Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

আবারও একইদিনে কর্মসূচি দুই দলের

সমাবেশ ঘিরে নাটকীয়তা

কাউকেই কাঙ্ক্ষিত স্থানে অনুমতি দেয়নি পুলিশ শুক্রবার পুরাতন বাণিজ্যমেলা মাঠে আ.লীগের সহযোগীরা এবং নয়াপল্টন অথবা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপি

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

সমাবেশ ঘিরে নাটকীয়তা

ফাইল ছবি

রাজধানীতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমাবেশের অনুমতি নিয়ে বুধবার দিনভর চলে নাটকীয়তা। উত্তেজনাকর এমন পরিস্থিতির ওপর ছিল দেশ-বিদেশের সবার নজর। শেষ পর্যন্ত রাতে দুদল সমাবেশ একদিন পেছানোর ঘোষণা দিলে নাটকীয়তার আপাতত অবসান ঘটে। তবে সমাবেশ ঘিরে রাজধানীজুড়ে টানটান উত্তেজনা আরও বেড়েছে। রাজধানীবাসীর মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে উৎকণ্ঠা।

সরকারের পদত্যাগের একদফা দাবিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অথবা নয়াপল্টন কোথাও মহাসমাবেশের অনুমতি দেয়নি পুলিশ। বিএনপির বৃহস্পতিবারের (আজ) মহাসমাবেশ স্থানের অনুমতি না দেওয়ায় রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয় নানা জল্পনা-কল্পনা। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে একটাই আলোচনা ছিল, তাহলে কী আবার শুরু হচ্ছে সহিংসতা। 

অনুমতি না দেওয়ার খবর নিশ্চিত হওয়ার পর করণীয় চূড়ান্তে দফায় দফায় বৈঠক করে বিএনপি। একদিন পিছিয়ে শুক্রবার মহাসমাবেশের ঘোষণা দেয় বিএনপি। একইভাবে আওয়ামী লীগের তিন সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের উদ্যোগে তাদের কাঙ্ক্ষিত স্থানে সমাবেশ করার অনুমতিও দেয়নি পুলিশ। 

বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটে এ সমাবেশ হওয়ার কথা ছিল। সেখানে মঞ্চ তৈরির কাজও শুরু হয়। কিন্তু অনুমতি না দিয়ে বিকল্প স্থান হিসাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেশিয়াম মাঠে সমাবেশ করার পরামর্শ দেয় পুলিশ। জিমনেশিয়াম মাঠে অনুমতি চাইলে ঢাবি কর্তৃপক্ষ তা দেয়নি। পরে শেরেবাংলা নগর পুরাতন বাণিজ্যমেলা মাঠে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নেয় শাসক দলের সহযোগী সংগঠনগুলো। কিন্তু মাঠ উপযুক্ত না থাকায় তারা সমাবেশ একদিন পিছিয়ে দেয়। নানা নাটকীয়তা ও উত্তেজনার পর কাল শুক্রবার আবার রাজপথে নামছে দুদল। 

তবে সমাবেশের স্থান নিয়ে নাটকীয়তার এখনো শেষ হয়নি। শুক্রবার বিএনপি মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়ে অনুমতি চেয়ে চিঠি দিলেও পুলিশ এখনো আনুষ্ঠানিক অনুমতি দেয়নি। এ প্রসঙ্গে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারের উপকমিশনার (ডিসি) ফারুক হোসেন যুগান্তরকে বলেন, বিএনপি যদি নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে চায় তাহলে অনুমতির জন্য আবেদন করতে হবে। আবেদন করলে তা বিবেচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। 

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বাড়ছে উত্তাপ। সমঝোতার সব পথ প্রায় বন্ধ। বড় দুদল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বিপরীতমুখী অবস্থানে। রাজনীতি গড়িয়েছে রাজপথে। মাঠ দখলেও শুরু হয়েছে দুদলের শক্তির মহড়া। যে কোনো মূল্যে ঢাকার নিয়ন্ত্রণ নিজেদের কবজায় রাখতে চায় তারা। এসব কর্মসূচিতে ব্যাপক শোডাউনের প্রস্তুতি নিয়েছে দুদল। বিএনপি সারা দেশ থেকে এবং আওয়ামী লীগ ঢাকা বিভাগের সব নেতাকর্মীকে রাজধানীতে আসার নির্দেশ দিয়েছে। 

২২ জুলাই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তারুণ্যের সমাবেশ থেকে সরকারের পদত্যাগে একদফা দাবিতে মহাসমাবেশের ডাক দেয় বিএনপি। ২৭ জুলাই বৃহস্পতিবার রাজধানীতে এ কর্মসূচি পালন করা হবে বলে ঘোষণা দেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অথবা নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহাসমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নেয় দলটি। অনুমতি চেয়ে সোমবার ডিএমপি কমিশনার বরাবর চিঠি দেওয়া হয়। ওই সময় পুলিশের পক্ষ থেকে সমাবেশের দিনক্ষণ পেছানোর অনুরোধ জানানো হয়। বিষয়টি নিয়ে সোমবার রাতের স্থায়ী কমিটিতে আলোচনা হয়। পুলিশের অনুরোধে সাড়া না দিয়ে বৃহস্পতিবারই মহাসমাবেশ করার সিদ্ধান্ত বহাল রাখা হয়। 

পরে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এ দুটি স্থানে অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়। দলটি গোলাপবাগ মাঠে কর্মসূচি করতে চাইলে অনুমতির বিষয়টি ভেবে দেখা যেতে পারে। মহাসমাবেশের স্থান চূড়ান্ত করার বিষয়টি বিএনপিকে অবহিত করে পুলিশ। এরপর রাতে গুলশান কার্যালয়ে জরুরি বৈঠকে বসেন নীতিনির্ধারকরা। এতে স্কাইপিতে যোগ দেন লন্ডনে অবস্থানরত দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। 

সেখানে সমাবেশের স্থানসহ পরবর্তী করণীয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এ সময় সিনিয়র একাধিক নেতা জানান, সমাবেশের স্থান নিয়ে মহানগরসহ বিভিন্ন স্তরের নেতাদের পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। সবাই এক সুরে বলেছেন, কোনোভাবেই গোলাপবাগ মাঠে যেন সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া না হয়। সেখানে সমাবেশের সিদ্ধান্ত নিলে শুরুতেই নেতাকর্মীদের মনোবল ভেঙে যাবে। প্রয়োজনে অনুমতি ছাড়া রাজধানীর কয়েকটি স্থানে একযোগে সমাবেশ করার পক্ষে তারা মত দিয়েছেন। বৈঠকে উপস্থিত প্রায় সবাই এতে সায় দেন।
 

রাজধানী আওয়ামী লীগ বিএনপি

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম