Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

রোগীর কিডনি গায়েব

ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে বিলম্বও মানবাধিকার লঙ্ঘন

- মানবাধিকার কমিশন

Icon

যুগান্তর রিপোর্ট

প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২০, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে বিলম্বও মানবাধিকার লঙ্ঘন

জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বলেছে, যথাসময়ে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের আছে। কিডনি গায়েবের ঘটনায় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দিতে দুই বছর লাগানোয় মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে বলেও মন্তব্য করেছে কমিশন। এদিকে কিডনি গায়েবের ঘটনায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ইউরোলজি বিভাগের অভিযুক্ত চার চিকিৎসককে এখনও আইনের আওতায় আনতে পারেনি পুলিশ। মামলার এক সপ্তাহ পরও তাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।

এক কিডনির বদলে দুটি কিডনি অপসারণে রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় অনুসন্ধান শুরু করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেছে কমিশনের তদন্ত দল। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সংশ্লিষ্ট থানা প্রতিবেদন না চাওয়ায় সেটি দিতে বিলম্ব হয়েছে। তবে পুলিশ বলছে, ময়নাতদন্ত শেষে প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট থানায় পাঠানোর কথা ফরেনসিক বিভাগের। এখানে পুলিশের করণীয় কিছু নেই।

মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত দলের প্রধান আল মাহমুদ ফয়জুল কবির বলেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন যথাসময়ে পাওয়ার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের রয়েছে। এটা যথাসময়ে না হওয়ায় অবশ্যই মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সোহেল মাহমুদ বলেন, প্রক্রিয়ার জন্য এটা দেরি হয়েছে। সব মিলে হিস্টোপ্যাথলজি রিপোর্ট পেতে দেরি হয়েছে। এক সদস্য বদলি হওয়ার জন্যও দেরি হয়েছে। এছাড়া প্রতিবেদন নিতে পুলিশ দেরি করেছে। সোহেল মাহমুদ আরও বলেন, আমরা তো অভিযোগকারীর কাছে প্রতিবেদন দিই না, আমরা পুলিশের কাছে প্রতিবেদন দিই। পুলিশের রমনা বিভাগের ডিসি সাজ্জাদুর রহমান বলেন, এখানে পুলিশের যাওয়ার কিছু নেই। যে থানা ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়, সে থানায় প্রতিবেদন ফরেনসিক বিভাগ পাঠিয়ে দেয়। যেখান থেকে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়, সেখানে প্রতিবেদন পাঠিয়ে দেয়া হয়- এটাই নিয়ম।

ঘটনার দুই বছর পর ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর ভুক্তভোগী রওশন আরার ছেলে চলচ্চিত্র পরিচালক রফিক শিকদার ২৭ নভেম্বর শাহবাগ থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় ইউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক হাবিবুর রহমান দুলালকে প্রধান আসামি করা হয়। অন্য আসামিরা হলেন- একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ফারুক হোসেন, ডা. মোস্তফা কামাল ও ডা. আল মামুন। পুলিশ বলছে, মামলার খবর পেয়েই চার আসামি আত্মগোপন করেছেন।

রফিক শিকদার জানান, একটি কিডনিতে সংক্রমণ নিয়ে ২০১৮ সালের ১ জুলাই তার মা রওশন আরাকে বিএসএমএমইউতে ভর্তি করান। চিকিৎসা শেষে বাড়িতে পাঠানোর কিছুদিন পর হাসপাতাল থেকে জানানো হয়- তার মায়ের বাম কিডনি (আক্রান্ত) ফেলে দিতে হবে। পরে ওই বছরের ৫ সেপ্টেম্বর অস্ত্রোপচারে কিডনিটি ফেলে দেয়া হয়। পরে অন্য হাসপাতালে পরীক্ষা করে আমরা জানতে পারি তার ডানপাশের কিডনিটিও ফেলে দেয়া হয়েছে। ধীরে ধীরে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। তিনি আরও জানান, অপরাধ স্বীকার করে চিকিৎসক হাবিবুর রহমান লিখিতভাবে তাদের সঙ্গে চুক্তি করেন নিজ খরচে কিডনি প্রতিস্থাপন করে দেবেন। কিন্তু তিনি কালক্ষেপণ করেছেন। বিএসএমএমইউ হাসপাতালের আইসিইউয়ে তার মাকে লাইফ সাপোর্টে কোমায় ফেলে রাখেন। সেখানে ৩১ অক্টোবর রাতে মায়ের মৃত্যু হয়। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেতে বিলম্ব হচ্ছিল।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম