়ে ১৬৭টি আসনে নির্বাচন করে। তাদের প্রাপ্ত ভোট ছয় লাখ ৫৮ হাজার ২৫৪, যা মোট ভোটের ০.৯৪ শতাংশ। জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ সাতটি আসনে (খেজুর গাছ-৫, ধানের শীষ-২) নির্বাচন করে। দলটির প্রাপ্ত ভোট এক লাখ ৭৫ হাজার ২৪৫, যা মোট ভোটের ০.২৫ শতাংশ। বিকল্পধারা বাংলাদেশ ৬৩টি আসনে নির্বাচন করে। দলটির প্রাপ্ত ভোট এক লাখ ৪৬ হাজার ৮২৭, যা মোট ভোটের ০.২১ শতাংশ। জাকের পার্টি (গোলাপ ফুল) ৩৭টি আসনে নির্বাচন করে ভোট পায় এক লাখ ৩৪ হাজার ৯৩৩টি। যা মোট ভোটের ০.১৯ শতাংশ। ইসলামী ঐক্য জোট চারটি আসনে (মিনার-২, ধানের শীষ-২) নির্বাচন করে ভোট পায় এক লাখ আট হাজার ৪১৫, যা মোট ভোটের ০.১৫ শতাংশ। জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি দুটি আসনে (হুক্কা-১, ধানের শীষ-১) নির্বাচন করে। তাদের প্রাপ্ত ভোট এক লাখ সাত হাজার ৭৯৬। যা মোট ভোটের ০.১৫ শতাংশ। কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ৪৭টি আসনে নির্বাচন করে। দলটি পায় এক লাখ দুই হাজার ৮৭৯ ভোট। যা মোট ভোটের ০.১৫ শতাংশ। গণফোরাম ৪৫টি আসনে নির্বাচন করে। প্রাপ্ত ভোট ৭২ হাজার ৯১১, যা মোট ভোটের ০.১০ শতাংশ। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি ৩৭টি আসনে নির্বাচন করে ভোট পায় ৪২ হাজার ৩৩১টি। যা মোট ভোটের ০.০৬ শতাংশ। বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল ৫৭টি আসনে প্রার্থী দেয়। দলটির প্রাপ্ত ভোট ৩৮ হাজার ৬৪৩, যা মোট ভোটের ০.০৬ শতাংশ। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি ৪৫টি আসনে নির্বাচন করে ৩৭ হাজার ৩৫০ ভোট পায়। যা মোট ভোটের ০.০৫ শতাংশ। একইভাবে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি দুটি আসনে (ধানের শীষ) নির্বাচন করে। তাদের মোট ভোট এক লাখ ৭৩ হাজার ২৯২, যা মোট ভোটের ০.২৫ শতাংশ। বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি পাঁচটি আসনে (হাতুড়ি-২, নৌকা-৩) নির্বাচন করে। দলটির মোট ভোট দুই লাখ ৬২ হাজার ৯৩, যা মোট ভোটের ০.৩৭ শতাংশ। লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি ১৮টি আসনে নির্বাচন করে। দলটির মোট ভোট এক লাখ ৯১ হাজার ৬৭৯, যা মোট ভোটের ০.২৭ শতাংশ। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ ৭টি আসনে (মশাল-৩, নৌকা-৪) নির্বাচন করে। দলটির মোট ভোট পাঁচ লাখ ছয় হাজার ৬০৫, যা মোট ভোটের ০.৭২ শতাংশ।
১৯৯১ সালে পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ-ইনু) ৬৮ আসনে প্রার্থী দিয়ে ভোট পায় ০.০৫ শতাংশ। জাসদ (রব) ১৬১টি আসনে প্রার্থী দিয়ে ভোট পায় ০.৭৯ শতাংশ। জাসদ (সিরাজ) ৩১টি আসনে প্রার্থী দিয়ে ভোট পায় ০.২৫ শতাংশ। ইসলামী ঐক্যজোট ৫৯টি আসনে নির্বাচন করে ০.৭৯ শতাংশ ভোট পায়। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ৪৯টি আসনে প্রার্থী দিয়ে ভোট পায় ১.১৯ শতাংশ। ওয়ার্কার্স পার্টি ৩৫টি আসনে নির্বাচন করে ভোট পায় ০.১৯ শতাংশ। গণতন্ত্রী পার্টি ১৬টি আসনে প্রার্থী দিয়ে ভোট পায় ০.৪৬ শতাংশ। ন্যাপ (মোজাফফর) ৩১ আসনে ভোট পায় ০.৭৬ শতাংশ। নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয় পিপলস পার্টি একটি আসনে ভোট পায় ২৫টি।
সেই নির্বাচনে ৭৬টি দল অংশ নিলেও অধিকাংশ দলের প্রার্থীর শোচনীয় পরাজয় হয়েছে। একইভাবে ১৯৯৬ সালের সপ্তম ও ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় নির্বাচনের আগে এসব প্যাডসর্বস্ব পার্টি নির্বাচন করে হেরে যায়। অষ্টম জাতীয় সংসদে ৫৫টি দল অংশ নিলেও অধিকাংশ দলের প্রার্থীর পরাজয় হয়।
