একনেকে প্রধানমন্ত্রী
রেট সিডিউল পরিবর্তনে অর্থ মন্ত্রণালয়কে জানাতে হবে
প্রত্যন্ত অঞ্চলে মোবাইল নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের নির্দেশ * তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপনসহ ৪ প্রকল্প অনুমোদন * ভারতের পর এবার ভুটান ও সৌদি আরবে ব্রডব্যান্ড রফতানি
যুগান্তর রিপোর্ট
প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০২০, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপনসহ ৪ প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে। এগুলো বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ২ হাজার ১১৫ কোটি টাকা।
এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ১ হাজার ৪৪০ কোটি ৮৭ লাখ টাকা, বাস্তবায়নকারী সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ৩০০ কোটি ৮৩ লাখ ও বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৩৭৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।
মঙ্গলবার একনেক বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা।
এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম।
একনেকে প্রকল্পের রেট সিডিউল পরিবর্তনের সময় অর্থ মন্ত্রণালয়কে অবহিত করার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
ব্রডব্যান্ড বর্তমানে ভারতের সেভেন সিস্টার্সে রফতানি হচ্ছে। এর মধ্যে ভুটানের সঙ্গে চুক্তি ও সৌদি আরবে রফতানির সম্ভাবনা দেখা দেয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন তিনি।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন ড. শামসুল আলম। তিনি বলেন, রেট সিডিউল প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য যখন-তখন রেট সিডিউল পরিবর্তন করা যাবে না।
এজন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে অবহিত করতে হবে। ‘নরসিংদী জেলার অন্তর্গত আড়িয়াল খাঁ নদী, হাড়িভাঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র নদ, পাহাড়িয়া নদী, মেঘনা শাখা নদী ও পুরাতন ব্রহ্মপুত্র শাখা পুনঃখনন’ শীর্ষক প্রকল্প অনুমোদন দিতে গিয়ে এই অনুশাসন দেয়া হয়েছে।
প্রকল্পটিতে ব্যয় বেড়েছে ৮০ শতাংশ। এছাড়া স্থানীয় সরকারের বরাদ্দ যথাযথ ব্যয় হচ্ছে কি না, সেটি তদারকিরও নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন, আমরা তো স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত বিভিন্ন সিটি কর্পোরেশনে অনেক প্রকল্প বরাদ্দ দিচ্ছি।
কিন্তু সেগুলোর যথাযথ ব্যয় হচ্ছে কি না, বিষয়টি নজরদারি করতে হবে। এ সময় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী কমিটি গঠনের মাধ্যমে প্রকল্পগুলো পরিদর্শন করবেন বলে জানান।
ডিজিটাল সংযোগের জন্য টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক আধুনিকীকরণ শীর্ষক প্রকল্পটি অনুমোদন দিতে গিয়ে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এক্ষেত্রে হাওর, বিল ও পাহাড়ি এলাকাকে আওতাভুক্ত করতে বলা হয়েছে।
বৈঠকে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল নেটওয়ার্ক স্থাপন প্রকল্পটি উপস্থাপনের সময় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, সঠিক সময়ে এরকম একটি প্রকল্প হাতে নেয়ায় প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান।
একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে: নরসিংদী জেলার আড়িয়াল খাঁ নদী, হাড়িদোয়া নদী, ব্রহ্মপুত্র নদ পাহাড়িয়া নদী, মেঘনা শাখা নদী ও পুরাতন ব্রহ্মপুত্র শাখা নদ পুনঃখনন প্রকল্প।
ডিজিটাল সংযোগের জন্য টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক আধুনিকীকরণ প্রকল্প। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে তৃতীয় সবমেরিন ক্যাবল স্থাপন এবং মিউনিসিপ্যাল গভারন্যান্স অ্যান্ড সার্ভিসেস প্রকল্প।
ড. শামসুল আলম বলেন, অর্থনৈতিক রূপান্তরের ক্ষেত্রে অনুমোদিত চারটি প্রকল্পই গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে বদ্বীপ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে নদী পুনঃখনন সংক্রান্ত প্রকল্পটি বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
এছাড়া ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠন এবং কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে ব্রডব্যান্ডের চাহিদা ব্যাপক বৃদ্ধি পাওয়ায় তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপনসহ টেলিকমিউনিকেশন সংক্রান্ত প্রকল্প দুটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
এসডিজি বাস্তবায়নে শহরের নাগরিকদের জন্য সেবা নিশ্চিত করতে মিউনিসিপ্যাল গভর্ন্যান্স অ্যান্ড সার্ভিসেস প্রকল্পটি ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।
সূত্র জানায়, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের গতি বাড়ানোর বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বসানো হচ্ছে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল।
এর আগে দুটি সাবমেরিন ক্যাবল পুরনো হওয়া এবং তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কিত সেবা বিকাশে নিরবচ্ছিন্ন, পর্যাপ্ত ও মানসম্মত ব্যান্ডউইথ সরবরাহে এই ক্যাবল নেটওয়ার্ক স্থাপন করা হবে।
এজন্য ‘বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন’ শীর্ষক একটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
এটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৬৯৩ কোটি টাকা। চলতি বছর শুরু হয়ে ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে ঢাকা ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের আওতায় বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিসিএল)।
