মরক্কোর হারানোর কিছু নেই উলটো পরীক্ষা ফ্রান্সেরই
ইশতিয়াক সজীব
প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২২, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
সবশেষ দল হিসাবে ব্রাজিলের টানা দুটি বিশ্বকাপ জয়ের কীর্তিতে জমেছে ছয় দশকের ধুলোর আস্তরণ।
পেলের ব্রাজিলের সেই রেকর্ড ছুঁতে এমবাপ্পের ফ্রান্সের প্রয়োজন আর মাত্র দুটি জয়। ইতিহাস গড়ার শেষ ধাপে পা রাখতে এমবাপ্পেদের থামাতে হবে হাকিমিদের ঐতিহাসিক যাত্রা।
দোহার আল বাইত স্টেডিয়ামে আজ রাত ১টায় টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের প্রতিপক্ষ কাতার বিশ্বকাপের বিস্ময় মরক্কো। একের পর এক চমক ও অঘটনের জন্ম দিয়ে আফ্রিকা ও আবর বিশ্বের প্রথম দল হিসাবে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠে আসা মরক্কোর স্বপ্নযাত্রা যদি আজ থেমেও যায়, দেশে বীরের মর্যাদাই অপেক্ষা করছে তাদের জন্য। ‘হারানোর কিছু নেই’ মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে তাই মরণকামড় দিতে চাইবে তারা। অন্যদিকে ফ্রান্স যত দুর্দান্ত খেলেই সেমিতে পা রাখুক না কেন, মরক্কোর কাছে হেরে বিদায় নিলে দুবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের জন্য তা বিপর্যয় হিসাবে দেখা হবে। এক সময় ফ্রান্সের উপনিবেশ ছিল মরক্কো। নাক উঁচু স্বভাবের অনেক ফরাসির কাছে লড়াইটা শাসক-শোষিতের! সব মিলিয়ে ফেভারিট হয়েও তাই পরীক্ষাটা আজ ফ্রান্সেরই। গ্রুপপর্বে বেলজিয়াম শেষ ষোলোতে স্পেন ও কোয়ার্টার ফাইনালে পর্তুগালকে ঘায়েল করার পর শুধু ‘জায়ান্ট কিলার’ খেতাবে তুষ্ট থাকতে রাজি নন মরক্কোর কোচ ওয়ালিদ রেগরাগুই। মরক্কান রূপকথার শেষ দৃশ্যে তিনি বিশ্ব ফুটবল মানচিত্রের চূড়ায় দেখতে চান আফ্রিকাকে। রেগরাগুইয়ের ভাষায় সেমিতে উঠেই তাদের সাফল্যের ক্ষুধা মিটে যায়নি, ‘কেউ যদি ভাবে সেমিতে উঠেই আমরা খুশি এবং ভাবছি যথেষ্ট হয়েছে, তবে সেটা ভুল। এই পর্যায়ে আসার পর ক্ষুধা মিটে গেলে সেটাই বরং সমস্যা। আমরা আফ্রিকাকে বিশ্বের চূড়ায় দেখতে চাই। টুর্নামেন্টের সেরা দল ব্রাজিল এরইমধ্যে বিদায় নিয়েছে। আমরা ক্ষুধার্ত ও উচ্চাকাক্সক্ষী দল। আমরা ফেভারিট না হলেও আত্মবিশ্বাসী। ফ্রান্সের বিপক্ষে সেটা যথেষ্ট হবে কিনা জানি না। কিন্তু আমরা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই করব। সবচেয়ে কঠিন পথ ধরে সেমিতে এসেছি আমরা। প্রতি রাউন্ডেই মানুষ ভেবেছে, এবারই আমাদের বিদায়। কিন্তু আমরা এখনো আছি বিশ্বকাপে।’
রেগরাগুইয়ের জন্ম ও বেড়ে ওঠা ফ্রান্সে। খেলেছেন ফরাসি লিগে। তার অধিকাংশ শিষ্যও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বেড়ে উঠেছেন। ইউরোপের দলগুলোর শক্তি, দুর্বলতা তাই জানা আছে মরক্কোর। ফ্রান্সের প্রাণভোমরা কিলিয়ান এমবাপ্পেকে আটকানোর দায়িত্বে থাকবেন মরক্কোর তারকা ডিফেন্ডার আশরাফ হাকিমি। দুজনই খেলেন ফরাসি ক্লাব পিএসজিতে। বন্ধু এমবাপ্পেকে সমীহ করলেও ফ্রান্সের দুর্ধর্ষ আক্রমণভাগ নিয়ে আতঙ্কিত নন হাকিমি। উলটো পাঁচ ম্যাচে মাত্র এক গোল হজম করা মরক্কোর জমাট রক্ষণ নিয়ে চিন্তিত ফ্রান্স। আটলাসের সিংহদের হালকাভাবে নিয়ে ফাইনালের আগেই দেশের বিমান ধরতে চান না ফরাসি ডিফেন্ডার রাফায়েল ভারানে, ‘আমরা জানি, মরক্কো এখানে ঘটনাচক্রে আসেনি। আমরা যারা অভিজ্ঞ তাদের কাজ হবে আরেকটি যুদ্ধের জন্য সবাইকে প্রস্তুত করা। তা না হলে বাড়ি ফিরে যেতে হবে। সেমিফাইনালে ওঠা সহজ নয়, কিন্তু এটা কোনো অর্জন নয়। আমাদের লক্ষ্য জয়।’
