আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয়
বাংলাদেশের প্রথম জয় ১০ উইকেটে
ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ড সিরিজ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
দুদল মিলে ব্যাট করার কথা ১০০ ওভার। কিন্তু ম্যাচ শেষ মাত্র ৪১.২ ওভারে। আরেকটু ছোট হলে সিলেটে তৃতীয় ও শেষ ওডিআই হয়ে যেত টি ২০। বৃহস্পতিবার সিলেটে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে আয়ারল্যান্ড মাত্র ২৮.১ ওভারে অলআউট ১০১ রানে। সৌজন্যে হাসান মাহমুদ। এই তরুণ বাংলাদেশি পেসারের ৩২ রানে পাঁচ উইকেট আইরিশ ব্যাটারদের মাথা তুলে দাঁড়াতে দেয়নি। সেটি তাদের অসহায় আত্মসমর্পণ দেখেই বোঝা যায়।
সাদা বলের সিরিজে বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাস এখন যেন আকাশ ছুঁতে চাইছে। সেখানে ১০২ তাড়া করে ম্যাচ জেতা, সেটা তো ডাল-ভাত তামিম-লিটনদের জন্য। এ দুজনের নাম নেওয়ার কারণ, উদ্বোধনী জুটিতে তাদের অবিচ্ছিন্ন ১০২ রানে লেখা হয়ে যায় বাংলাদেশের আরেকটি গৌরবগাথা। ওডিআইতে এটিই যে ১০ উইকেটে বাংলাদেশের প্রথম জয়। এর আগে ওডিআইতে বাংলাদেশের পাঁচটি জয় ছিল নয় উইকেটে। ২২১ বল হাতে রেখে পাওয়া জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ স্বাগতিকরা ২-০তে নিজেদের করে নিয়েছে। আয়ারল্যান্ড যে ৩-০তে সিরিজ হারেনি, সেজন্য ধন্যবাদ দেওয়া উচিত বৃষ্টিকে। দ্বিতীয় ওডিআইতে বাংলাদেশ নিজেদের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৩৪৯ রান করেও জয়বঞ্চিত হয় আকাশের কান্নায়।
এই প্রথম ওডিআইতে প্রতিপক্ষের ১০ উইকেটের সব নিলেন বাংলাদেশের পেসাররা। এরইমধ্যে আলাদা করে বলতে হয় ম্যাচসেরা হাসান মাহমুদের নাম। ২৩-এর এই তরুণ পেসার ৩২ রানে পাঁচ উইকেট নিয়ে আয়ারল্যান্ডের ইনিংসের মেরুদণ্ড ভেঙে দেন। ক্যারিয়ারে এই প্রথম একদিবসী ম্যাচে পাঁচ উইকেট পেলেন তিনি। তাসকিন আহমেদ তিনটি এবং পেস বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ডের ভাষায় ‘সিলেটের রকেট’ ইবাদত হোসেন পেলেন দুই উইকেট। স্পিনবান্ধব থেকে পেসবান্ধব হয়ে ওঠা বাংলাদেশ দলের শাণিত পেস আক্রমণের এ এক অনন্য নজির। আয়ারল্যান্ডের ইনিংসে বাংলাদেশের স্পিনাররা বল করার সুযোগ পান মাত্র চার ওভার। এরমধ্যে সাকিব আল হাসান ওডিআই ক্যারিয়ারে মাত্র তৃতীয়বার বল করারই সুযোগ পাননি।
১০২ তাড়া করা এই বাংলাদেশ দলটার কাছে ডাল-ভাত, আগেই তা বলা হয়েছে। তামিম ও লিটন মিলে খেলাটাকে ছেলেখেলা বানিয়ে দিলেন স্ট্রোকের ফুলঝুরিতে। ফলশ্রুতিতে ১৩.১ ওভারেই খেল্ খতম। ওডিআইতে বল বাকি থাকার দিক থেকে যা বাংলাদেশের দ্বিতীয় দ্রুততম জয়। প্রথম ওয়ানডেতে রানের ব্যবধানে সবচেয়ে বড় জয়ের (১৮৩ রানে) পর এবার ‘প্রথম’ ১০ উইকেটের জয়। তামিম ইকবালদের মুকুটে আরেকটি পালক। সিরিজসেরা হন মুশফিকুর রহিম।
সিলেটের ছবির মতো সুন্দর ভেন্যুতে কাল দর্শক উপস্থিতি ছিল কম। তার ওপর রান তাড়ায় কোনো চ্যালেঞ্জও ছিল না স্বাগতিক ব্যাটারদের সামনে। তামিম শুরুটা করেন পয়েন্ট দিয়ে চার মেরে। লিটনের বেশিরভাগ বাউন্ডারি আসে কভার ও স্কোয়ার লেগ দিয়ে। লিটন নিজের নবম ওয়ানডে ফিফটি পান হামফ্রেসকে দুটি চার মেরে। ৩৮ বলে ৫০ পূর্ণ করেন তিনি ১০টি চারের সহায়তায়। জয়সূচক রান আসে তামিমের ব্যাট থেকে। ৪১ বলে ৪১ তার রান। পাঁচটি চার, দুটি ছয়।
আয়ারল্যান্ডের ইনিংসে বলার মতো মাত্র দুটি নাম। লরকান টাকার (২৮) ও কার্টিস ক্যাম্ফার (৩৬)। দুই অঙ্কের রান শুধু এ দুজনের। সিলেটের পাট চুকিয়ে এবার চট্টগ্রামে তিন ম্যাচের টি ২০ সিরিজ খেলবে দুদল। যার প্রথমটি ২৭ মার্চ। এরপর ঢাকায় ফিরে বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ড মুখোমুখি হবে একমাত্র টেস্টে। মিরপুরে যা শুরু হবে ৪ এপ্রিল। (স্কোর কার্ড খেলার পাতায়)
