সাফ শিরোপাজয়ী মহিলা ফুটবল দলকে সংবর্ধনা
খেলাধুলায় জয়ের মনোভাব ও প্রশিক্ষণ জরুরি: প্রধানমন্ত্রী
বাসস
প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২২, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফরমে সাফল্য অর্জনের লক্ষ্যে আরও প্রতিযোগিতা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
আর জয়লাভের মনোভাব নিয়ে খেলোয়াড়দের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে হবে। বুধবার সকালে নিজ কার্যালয়ে নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে ‘সাফ উইমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপ-২০২২’ শিরোপাজয়ী বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলকে সংবর্ধনা ও আর্থিক পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতার আহ্বানে সাড়া দিয়ে এদেশের মানুষ অস্ত্র তুলে নিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। সব সময় এটা মাথায় রাখতে হবে।
খেলার মাঠেও মাথায় রাখতে হবে যে যুদ্ধে জয় করেছি, খেলায়ও জয়ী হব। এই চিন্তা নিয়ে সবাইকে চলতে হবে। তাহলেই সাফল্য আসবে। কারণ, মনোবল এবং আত্মবিশ্বাস একান্তভাবে দরকার। আর সব সময় প্রশিক্ষণও দরকার। প্রশিক্ষণ কোনোমতেই শিথিল করা যাবে না। যত বেশি প্রশিক্ষণ হবে, তত বেশি খেলাধুলায় উৎকর্ষতা বাড়বে।’
নিজের পরিবারের সদস্যদের খেলাধুলার সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমরা সব সময় এটা মনে করি যে, খেলাধুলা আমাদের অপরিহার্য। আমার আব্বা ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাবে খেলতেন, আবার আমার ভাই শেখ কামাল সেও খেলত, সবাই বিভিন্ন টিমের সঙ্গে জড়িত ছিল।’ তিনি বলেন, আমাদের ছেলেমেয়েরা যত বেশি খেলাধুলার সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারবে, সংস্কৃতিচর্চার সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারবে, সাহিত্যচর্চা করবে, তারা তত সমৃদ্ধ হবে। তাই লেখাপড়ার পাশাপাশি এগুলো একান্তভাবে দরকার।’
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা ফুটবল দলের ২৩ জন খেলোয়াড়ের প্রত্যেকের হাতে পাঁচ লাখ টাকার চেক এবং ১১ জন প্রশিক্ষক ও কর্মকর্তার প্রত্যেকের হাতে দুই লাখ টাকার চেক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। পরে খেলোয়াড়রা প্রধানমন্ত্রীর হাতে ‘সাফ উইমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপ-২০২২’-এর ট্রফি তুলে দেন এবং ফটোসেশনে অংশগ্রহণ করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। স্বাগত বক্তব্য দেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মেসবাহ উদ্দিন। বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন তার অনুভূতি ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানে ‘সাফ উইমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপ-২০২২’-এর ওপর একটি ভিডিও-ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা আহসান উল্লাহ মাস্টারের জন্মদিনে তার ওপর রচিত ‘আহসান উল্লাহ মাস্টার জীবনালেখ্য’ নামক একটি গ্রন্থেরও মোড়ক উন্মোচন করেন। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াসেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশন আইন ২০১১’ প্রণয়ন করে একটা ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এই ফাউন্ডেশনকে করোনাকালীন ৩০ কোটি টাকা দিয়েছিলাম। মোট ৪০ কোটি টাকার সিড মানি দেওয়া হয়েছে। আমি আরও ২০ কোটি টাকা দেব। ফাউন্ডেশন থেকে যারা খেলাধুলার সঙ্গে সম্পৃক্ত, অনেক সময় তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে অথবা তাদের কোনোরকম অসুবিধা দেখা দেয়, বয়স হয়ে গেলে বাড়িতে তাদের কোনো কিছু করার থাকে না, তাদের সহযোগিতা করা হবে।
খেলোয়াড়দের সহযোগিতা করতে বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যারা বিত্তশালী আছেন, তাদের বলব এসব জায়গায় তারা যেন আরও সহযোগিতা করেন। তাছাড়া প্রত্যেকটা ব্যবসায়ী ইন্ডাস্ট্রির মালিক বা অন্য ব্যবসায়ীদের প্রতি আমি আহ্বান জানাই তারা যেন আমাদের খেলোয়াড়দের চাকরি দেন, কাজ দেন। তিনি বলেন, যারা খেলাধুলা শেষ করে এখন ব্যবসা করে বেশ টাকাপয়সার মালিক হচ্ছেন, তাদের তো উচিত খেলোয়াড়দের প্রতি আরও বেশি করে খেয়াল রাখা।
গত ১৪ বছর ক্রীড়াঙ্গনে বাংলাদেশের সফলতা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, বিভিন্ন ক্রীড়া ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে মোট ৪৮৫টি স্বর্ণ, ৪৯৯টি রৌপ্য, ৫৯৫টি ব্রোঞ্জপদক অর্জন করেছে।
আর ১১৪ বার চ্যাম্পিয়ন, ২৬ বার রানার্সআপ ও ২২ বার তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার তৃণমূল পর্যায় থেকে খেলোয়াড় গড়ে তোলার পাশাপাশি ক্রীড়া অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়ন করছে। তৃণমূল পর্যায়ে খেলাধুলার বিকাশে প্রতিটি বিভাগে বিকেএসপি এবং প্রতিটি জেলায় ইনডোর স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হবে।
