বান্দরবানের রুমায় র‌্যাবের সঙ্গে পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কুকি চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) ও নব্য জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার সদস্যদের গোলাগুলি হয়েছে।

উপজেলার রেমাক্রী পাংসা ইউনিয়নের দুর্গম রেমাক্রী ব্রিজ এলাকায় মঙ্গলবার সকালে এ গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ সময় র‌্যাবের ৮ সদস্য আহত হন। ৫ জঙ্গিকে আটক করা হয়েছে।

র‌্যাব ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানায়, বান্দরবানের থানচির সীমান্তবর্তী রুমা উপজেলার দুর্গম রেমাক্রী ব্রিজ এলাকায় পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফ ও নব্য জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে অভিযান চালায় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। এ সময় এ দুই সংগঠনের সশস্ত্র সদস্যরা র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি ছোড়ে। র‌্যাব সদস্যরাও পালটা গুলি ছুড়লে দুপক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়।

র‌্যাব কর্মকর্তারা জানান, নব্য জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার সদস্যদের অর্থের বিনিময়ে পাহাড়ের দুর্গম বিভিন্ন স্থানে প্রশিক্ষণে সহযোগিতা করে আসছে পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কুকি চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)। ইতোমধ্যে যৌথ বাহিনী অভিযান চালিয়ে পাহাড়ের রুমা, রোয়াংছড়ি, থানচি উপজেলাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে নব্য জঙ্গি সংগঠনটির ৩৮ সদস্য এবং কেএনএফ’র ১৪ সদস্যকে আটক করেছে। গত ২৯ জানুয়ারি সেনাবাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলিতে কেএনএফ’র এক সদস্য নিহত হয়। কেএনএফ সদস্যের লাশও উদ্ধার করা হয়। সংগঠনটির ক্যাম্প থেকে পাওয়া গেছে অস্ত্রশস্ত্রও। পার্বত্য চট্টগ্রামে পৃথক একটি রাষ্ট্র গঠনে সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফ’র সদস্যরা ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। তাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছে নব্য সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার সদস্য ঘরছাড়া নিখোঁজ তরুণরা।

মঙ্গলবার বিকালে থানচিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে র‌্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) এম. খুরশীদ হোসেন জানান, গত আগস্টে কুমিল্লা থেকে ৮ তরুণ নিখোঁজ হয়। তাদের স্বজনদের করা জিডির সূত্র ধরে তথ্য মেলে নিখোঁজ তরুণরা নব্য জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার সদস্য হয়ে পাহাড়ে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় গত ১৩ অক্টোবর থেকে পাহাড়ে জঙ্গিবিরোধী অভিযান শুরু হয়। অভিযানে ৩৮ জঙ্গি ও কেএনএফ’র ১৪ সদস্যকে আটক করা হয়। চলমান অভিযানে মঙ্গলবার সকালে রেমাক্রী ব্রিজ এলাকায় অবস্থান নেওয়া র‌্যাবের সদস্যদের সঙ্গে কেএনএফ সদস্য ও নব্য জঙ্গিদের গুলি বিনিময় হয়। অভিযানে র‌্যাবের ৮ সদস্য আহত হয়েছেন। ৫ জঙ্গিকে আটক করা হয়েছে। র‌্যাবের ডিজি বলেন, ইতোমধ্যে জঙ্গি নির্মূলে ৮০ ভাগ সফলতা পেয়েছি। জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের সংখ্যাও আগের চেয়ে কমেছে। অভিযান এখনো চলমান রয়েছে। শতভাগ সফলতার পথেই আমরা এগোচ্ছি। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত এ অভিযান চলবে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে র‌্যাবের মিডিয়া উইংয়ের খন্দকার আল মঈন, র‌্যাব কর্মকর্তা মশিউরসহ সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।