Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

করোনা-সুনামিতে শিল্প খাত তছনছ

ক্রেতা ও ন্যায্য দাম না পাওয়ায় একের পর এক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে চালু হওয়া শিল্প ইউনিট * চাকরি হারাচ্ছেন লাখ লাখ শ্রমিক-কর্মচারী, শিল্পোদ্যোক্তাদের লাভের হিসাব শেষ, পুঁজিতে হাত পড়েছে অনেকের * সরকারের রিজার্ভ থেকে বিশেষ অনুদান প্যাকেজ ঘোষণার দাবি

Icon

যুগান্তর রিপোর্ট

প্রকাশ: ০৭ জুন ২০২০, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

করোনা-সুনামিতে শিল্প খাত তছনছ

করোনার প্রতীকী ছবি

ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে বাঁধ ভেঙে যেমন সবকিছু তলিয়ে যায়, ঠিক তেমনি করোনা-সুনামিতে দেশের অর্থনীতি একেবারে তছনছ হয়ে গেছে। টানা দু’মাসের বেশি সময় পর মিল-কলকারখানা পুনরায় চালু হলেও টিকে থাকতে পারছে না। ক্রেতা না থাকায় উৎপাদিত পণ্য বিক্রি হচ্ছে না। যৎসামান্য অর্ডার যাও পাওয়া যাচ্ছে, তাতে ন্যায্য দাম মিলছে না। যা মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে সর্বত্র।

বড় ধরনের লোকসানের মুখে অনেকটা বাধ্য হয়ে শিল্প মালিকরা তাদের চালু হওয়া শিল্প ইউনিটগুলো একে একে বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। যেগুলো এখনও টিকে আছে, সেখানে ২৫-৩০ ভাগের বেশি জনবলের প্রয়োজন নেই। তাছাড়া বাকিদের বসিয়ে রেখে বেতন-ভাতা দেয়ার পরিস্থিতিও নেই। এর ফলে নির্ঘাত লাখ লাখ শ্রমিক-কর্মচারী বেকার হওয়ার পথে। কাজ না থাকায় অপ্রয়োজনীয় জনবলকে দায়িত্বের বাইরে রাখা হচ্ছে। আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যাদের বেতন দেয়ার সুযোগও নেই।

এ ছাড়া শিল্পের সঙ্গে পরোক্ষভাবে যুক্ত কোটি কোটি মানুষ। তারাও বিপাকে। এভাবে বড় এক ধাক্কার মুখোমুখি শিল্প সেক্টরসহ পুরো অর্থনীতি। প্রতিদিনই দীর্ঘ হচ্ছে বেকারের পরিসংখ্যান। সংকট নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ হিসেবে শিল্পোদ্যোক্তা ও বিশ্লেষকদের অনেকে যুগান্তরকে জানিয়েছেন, সরকারের রিজার্ভ তহবিল থেকে শিল্প সেক্টরের জন্য দ্রুত বিশেষ অনুদান প্রদান ছাড়া সমাধান মিলবে না। এর বাইরে যা বলা বা করা হবে, সবই সাময়িক এবং জোড়াতালি ছাড়া আর কিছু নয়। ৫ হাজার কোটি টাকার প্রথম প্যাকেজ থেকে একমাত্র গার্মেন্ট শ্রমিকদের বেতন বাবদ ২৭শ’ কোটি টাকা প্রদান করা ছাড়া ঘোষিত লক্ষাধিক কোটি টাকার ঋণ প্যাকেজে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি নেই।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ যুগান্তরকে বলেন, করোনায় কর্মহীন এবং যারা চাকরি হারিয়েছেন তাদের জন্য একটি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করতে পারে সরকার। সে প্যাকেজ থেকে অন্তত তিন মাসের জন্য কিছু অর্থ সহায়তা দিলে তাদের দুঃখ-কষ্ট খানিকটা কমতে পারে। এর মধ্যে ভুক্তভোগীরা স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করবে। তিনি বলেন, শিল্পের চলতি মূলধন খাতে যে ঋণ প্রণোদনা ঘোষণা করেছে সরকার, তার সংস্থান ব্যাংকের মাধ্যমে হবে। এ ঋণ প্রণোদনার অর্থ ছাড়ে বিলম্ব বা ধীরগতির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকই ভালো বলতে পারবে। তবে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল সাধারণত ব্যাংক- গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে দেয়া হয়। তবে ব্যাংক যাকে-তাকে এ ঋণ দেবে না।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিদ্যমান কঠিন সংকটের মধ্যে কারও আয় করার সুযোগ নেই। সবকিছু স্থবির হয়ে লোকসানের ফাঁদে আটকা পড়েছে। যার বড় ধরনের প্রত্যক্ষ ভুক্তভোগী দেশের অগ্রসরমান শিল্পোদ্যোক্তারা। তাই নজিরবিহীন কঠিন এই পরিস্থিতিতে সবকিছু শিল্পপতিদের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়ে কোনো লাভ হবে না। বাস্তব অবস্থায় শিল্প মালিকদের যেমন এখন কোনো আয় নেই, তেমনি ব্যাংক এবং সরকারকেও আয়ের কথা চিন্তা করা অযৌক্তিক। সঙ্গত কারণে ব্যাংকের আয়ের খাতা বন্ধ রাখতে হবে। সরকারকেও সরে আসতে হবে ব্যবসা সংশ্লিষ্ট সব ধরনের রেভিনিউ আদায় থেকে।

একই সঙ্গে সংকট নিরসনে দ্রুত অনুদানভিত্তিক কার্যকর প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা ও বাস্তবায়ন করতে হবে। এ জন্য রিজার্ভে হাত দিতে হবে। সাধারণ জনগণের অনেকে জমানো টাকা ভেঙে সংকটকালীন সময় পার করছে, কারও কারও জমানো টাকাও শেষ। এখন ধারদেনা করার পথে। আর যাদের জমানো টাকা নেই, চাকরি হারিয়েছেন তারা তো পড়েছে অথৈ সাগরে। এ অবস্থায় সরকারকে দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি শিল্প সেক্টরকে আগে সুরক্ষা দিতে হবে। কেননা শিল্প বাঁচলে বহুলোক বাঁচবে। এ জন্য রিজার্ভ থেকে অর্থ নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। প্রকৃত শিল্পোদ্যোক্তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। এই অন্তবর্তীকালীন সময়ে ব্যাংক যাতে চলতে পারে, সে জন্য ব্যাংকের কর্পোরেট ট্যাক্স প্রত্যাহারসহ পরিচালন ব্যয় মেটাতে অফেরতযোগ্য অনুদান দিতে হবে। একইভাবে বেকার হয়ে পড়া শিল্প-কলকারখানার সব শ্রেণির চাকরিজীবীদের এই অনুদান প্যাকেজের আওতায় আনতে হবে। এ মুহূর্তে এর কোনো বিকল্প নেই। অন্যান্য দেশ এসব কর্মসূচিই নিচ্ছে।

এফবিসিসিআইয়ের সহসভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, শিল্পের অবস্থা ভালো নয়। এ অবস্থায় শিল্প টিকিয়ে রাখতে হলে দ্রুততার সঙ্গে প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নে ব্যাংকগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো ধরনের গড়িমসি কাম্য নয়। সময়মতো প্যাকেজের অর্থ না পেলে পরে লাভ হবে না।

শিল্পোদ্যোক্তা ও অর্থনীতিবিদদের অনেকে মনে করেন, সাধারণ জনগণ যদি তাদের শেষ সঞ্চয়টুকু ভেঙে দিন পার করতে পারে, তাহলে সরকার কেন সঞ্চিত রিজার্ভ এই দুঃসময়ে খরচ করতে কার্পণ্য করবে। এটি তো সাজিয়ে রাখার শোপিস না। শিল্পোদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের তো ইতোমধ্যে বড় ধরনের লোকসান গুনতে হয়েছে। অনেকে এর মধ্যে পুঁজিও হারিয়ে ফেলেছেন। তারা মনে করেন, নতুন করে টাকা ছাপিয়ে এ সমস্যা সমাধান করা যাবে না। এতে অর্থনীতি আরও দুর্বল হবে। টাকার মান কমে যাবে।

তারা বলেন, এসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইকে জোরালোভাবে সরকারের নজরে আনতে হবে। সরকারের কাছ থেকে বাহাবা পাওয়ার জন্য এ মুহূর্তে কারও চাটুকারিতা করে লাভ নেই। কেননা, ব্যবসায়ী নেতারা সঠিক ভূমিকা না নেয়ার কারণে ইতোমধ্যে ব্যাপক ক্ষতি হয়ে গেছে। সরকার লক্ষাধিক কোটি টাকার উপরে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করলেও কার্যত কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এগুলো এখন শুধু বক্তৃতার খোরাক ছাড়া কিছু নয়। কাগুজে সাফল্য মাত্র। গার্মেন্ট সেক্টরের শ্রমিক-কর্মচারীদের এপ্রিলের বেতন বাবদ বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ২ হাজার ৭শ’ কোটি কোটি টাকার ঋণ রিলিজ করা ছাড়া আর কোনো ঋণের দেখা মেলেনি। শিল্প পরিচালনার মূলধনী ঋণ প্যাকেজের ৩০ হাজার কোটি টাকা নিয়ে ব্যাংকগুলো একরকম ভীতির মধ্যে আছে। একেবারে নির্ভরযোগ্য গ্রাহক ছাড়া কাউকে ঋণ দেয়ার ব্যাপারে তাদের কোনো আগ্রহ নেই। কেননা, সরকার প্যাকেজ ঘোষণা করলেও ঋণ ঝুঁকির দায় নেয়নি।

শিল্পোদ্যোক্তাদের অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে যুগান্তরকে বলেন, আমাদের এখানে প্রধান সমস্যা হল সংকটের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে যাদের সরকারের উচ্চপর্যায়ে সিরিয়াসলি দর-কষাকষি করার কথা, তারা সেটি করছেন না। বরং অভিযোগ আছে, অনেকে নানা অজুহাতে সপরিবারে চার্টার্ড বিমানে দেশ ছাড়ার পরিকল্পনা করছেন। বিশেষ করে যারা ক্ষমতার অপব্যবহার করে দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে নিয়ে গেছেন, তাদের এক পা সব সময় বিদেশের মাটিতেই পড়ে থাকে। বাইরের চেহারাটা দেশপ্রেমিকের মতো দেখালেও মূলত তাদের মধ্যে প্রকৃত দেশপ্রেম নেই। তারা তৃতীয় প্রজন্মকে পুরোপুরি বিদেশে পুনর্বাসন করার সবকিছু পাকাপোক্ত করে ফেলেছেন। তাই যারা ব্যাংক লুটপাট ও নানাভাবে দুর্নীতি করে দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে নিয়ে গেছেন, তাদের কাছে বেশি কিছু আশা করা বোকামি।

ফলে যারা বিদেশে কোনো টাকা পাচার করেননি, সবকিছু দেশে বিনিয়োগ করেছেন, তাদের বিষয়টি অবশ্যই সরকারকে ভাবতে হবে। সৃষ্ট সংকট নিয়ে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে বক্তব্য-বিবৃতি কিংবা গ্রহণযোগ্য পলিসি আসা খুবই জরুরি। কেননা, কাজ না থাকায় শিল্প মালিকরা শ্রমিকদের কাজে রাখতে পারছেন না। ওদিকে শ্রমিক নেতারা বলছেন, কাউকে ছাঁটাই করা যাবে না। কিন্তু বাস্তবতা কী বলে? এটা তো অন্য কোনো কারণে শ্রমিক ছাঁটাই হচ্ছে না। কাজ না থাকলে কেউ কি কাউকে রাখবে? এটি তো অর্থনীতির স্বাভাবিক নিয়ম। মানুষ তার কাজের প্রয়োজনে কাজের লোক নিয়োগ দেয়, চাকরি দেয়। আবার যখন কাজ থাকে না, তখন না করে দেয়। কিন্তু পরিবারের সন্তানের মতো বসিয়ে রেখে ভরণপোষণের ব্যবস্থা করে না। শিল্প-কলকারখানা তো কোনো সাহায্য সংস্থা নয়। ফলে এ রকম পরিস্থিতিতে সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ বক্তব্য আসা বাঞ্ছনীয়।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন যুগান্তরকে বলেন, করোনায় ঘোষিত প্রণোদনা এবং অর্থ সবই মনে হচ্ছে পর্যাপ্ত। সমস্যা হল বাস্তবায়ন নিয়ে। বাস্তবায়নে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দেখা যাচ্ছে। সে কারণে অর্থছাড়ে এত ধীরগতি। তিনি বলেন, ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজগুলো বাস্তবায়ন হওয়ার পরও সংকট থাকলে তখন নতুন প্যাকেজের প্রশ্ন আসবে। এখন তো আগের প্যাকেজগুলোই বাস্তবায়ন হয়নি। সুতরাং প্যাকেজ বাস্তবায়নে আমলাতান্ত্রিক জটিলতাসহ কী কী বাধা আছে, তা শনাক্ত করে দূর করতে হবে।

বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, করোনার কারণে পুরো শিল্প খাত তছনছ হয়ে গেছে। এখন উদ্যোক্তারা লাভক্ষতির কথা চিন্তা করছে না। বেঁচে থাকতে, টিকে থাকতে লড়াই করছে। পাইকারি মোকাম বন্ধ থাকায় সুতা-কাপড় বিক্রি হচ্ছে না। আবার রফতানি কমে যাওয়ায় টেক্সটাইল খাতে বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। অবস্থার উন্নতি শিগগির ঘটবে বলেও মনে হচ্ছে না। এ অবস্থায় শিল্প টিকিয়ে রাখতে সরকার প্রাণপণ চেষ্টা করলেও বেসরকারি ব্যাংকগুলো উদাসীন। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, করোনায় ব্যাংকগুলোই আইসোলেশনে চলে গেছে। যেখানে ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করার কথা, সেখানে ব্যাংকগুলো নিশ্চুপ হয়ে বসে আছে। তিনি আরও বলেন, আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণের কিস্তি স্থগিত করা হলে শিল্প টিকে থাকতে পারবে। আর শিল্প টিকলে ব্যাংকগুলো আবারও ব্যবসা করতে পারবে। যদি শিল্পই মরে যায়, তাহলে ব্যাংকের ব্যবসাও চিরতরে বন্ধ হয়ে যাবে।

সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শফিকুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, ভালো গ্রাহকদের বাঁচিয়ে রাখতে ব্যাংকের উচিত প্রণোদনার অর্থ দ্রুত ছাড় করা। তা না-হলে ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। কে ভালো, আর কে মন্দ গ্রাহক তা খুঁজে বের করতে ব্যাংকের এত সময় লাগার কথা না। তবে কোনো মন্দ গ্রাহক সুবিধা পাক, সেটা কখনও চাই না। ব্যাংকগুলোকে ভেবেচিন্তে এবং ঘোষিত প্রণোদনা দ্রুত বাস্তবায়ন করা উচিত।

সাউথইস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম কামাল হোসেন যুগান্তরকে বলেন, শিল্পের চলতি মূলধন খাতে প্রণোদনার ঋণ সুবিধা পেতে ২০০টি আবেদন পড়েছে সাউথইস্টে। এ নিয়ে কাজ চলছে। আবেদনগুলো দ্রুত পরিচালনা পর্ষদের সভায় উপস্থাপন করা হবে। ভালো কোনো গ্রাহককে ফিরিয়ে দেব না। তবে মন্দ কেউ এ ঋণ পাবে না। এখন বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে। বোর্ডের অনুমোদন নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠাব। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনাপত্তি পেলে ঋণ বিতরণ করা যাবে।

করোনাভাইরাস শিল্প খাত

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম