তিতাসের দাবি বিস্ফোরণ গ্যাস থেকে নয়
সিদ্দিকবাজার ট্র্যাজেডি
রিমান্ড শেষে ভবন মালিকসহ ৩ জন কারাগারে * এখনো চলছে ভবন ধসে পড়া ঠেকানোর কাজ
যুগান্তর প্রতিবেদন
১৩ মার্চ ২০২৩, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
রাজধানীর পুরান ঢাকার সিদ্দিকবাজারে এখনো প্রাণচাঞ্চল্য ফেরেনি। ভয়াবহ বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটি ধসে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। তা ঠেকাতে বিস্ফোরণের ষষ্ঠ দিন রোববারও চলছিল নানা প্রক্রিয়া। ফলে বন্ধ ছিল নর্থ সাউথ রোডের একপাশের যান চলাচল। এদিন ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের একটি প্রতিনিধি দল। তারা দাবি করেন, বিস্ফোরণটি তিতাসের গ্যাস থেকে হয়নি। এদিকে দুদিনের রিমান্ড শেষে দুই ভবন মালিকসহ তিনজনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
তিতাসের পক্ষে রোববার দুপুরে ১৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এতে নেতৃত্ব দেন সংস্থাটির মেট্রো ঢাকা বিপণন ডিভিশন-দক্ষিণের মহাব্যবস্থাপক (চলতি দায়িত্ব) প্রকৌশলী মো. সামছুদ্দিন আল আজাদ। তিনি যুগান্তরকে বলেন, ভবনটি সংলগ্ন দুটি রাইজার ছিল।
একটি এই বিস্ফোরণ হওয়া ভবনের, অন্যটি পার্শ্ববর্তী ভবনের। যা পুরোপুরি অক্ষত অবস্থায় আছে। আামাদের আগে তিতাস গ্যাসের একটি বিশেষজ্ঞ টিম ভবন পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দিয়েছে। সে প্রতিবেদনেও গ্যাসের আলামত নেই। আর এখনো কোনো গ্যাসের আলামত পাওয়া যায়নি। সুতরাং এটি তিতাসের লাইনের গ্যাস থেকে সৃষ্ট দুর্ঘটনা নয়।
এদিন বিস্ফোরণস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ভবনটি যাতে ধসে না পড়ে সেজন্য পুরোদমে কাজ চলছে। রাজউকের হয়ে এখানে কর্মরতদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভবনটি থাকবে নাকি ভেঙে ফেলা হবে সে বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। এখন তারা ভবনটিকে স্থিতিশীল করতে কাজ করছেন। এজন্য স্টিলের পাইপ (মাইল্ড স্টিল বা এমএস পাইপ) দিয়ে অস্থায়ী ঠেকা দিচ্ছেন। বিস্ফোরণে ভবনটির বেজমেন্ট এবং নিচতলার ২৪ কলামের মধ্যে ৯টি কলাম বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারা শুরুতে সামনের কলামগুলোতে কাজ করছেন। পাইপ বসানোর কাজ সম্পন্ন হলে রাজউক ও বুয়েটের প্রকৌশলীরা ভবনটি পরিদর্শন করবেন। এরপর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এদিকে ধসে পড়া ঠেকাতে চলা কাজ নির্বিঘ্ন করতে এখনো ভবনটির সামনের নর্থ সাউথ রোডের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। পুলিশ সদস্যরা সেখানে কতিগ্রস্ত ভবনের সামনের রাস্তার দুই পাশে অবস্থানে রয়েছেন। বংশাল থানার ওসি মুজিবুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, সড়কের পূর্ব অংশ দিয়ে গাড়ি চলাচল করছে। একপাশের সড়ক বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তটি পুলিশের নয়। রাজউক ও সিটি করপোরেশন যখন বলবে, আমরা সড়কটি খুলে দেব।
ভবন মালিকসহ তিনজন কারাগারে : বিস্ফোরণের ঘটনায় করা মামলায় গ্রেফতার দুই ভবন মালিকসহ তিনজনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। কারাগারে যাওয়া আসামিরা হলেন-ভবনের দুই মালিক ওয়াহিদুর রহমান ও মতিউর রহমান এবং ভবনের বেজমেন্টের স্যানিটারি ব্যবসায়ী মিন্টু। এর মধ্যে ওয়াহিদুর ও মতিউর সম্পর্কে আপন দুই ভাই। রোববার দুদিনের রিমান্ড শেষে তাদের আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর তাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। এর পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আলম আসামিদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার বিকালে কুইন্স মার্কেটে বিস্ফোরণের ঘটনায় ২৪ জনের প্রাণহানি হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন দেড় শতাধিক মানুষ। তদন্তকারী একাধিক সংস্থার প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, তিতাসের গ্যাসের লাইন থেকেই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
রাজধানীর পুরান ঢাকার সিদ্দিকবাজারে এখনো প্রাণচাঞ্চল্য ফেরেনি। ভয়াবহ বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটি ধসে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। তা ঠেকাতে বিস্ফোরণের ষষ্ঠ দিন রোববারও চলছিল নানা প্রক্রিয়া। ফলে বন্ধ ছিল নর্থ সাউথ রোডের একপাশের যান চলাচল। এদিন ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের একটি প্রতিনিধি দল। তারা দাবি করেন, বিস্ফোরণটি তিতাসের গ্যাস থেকে হয়নি। এদিকে দুদিনের রিমান্ড শেষে দুই ভবন মালিকসহ তিনজনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
তিতাসের পক্ষে রোববার দুপুরে ১৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এতে নেতৃত্ব দেন সংস্থাটির মেট্রো ঢাকা বিপণন ডিভিশন-দক্ষিণের মহাব্যবস্থাপক (চলতি দায়িত্ব) প্রকৌশলী মো. সামছুদ্দিন আল আজাদ। তিনি যুগান্তরকে বলেন, ভবনটি সংলগ্ন দুটি রাইজার ছিল।
একটি এই বিস্ফোরণ হওয়া ভবনের, অন্যটি পার্শ্ববর্তী ভবনের। যা পুরোপুরি অক্ষত অবস্থায় আছে। আামাদের আগে তিতাস গ্যাসের একটি বিশেষজ্ঞ টিম ভবন পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দিয়েছে। সে প্রতিবেদনেও গ্যাসের আলামত নেই। আর এখনো কোনো গ্যাসের আলামত পাওয়া যায়নি। সুতরাং এটি তিতাসের লাইনের গ্যাস থেকে সৃষ্ট দুর্ঘটনা নয়।
এদিন বিস্ফোরণস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ভবনটি যাতে ধসে না পড়ে সেজন্য পুরোদমে কাজ চলছে। রাজউকের হয়ে এখানে কর্মরতদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভবনটি থাকবে নাকি ভেঙে ফেলা হবে সে বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। এখন তারা ভবনটিকে স্থিতিশীল করতে কাজ করছেন। এজন্য স্টিলের পাইপ (মাইল্ড স্টিল বা এমএস পাইপ) দিয়ে অস্থায়ী ঠেকা দিচ্ছেন। বিস্ফোরণে ভবনটির বেজমেন্ট এবং নিচতলার ২৪ কলামের মধ্যে ৯টি কলাম বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারা শুরুতে সামনের কলামগুলোতে কাজ করছেন। পাইপ বসানোর কাজ সম্পন্ন হলে রাজউক ও বুয়েটের প্রকৌশলীরা ভবনটি পরিদর্শন করবেন। এরপর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এদিকে ধসে পড়া ঠেকাতে চলা কাজ নির্বিঘ্ন করতে এখনো ভবনটির সামনের নর্থ সাউথ রোডের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। পুলিশ সদস্যরা সেখানে কতিগ্রস্ত ভবনের সামনের রাস্তার দুই পাশে অবস্থানে রয়েছেন। বংশাল থানার ওসি মুজিবুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, সড়কের পূর্ব অংশ দিয়ে গাড়ি চলাচল করছে। একপাশের সড়ক বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তটি পুলিশের নয়। রাজউক ও সিটি করপোরেশন যখন বলবে, আমরা সড়কটি খুলে দেব।
ভবন মালিকসহ তিনজন কারাগারে : বিস্ফোরণের ঘটনায় করা মামলায় গ্রেফতার দুই ভবন মালিকসহ তিনজনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। কারাগারে যাওয়া আসামিরা হলেন-ভবনের দুই মালিক ওয়াহিদুর রহমান ও মতিউর রহমান এবং ভবনের বেজমেন্টের স্যানিটারি ব্যবসায়ী মিন্টু। এর মধ্যে ওয়াহিদুর ও মতিউর সম্পর্কে আপন দুই ভাই। রোববার দুদিনের রিমান্ড শেষে তাদের আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর তাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। এর পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আলম আসামিদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার বিকালে কুইন্স মার্কেটে বিস্ফোরণের ঘটনায় ২৪ জনের প্রাণহানি হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন দেড় শতাধিক মানুষ। তদন্তকারী একাধিক সংস্থার প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, তিতাসের গ্যাসের লাইন থেকেই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।