Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

কাঁদতে কাঁদতে মারাই গেল শিশুটি

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৫ আগস্ট ২০২২, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

কাঁদতে কাঁদতে মারাই গেল শিশুটি

প্রাইভেট কারে মায়ের কোলে ছিল শিশুটি। খালাতো বোনের বিয়ে অনুষ্ঠানের আনন্দ ছিল তার চোখে-মুখে। হঠাৎ করেই মাথার ওপর যেন এক জগদ্দল পাথর এসে পড়ল। নিমিষেই নেমে এলো অন্ধকার। তিন বছরের শিশু জাকারিয়ার চিৎকারে ভারী হয়ে ওঠে চারপাশ। আশপাশের সবাই সব দেখছিলেন। শরীরের সর্বশক্তি দিয়ে গাড়ি থেকে শিশুটিকে বের করার চেষ্টাও করছিলেন তারা। কিন্তু ১৫০ টন ওজনের গার্ডার সরানোর সাধ্য কার? সবার চোখে পানি। চেহারায় অসহায়ত্বের ছাপ। এরইমধ্যে পার হয়ে যায় আধা ঘণ্টা। কোলাহলে ঘেরা চারপাশের মধ্যে গাড়ির ভেতরে নেমে আসে সুনসান নীরবতা। থেমে যায় শিশুটির গগণবিদারী চিৎকার। কাঁদতে কাঁদতে মারাই যায় শিশুটি।

সোমবার বিকাল সোয়া চারটার দিকে উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের প্যারাডাইস টাওয়ারের সামনে একটি গার্ডার ওই প্রাইভেট কারটির ওপর পড়ে। মুহূর্তেই দুমড়ে-মুচড়ে যায় প্রাইভেট কারটি। তিন ঘণ্টা পর মায়ের কোল থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় শিশু জাকারিয়ার লাশ। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন স্বজন ও উপস্থিত জনতা। তাদের বক্তব্য-একটি দুর্ঘটনার পর এতক্ষণ ধরে শিশুটি চিৎকার করার পরেও কেন তাকে উদ্ধার করা গেল না? কেবল গাড়িটির ওপর থেকে ক্রেনটি সরাতে কেন তিন ঘণ্টা লেগে গেল? চোখের সামনে এভাবে অসহায়ের মতো একটি শিশুর মৃত্যু কেন দেখতে হলো? এগুলো দেখার মতো, বলার মতো কেউ কি নেই?

ঘটনাস্থলে কথা হয় মো. সুমন নামের একজনের সঙ্গে। তিনি বলেন, জীবনে অনেক মৃত্যুর কথা শুনেছি, দেখেছি। তবে এই মৃত্যুটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। কেউ মানতে পারবে না। বিয়ের অনুষ্ঠান উদযাপনে থাকা একটা পরিবার এভাবে চোখের সামনে শেষ হয়ে যাবে মানতেই পারছি না। ওই গাড়িটির পেছনেই ছিল অন্যান্য স্বজনদের গাড়ি। তারা যেভাবে মূর্ছা যাচ্ছিলেন তা দেখে কারও পক্ষে ঠিক থাকা সম্ভব নয়। শিশুটি যখন চিৎকার করছিল, তখন স্বজনদের চিৎকারেও ভারী হয়ে উঠেছিল চারপাশ। আমরা কেবল চোখের পানি ফেলে আল্লাহকে ডাকছিলাম। হাত দিয়ে টেনে গাড়িটি ক্রেনের নিচ থেকে বের করার চেষ্টা করছিলাম। অবুঝ মন মানছিল না বলেই এই চেষ্টাটা করেছি। তখন মাথায়ও আসেনি এতো ওজনের একটি গার্ডারের নিচ থেকে গাড়িটা হাত দিয়ে টেনে সরানো যাবে না।

শিশু

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম