Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া আর নেই

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৩ জুলাই ২০২২, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া আর নেই

জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলে রাব্বী মিয়া আর নেই। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের মাউন্ট সিনাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার বাংলাদেশ সময় রাত ২টার দিকে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি ... রাজিউন)। তিনি সেখানে ৯ মাস ধরে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ও গাইবান্ধা-৫ আসনের প্রবীণ এই সংসদ-সদস্য। তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। তিনি তিন মেয়ে, নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

ফজলে রাব্বী মিয়ার লাশ সোমবার সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে নিউইয়র্ক থেকে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে দেশে আসবে। এর আগে আজ স্থানীয় সময় বাদ জোহর নিউইয়র্কের জ্যামাইকার মুসলিম সেন্টারে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। ডেপুটি স্পিকারের জনসংযোগ কর্মকর্তা স্বপন কুমার বিশ্বাস জানান, লাশ বাংলাদেশে আনার পর প্রথম জানাজা হওয়ার কথা জাতীয় সংসদে। তবে এ জানাজার সময়সূচি এখনো নির্ধারিত হয়নি। এরপর তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণে। সুপ্রিমকোর্ট থেকে লাশ নেওয়া হবে গাইবান্ধায়। সেখানকার ভরতখালী স্কুল মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হবে।

ডেপুটি স্পিকারের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তারা মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান।

এক শোকবার্তায় রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ সংসদ পরিচালনায় ফজলে রাব্বী মিয়ার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। রাষ্ট্রপতি বলেন, দেশের সংসদীয় গণতন্ত্র চর্চা ও বিকাশে ফজলে রাব্বীর অবদান জাতি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।

শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ছাত্রজীবন থেকেই ফজলে রাব্বী মিয়া আইয়ুববিরোধী আন্দোলন এবং ৬২-এর শিক্ষা কমিশনবিরোধী আন্দোলনে জড়িত ছিলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ১১নং সেক্টরে যুদ্ধ করেছিলেন। সংসদীয় গণতন্ত্রে অসামান্য ভূমিকার জন্য তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।

এ ছাড়া শোক জানিয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও সংসদে বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদ, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলের উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের।

ডেপুটি স্পিকারের মৃত্যুতে আরও শোক প্রকাশ করেছেন-আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য এবং ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ, সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, শিক্ষামন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম, ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক, পরিবেশ, বন ও জলবায়ুমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন, সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার প্রমুখ।

শোক জানিয়েছেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান, সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খসরু, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন, মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুননেসা ইন্দিরা, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম প্রমুখ।

এ ছাড়া আরও শোক জানিয়েছেন-জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার এমপি।

সংক্ষিপ্ত জীবনী : ফজলে রাব্বী মিয়া ১৯৪৬ সালের ১৫ এপ্রিল গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার গটিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম ফয়জার রহমান এবং মার নাম হামিদুন নেছা। ১৯৭১ সালে ফজলে রাব্বী মিয়া মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন। তিনি ১১নং সেক্টরে যুদ্ধ করেন। এ ছাড়া বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে বৈশ্বিক জনমত গড়ে তুলতেও তিনি কাজ করেছেন।

ফজলে রাব্বী মিয়া ১৯৮৬ সালের তৃতীয়, ১৯৮৮ সালের চতুর্থ, ১৯৯১ সালের পঞ্চম ও ১৯৯৬ সালের সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধা-৫ আসন থেকে সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮৯ সালে তিনি আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। পঞ্চম ও সপ্তম সংসদে তিনি বিরোধী দলের হুইপ হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। সপ্তম জাতীয় সংসদে তিনি সরকারি প্রতিষ্ঠান কমিটি এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।

২০০৮ সালের নবম, ২০১৪ সালের দশম ও ২০১৯ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও গাইবান্ধা-৫ আসন থেকে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসাবে সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন। নবম জাতীয় সংসদে তিনি সরকারি প্রতিশ্রুতি সম্পর্কিত কমিটির সভাপতি, কার্য উপদেষ্টা কমিটি, কার্যপ্রণালী বিধি সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। সে সময় তিনি প্রথমে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসাবে এবং পরে সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। দশম জাতীয় সংসদ থেকে তিনি ডেপুটি স্পিকার হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়াও তিনি এই সংসদে লাইব্রেরি কমিটির সভাপতি, কার্য উপদেষ্টা কমিটির সদস্য, কার্যপ্রণালী বিধি সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য ও পিটিশন কমিটির সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

ডেপুটি স্পিকার

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম