নববর্ষ উদযাপনের সঙ্গে শপথ জীবনযুদ্ধের
সাংস্কৃতিক রিপোর্টার
প্রকাশ: ১৩ এপ্রিল ২০২০, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
করোনা মহামারী আমাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করছে। চারদিক থেকে ধেয়ে আসছে মৃত্যু। শেষ পর্যন্ত মানুষেরই জয় হবে- এটাই হল ইতিহাস। পহেলা বৈশাখে তাই বর্ষবরণের আনন্দের সঙ্গে গাওয়া হবে জীবনযুদ্ধ জয়ের গান। বাঙালি আজ তার নিজ নিজ ঘরে বসেই গাইবে সে গান। বিশিষ্ট সংস্কৃতিজনরাও তাই বলছেন। পহেলা বৈশাখ উদযাপন তাই এবার একটু ভিন্ন।
জীবনযুদ্ধ জয়ের শপথ নেব আজ- সন্জীদা খাতুন : পাকিস্তানি আমলের বৈরী পরিবেশে বাঙালির আপন সত্তার স্বাধীনতার আকাক্সক্ষা আর মানবকল্যাণের ব্রত নিয়ে ১৯৬১ সালে ছায়ানটের জন্ম। এই সংগঠন আজন্মই সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ। লক্ষ্য অর্জনে ১৯৬৭ সাল থেকে প্রতি বছর রমনার বটমূলে পহেলা বৈশাখের ভোরে বাংলা নববর্ষকে স্বাগত জানিয়ে আসছে এই সংগঠন। ১৯৭১ সালে দেশকে শত্রুমুক্ত করার সশস্ত্র সংগ্রামের সময় ছাড়া আর কখনও বন্ধ হয়নি রমনার বটমূলে পহেলা বৈশাখ উদযাপন। করোনাভাইরাসের আক্রমণে বিশ্বমানব আজ বিপর্যস্ত। বিনাযুদ্ধ আত্মসমর্পণ করে না মানবজাতি। লড়াই চলছে, পাশাপাশি চলছে বিপন্ন মানবসমাজকে জাগিয়ে রাখার, বাঁচিয়ে রাখার
অনন্ত প্রয়াস। এই জীবনযুদ্ধে মনোবল অটুট রাখা অনিবার্য। তাই নতুন বঙ্গাব্দকে স্বাগত জানানো এখন আর উৎসব নয় বরং জীবনযুদ্ধ জয়ের শপথ। তাই পিছু না হটে নববর্ষ বরণে ছায়ানট আয়োজন করেছে উজ্জীবনী সুরবাণীর। যেটি উপস্থাপিত হবে ডিজিটালি।
বাঙালি আজ বর্ষবরণ করবে ঘরে বসে-রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা : পরিস্থিতি আজ বৈরী। প্রকৃতি আমাদের বাইরে যেতে নিষেধ করছে। এই অবস্থা মোকাবেলায় জনসমাবেশ, জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে। এটাই নিয়ম। কিন্তু পহেলা বৈশাখের কোনো আয়োজন তো জনসমাগম ছাড়া হতে পারে না। তাহলে উপায় কি? উপায় নিশ্চয়ই আছে। বাঙালি আজ বাংলা নববর্ষ উদযাপন করবে তার নিজ ঘরে। এটাই এখন উত্তম পন্থা। আমরা আজ নতুন বাংলা বছরকে বরণ করে নেব নিজেদের বাসাতেই। আমি সব বাঙালিকে বলব, সারাদিন আপনারা বাসাতে থেকেই পহেলা বৈশাখ উদযাপন করুন। সকালবেলা বৈশাখের সাজে নিজেকে সাজিয়ে বাসাতেই একটু গানের আয়োজন করা যেতে পারে। আরও থাকবে বাঙালি খাবারের আয়োজন। আমরা সুরের ধারা থেকে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে মিলিতভাবে ডিজিটালি একটি আয়োজন করছি।
বৈশাখের আয়োজন হবে ঘরে, ফেসবুকে, ফকির আলমগীর : করোনা আমাদের নানাভাবে শিক্ষা দিচ্ছে। আজকে এই ভাইরাসের কারণে পৃথিবীর মানুষ এক হয়ে গেছে। ধনী, গরিব, উঁচু-নীচু, কালো-সাদা সব মানুষ এখন ভেদাভেদ ভুলে এক জায়গায়। আমরা মানুষরা অনেক বেশি আত্মকেন্দ্রিক হয়ে গিয়েছিলাম। স্বার্থপর হয়ে গিয়েছিলাম। করোনা এসে আমাদের আবার বুঝিয়ে দিয়েছে, সব মানুষ আসলে এক।
করোনার সময়ে আমাদের জীবনে এসেছে পহেলা বৈশাখ। আমরা বৈশাখ উদযাপন করব, তবে সেটা অবশ্যই নিজের ঘরে বসে। শুভেচ্ছা বিনিময় করব টেলিকনফারেন্সে। সৃজনশীল কোনো আয়োজন হলে সেটা হবে ফেসবুকে। এভাবেই আমরা নববর্ষের আনন্দকে ভাগ করে নেব। আমরা এগিয়ে আসব আয়-রোজগারহীন মানুষের পাশে। স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে মানুষের পাশে দাঁড়াব।
