পিটার হাসকে জানালেন মির্জা ফখরুল
বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৭ জুন ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার দুপুর সোয়া ১টার দিকে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসে এক ঘণ্টার বেশি তাদের মধ্যে এ বৈঠক হয়। এ দুজন ছাড়া বৈঠকে আর কেউ উপস্থিত ছিলেন না। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি, নির্বাচন ও আন্দোলন নিয়ে বিএনপির অবস্থান জানতে চাইলে তা পিটার হাসকে অবহিত করেন দলের মহাসচিব। পিটার হাসের আমন্ত্রণে সেখানে যান মির্জা ফখরুল।
বৈঠক শেষে মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র যে ভিসানীতি ঘোষণা করেছে, সে ব্যাপারে বিএনপির অবস্থান ও প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছিলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। সরকার যেহেতু নির্বাচনি প্রক্রিয়াসহ গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করেছে, সে প্রেক্ষাপটে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে গণতান্ত্রিক দেশ হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রকে এই ভিসানীতি দিতে হয়েছে বলে আমরা মনে করি। আমাদের এ অবস্থানই পিটার হাসের কাছে তুলে ধরেছি।
চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আগামী নির্বাচনসহ সার্বিক বিষয় নিয়ে বিএনপির অবস্থান জানতে চান পিটার হাস। মির্জা ফখরুল বলেন, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে না বলে তারা (বিএনপি) মনে করেন। দলের এ অবস্থান পিটার হাসের কাছে তুলে ধরেন তিনি। এর আগে ১৬ এপ্রিল বিএনপির মহাসচিব যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সে বৈঠকে স্থায়ী কমিটির সদস্য ও বৈদেশিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সদস্য শামা ওবায়েদও ছিলেন। তবে বৈঠকের পর বিএনপির পক্ষ থেকে কোনো কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করা হয়। যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস ওই দিন ফেসবুকে এক বার্তায় জানায়, বৈঠকে ‘অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং অহিংস রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার গুরুত্ব’ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
দুঃশাসনে দেশের মানুষ চরম নিরাপত্তাহীনতায় : বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বর্তমান অবৈধ আওয়ামী সরকারের দুঃশাসনে দেশের মানুষ চরম নিরাপত্তাহীনতায় দুর্বিষহ জীবন অতিবাহিত করছে। রাষ্ট্র পরিচালনায় সর্বক্ষেত্রে ব্যর্থ বর্তমান সরকার। বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন কর্মসূচিতে জনগণের অভাবনীয় সমর্থন দেখে তারা ভয় পেয়েছে। তাই বিরোধী দল ও মতের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালাচ্ছে, গুরুতর আহত করছে। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
বিবৃতিতে গণমন্ত্র মঞ্চের রোডমার্চে হামলা ও নেতাকর্মীদের আহত করার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, সোমবার বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার মোকামতলা স্থলবন্দরে শান্তিপূর্ণভাবে রোডমার্চ চলাকালীন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না ও গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকিসহ গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতাদের গাড়িবহরে হামলা করা হয়। যেসব আবাসিক হোটেলে নেতারা অবস্থান করছিলেন সেখানে তাদের ওপর আওয়ামী সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা বর্বরোচিত হামলা করে ৬ জনের অধিক নেতাকর্মীকে আহত করে। এসব ঘটনা বর্তমান সরকারের অপরাজনীতি থেকে কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, মানুষের মৌলিক ও গণতান্ত্রিক অধিকারের প্রতি নেতিবাচক প্রভাব খাটিয়ে অতীতে কোনো স্বৈরাচারী সরকারই নিজেদের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখতে পারেনি। বরং তাদের করুণ পরিণতি ভোগ করতে হয়েছে। যদি বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারের প্রতি যত্নবান না হয়ে হরণ করার কুমতলবে বিভোর থাকেন তাহলে আপনাদের পরিণতিও হবে ভয়াবহ। বিবৃতিতে অবিলম্বে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতাদের ওপর হামলাকারীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান মির্জা ফখরুল।
