Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা

বাদ পড়া ও নতুন শিক্ষার্থীর তালিকা করেনি ডিপিই

তদন্ত কমিটিকে আরও দুদিন সময়, ছায়া তদন্তে বুয়েটও

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০৩ মার্চ ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

বাদ পড়া ও নতুন শিক্ষার্থীর তালিকা করেনি ডিপিই

ভুলের পর কোনোরকম ফল তৈরি এবং দুঃখপ্রকাশ করেই থেমে আছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই)। কিন্তু এই বিভ্রাটে কত শিক্ষার্থী বলি হলো সেই তথ্য বের করতে এক রকম উদাসীন এ সংস্থাটি।

মঙ্গলবার দুপুরে প্রকাশিত এই ফল মাত্র চার ঘণ্টার মাথায় স্থগিত করা হয়। ২৯ ঘণ্টা যাচাই শেষে বুধবার রাত ১০টার পর তা পুনারয় প্রকাশ করা হয়। এরপর বৃহস্পতিবার সারা দিন গেছে। কিন্তু কত শিক্ষার্থী বাদ পড়ল, আর কতজন নতুন করে বৃত্তি পেল কিংবা কতটি উপজেলার ফলে গোলযোগ হয়েছে-সেই তথ্য তারা বিকাল ৪টা পর্যন্ত প্রস্তুতই করেনি।

এদিকে এই ভুলের ঘটনায় দায়ীদের চিহ্নিত করতে গঠিত কমিটিকে প্রতিবেদন দেওয়ার সময়সীমা আরও দুদিন বাড়ানো হয়েছে। ফল প্রকাশের দিন ২৮ ফেব্রুয়ারি ডিপিই পরিচালক উত্তম কুমার দাশকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি সেদিনই কাজ শুরু করে। এ হিসাবে বৃহস্পতিবার প্রতিবেদন দেওয়ার কথা ছিল। তবে সময় বাড়ানোর ফলে সোমবারের পর কমিটিকে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে।

এদিকে এই কমিটির পাশাপাশি বুয়েটের একজন শিক্ষকের নেতৃত্বেও ভুল অনুসন্ধানে কাজ চলছে। তবে ওই শিক্ষকের নাম গোপন রেখেছে ডিপিই। সূত্র বলছে, উভয় কমিটির প্রতিবেদনই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পাঠানো হবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ডিপিই মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত যুগান্তরকে বলেন, নতুন ফলে কত শিক্ষার্থী বাদ পড়ল বা নতুন করে বৃত্তি পেল-সেই হিসাব এখনো হয়নি। কম্পিউটারে নির্দিষ্ট সফটওয়্যারে কমান্ড দিয়ে যে ফল এসেছে সেটি প্রকাশ করা হয়েছে। ট্যালেন্টপুল বা সাধারণ গ্রেডে বৃত্তির জন্য কারা মনোনীত হবে, সে বিষয়ে নীতিমালার শর্তে বলা আছে। সেই শর্ত অনুযায়ী তৈরি করা প্রোগ্রামের মাধ্যমে কম্পিউটারই ফল দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বৃত্তির ফলে ত্রুটির ঘটনা কেন ঘটল তা চিহ্নিত করতে দুটি দল কাজ করছে। উভয় কমিটিই খুঁজে বের করবে কারও কোনো অবহেলা বা উদাসীনতা আছে কিনা। এখানে সফটওয়্যারের কোনো ত্রুটি আছে, না মানুষ ভুল করেছে-তা তদন্ত কমিটি খতিয়ে দেখবে।

এক প্রশ্নের জবাবে মহাপরিচালক বলেন, আশা করছি দ্বিতীয়বার প্রকাশিত ফল নির্ভুল। কিন্তু সবই মেশিনে কাজ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ভুল হতেই পারে। কিন্তু ভুল কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে করে না। সফটওয়্যারে কাজ করতে গিয়ে অসাবধানতাবশত এক জায়গার পরিবর্তে আরেক জায়গায় চাপ পড়ে যেতে পারে। এই ক্ষেত্রে খেয়াল করলে ফল ঘোষণার আগেই সংশোধন করা যায়। নইলে ভুলটি থেকে যায়। তিনি জানান, নির্ভুল প্রতিবেদনের স্বার্থে ডিপিই’র তদন্ত কমিটিকে সময় বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

গত বছরের ২৮ নভেম্বর হঠাৎ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এই বৃত্তি পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেয়। যা ৪ দিন পর ২ ডিসেম্বর শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে প্রকাশ পায়। এর ২৮ দিনের মাথায় ৩০ ডিসেম্বর একযোগে সারা দেশে পরীক্ষা নেওয়া হয়। এতে ৫ লাখ ৩৯২ জন নিবন্ধন করলেও অংশ নেয় ৪ লাখ ৮২ হাজার ৯০৪ জন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, সিদ্ধান্ত গ্রহণ থেকে ফল প্রকাশ পর্যন্ত গোটা প্রক্রিয়ায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং ডিপিই তাড়াহুড়ো করেছে। পরীক্ষা নেওয়ার পর ফল তৈরিতে খুবই কম সময় দেওয়া হয় মাঠ প্রশাসনকে। আবার অন্যান্য বছর প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে যে বৃত্তি দেওয়া হয় সেটি তৈরি করতে ডিপিই’র কম্পিউটার সেলকে পর্যাপ্ত সময় দেওয়া হয়।

কিন্তু এবার তারা সেই সময় পায়নি। তবে এখন পর্যন্ত চিহ্নিত একটিমাত্র ত্রুটি সামনে এসেছে। সেটি হলো-বিভিন্ন উপজেলার তৈরিকৃত ফলে একই ধরনের কোড থাকায় এই সমস্যা হয়। কিন্তু ফল চূড়ান্ত করার সময় বিষয়টি ধরা পড়েনি।

এবার ৮২ হাজার ৩৮৩ জন শিক্ষার্থীই বৃত্তি পেয়েছে। তাদের মধ্যে ৩৩ হাজার ট্যালেন্টপুলে (মেধা) এবং ৪৯ হাজার ৩৮৩ শিক্ষার্থী সাধারণ গ্রেডে।

নতুন শিক্ষার্থী

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম