এলডিসি উত্তরণ
এশিয়ায় রপ্তানিতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশ
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
পণ্য রপ্তানিতে নতুন চ্যালেঞ্জে পড়তে পারে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ।
রাতারাতি বাজারসুবিধা হারিয়ে তীব্র প্রতিযোগিতার মুখে পড়তে হবে দেশের রপ্তানিকারকদের। এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পথে থাকা এশিয়ার চার দেশের মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ে ক্ষতির আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি।
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) ও জাতিসংঘের তিনি সংস্থার এক যৌথ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। ‘টেক্সটাইলস অ্যান্ড ক্লথিংস ইন এশিয়ান গ্র্যাজুয়েটিং এলডিসি’স : চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড অপশনস’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি বৃহস্পতিবার রাতে প্রকাশ করা হয়। এতে এলডিসি থেকে উত্তরণে এশিয়ার দেশগুলোর পোশাক রপ্তানি বাণিজ্যে কী প্রভাব পড়তে পারে, তা তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাড়তি শুল্কের চাপে পড়ে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ৫৩৭ কোটি ডলার বা ৪৫ হাজার ৬৪৫ কোটি টাকা কমতে পারে, যা দেশের মোট রপ্তানির প্রায় ১৪ দশমিক ২৮ শতাংশ। এশিয়ার অন্য দেশগুলোর মধ্যে মিয়ানমারের রপ্তানি আয় ৪৯ কোটি ৯১ লাখ কমতে পারে, যা মোট রপ্তানির ৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ। নেপালে ২ কোটি ১ লাখ ডলার কমতে পারে, যা মোট রপ্তানির ২ দশমিক ৪৮ শতাংশ। এ ছাড়া লাওসের ৬ কোটি ৬৩ লাখ ডলার রপ্তানি আয় কমতে পারে, যা মোট রপ্তানির ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হলেই শীর্ষ বাজারগুলোয় পণ্য রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। কারণ বাংলাদেশের মোট রপ্তানির ৭০ শতাংশই বর্তমানে বাণিজ্যসুবিধার আওতায় শীর্ষ ১২টি বাজারে হচ্ছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র, মধ্যপ্রাচ্য, অস্ট্রেলিয়াসহ কয়েকটি বাজারে রপ্তানি বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশের রপ্তানিতে শীর্ষে থাকা ১২টি পণ্যের প্রথম ১১টিই হচ্ছে পোশাকের বিভিন্ন আইটেম।
এলডিসি থেকে উত্তরণ ঘটলে বাংলাদেশের ৪৮৪ কোটি ডলারের পোশাক ও ১৮ কোটি ডলারের বস্ত্র রপ্তানি কমবে। দেশের তৈরি পোশাকের ৬২ শতাংশের গন্তব্য ইইউতে। আগামী ২০২৪ সালে বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হলেও পরের তিন বছর ইইউতে জিএসপি সুবিধা পাওয়া যাবে। তারপর জিএসপি প্লাসের অন্তর্ভুক্ত হতে না পারলে বাজারটিতে প্রবেশে বাংলাদেশের শীর্ষ ১২ পণ্য রপ্তানিতে প্রায় ১০ শতাংশ হারে শুল্ক দিতে হবে।
তাতে ইইউতেই ৫২৮ কোটি ডলারের রপ্তানি কমে যেতে পারে। তার মধ্যে তৈরি পোশাকই হবে ৪৮৫ কোটি ডলার। ইইউ ছাড়াও কানাডা, জাপান, কোরিয়া, চীন ও নিউজিল্যান্ডের রপ্তানি বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
এলডিসি সুবিধাহীনতার ধাক্কা সামলাতে কার্যকর নীতি গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে প্রতিবেদনে। টেক্সটাইল ও পোশাক খাতকে শক্তিশালী করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আন্তর্জাতিক সহযোগিতামূলক পদক্ষেপগুলো পর্যায়ক্রমে বন্ধ হলেও যাতে অগ্রগতি থেমে না যায়, সেজন্য শিল্পের নীতি কাঠামো তৈরি করতে হবে।
