যুগান্তরকে মাহমুদুর রহমান মান্না
প্রশাসন ঢেলে সাজাতে হবে, অন্তর্বর্তী সরকার ছাড়া হবে না
একতরফা নির্বাচন করতে পারবে না আওয়ামী লীগ * আগে আন্দোলনে জয়ী হই, এরপর নির্বাচন নিয়ে ভাবা যাবে * এ মুহূর্তে বড় সংকট সরকারের ফ্যাসিবাদী নীতি
শেখ মামুনুর রশীদ
প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, আমরা মনে করি, দেশে একটা ভালো নির্বাচন হতে হবে। মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে তার ভোটধিকার প্রয়োগ করতে পারে। আজ যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, ওসিসহ প্রশাসনের সবাই আওয়ামী লীগের জন্য নির্বাচনি ক্যাম্পেইন করছে। কাল-পরশু নির্বাচন হলে তারা তো তাই করবে। সেনাবাহিনী কী করবে জানি না। তবে প্রশাসন যদি সরকারের দিকে থাকে, তাহলে নির্বাচন কেমন হয়, সে অভিজ্ঞতা আমাদের সবার আছে।
তিনি আরও বলেন, আগামী নির্বাচন সামনে রেখে সরকারি দল আওয়ামী লীগ শতকোটি টাকা জমা করেছে। সেই টাকা দিয়ে তারা নির্বাচনটা করিয়ে নেবে। এ কারণেই আমরা মনে করি, এসব ঠিক করতে হবে। প্রশাসনকে বদলাতে হবে। প্রশাসনসহ অনেক কিছুই ঢেলে সাজাতে হবে। এটা করতে হলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ছাড়া আর কেউ পারবে না। ৩ মাসের তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিয়ে কাজের কাজ কিছু হবে না।
সম্প্রতি যুগান্তরকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে মাহমুদুর রহমান মান্না এসব কথা বলেন। দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর চলমান আন্দোলন, মার্কিন ভিসানীতিসহ বিভিন্ন ইস্যুতে খোলামেলা কথা বলেন একসময়কার তুখোড় এই ছাত্রনেতা।
যুগান্তর : নির্বাচনের আর বেশি সময় বাকি নেই।
আওয়ামী লীগসহ তাদের শরিকরা সংবিধান অনুযায়ী দলীয় সরকারের অধীনে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে অনড় অবস্থানে। বিএনপিসহ আপনারা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগসহ দলীয় সরকারের বাইরে নির্বাচন চান। দুপক্ষের এই মুখোমুখি অবস্থানের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে আগামী নির্বাচন। এ অবস্থার মধ্যে দেশের রাজনীতি কোনদিকে যাচ্ছে?
মান্না : আওয়ামী লীগ তাদের অধীনে নির্বাচন করাতে চায়। আমরা তাদের পদত্যাগ চাই। আওয়ামী লীগ যেমন অনড়, আমরাও লড়াই-সংগ্রাম করছি-দাবি আদায়ে আমরাও অনড়। আমাদের বিশ্বাস-এই আন্দোলনের মধ্য দিয়েই আমরা আমাদের দাবি আদায় করতে পারব। আমরা আর যাই করি, আওয়ামী লীগের খোঁয়াড়ে ঢুকব না। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করবেন বা তাকে পদত্যাগ করতে হবে। সংসদ ভেঙে দেওয়া হবে। এরপর দেশে একটি অন্তর্বর্তী সরকার হবে। এই সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। একটা কথা বলে রাখি, আমরা কিন্তু কেয়ারটেকার বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বলছি না। আমরা বারবার বলছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা।
যুগান্তর : ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করেছে বিএনপি ও তাদের শরিকরা। ২০১৯ সালের নির্বাচনে শেষ মুহূর্তে এসে বিএনপিসহ আপনারা অংশ নিয়েছিলেন। আগামী নির্বাচনও যদি শেষ পর্যন্ত দলীয় সরকারের অধীনেই অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে কি নাটকীয়ভাবে আপনারাও এ নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেবেন।
মান্না : সরকারের যদি পতন না হয়, তাহলে তো তারা তাই করতে চাইবে। অর্থাৎ দলীয় সরকারের অধীনেই নির্বাচন করতে চাইবে। তখন আমরা আলোচনা করে ব্যবস্থা নেব। তবে এটা ঠিক, আন্দোলনটা কিন্তু আর থেমে যাবে না। যদিও আমরা এখন পর্যন্ত মনে করি, আওয়ামী লীগের আর এখন সেই অবস্থাটা নেই যে তারা একতরফাভাবে নির্বাচন করে ফেলবে। তারা নির্বাচন করতে পারবে না।
যুগান্তর : গণতন্ত্র মঞ্চসহ সরকারবিরোধী একপক্ষ জাতীয় বা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার চায়। বিএনপিসহ একটি পক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায়। আসলে আপনারা কী চান?
মান্না : তত্ত্বাবধায়ক কিংবা জাতীয় সরকার-এই চাওয়ার মধ্যে মৌলিক দৃষ্টিভঙ্গির খুব একটা তফাত যে রয়েছে, তা কিন্তু নয়। জাতীয় সরকারের কথা যারা বলছেন, তারা এখন বলেন না। আন্দোলনকারী দলগুলোকে নিয়ে জাতীয় সরকার-সেটা ছিল তাদের ব্যাখ্যা। বিএনপি বলছে আবার সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার পুনঃপ্রবর্তন। বিএনপির এই দাবি পূরণ করতে হলে জাতীয় সংসদে রেজ্যুলেশন লাগবে। সংসদে বিল পাশ করতে হবে। আওয়ামী লীগের এ বিষয়ে সম্মতি থাকতে হবে কিংবা তাদের এ বিষয়ে একমত হতে হবে। কিন্তু আওয়ামী লীগ এটা করবে বলে আমার মনে হয় না। এজন্যই আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা বলছি। এ সরকার যেভাবেই হোক পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত সবকিছু পরিচালনা করবে। আমরা চাই অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক গ্রহণযোগ্য নির্বাচনটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মাধ্যমে হোক।
আরেকটি কথা হচ্ছে-বিএনপি নিজেই বলে তাদের ৫০ লাখ কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। এসব কর্মী কি মামলা নিয়ে নির্বাচন করতে পারবেন। বর্তমান অবস্থায় আপনি যদি নির্বাচন করতে চান কোনো আদালতে তাদের জামিন হবে না। এমনকি খালেদা জিয়াও জামিন পাবেন না। এটাও মাথায় রাখতে হবে। তাই আমরা মনে করি, তত্ত্বাবধায়ক সরকার বলুন, জাতীয় সরকার বলুন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বলুন-নির্বাচনের সময় একটি অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা থাকতে হবে, এটাই মূল। একটি সরকার আসবে, যারা উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করে নির্বাচন দেবে এবং এই নির্বাচনে জনগণের মতামত প্রতিফলিত হবে।
যুগান্তর : কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা সংবিধানে নেই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বলেও সংবিধানে কিছু নেই। তাহলে আপনাদের এই চাওয়া পূরণ হবে কীভাবে।
মান্না : এটা তো ঠিক, সংবিধানসম্মতভাবেই বর্তমান সরকারকে নির্বাচনের আগে বিদায় নিতে হবে। এক্ষেত্রে যদি প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করা যায়, তাহলে প্রধানমন্ত্রী স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করবেন। রাষ্ট্রপতি তখন সুপ্রিমকোর্টের কাছে পরামর্শ চাইতে পারেন। সুপ্রিমকোর্ট এর ভিত্তিতে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা বলতে পারেন। এটা সংবিধানের মধ্য থেকেই করার সুযোগ আছে। আমরা যেমন বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদকে সরকারপ্রধান করেছিলাম, সেটা সংবিধানে ছিল না। কিন্তু সবাই মিলে করেছি। আগামী দিনেও এরকমটা হতে পারে। কিন্তু সরকার সেটা করবে বলেও মনে হয় না।
যুগান্তর : এবার আসা যাক আপনাদের সরকারবিরোধী আন্দোলন প্রসঙ্গে। মনে হচ্ছে কখনো কখনো আন্দোলন খুব তুঙ্গে। কখনো কখনো মনে হয় ম্রিয়মাণ। সরকার তো এখন আর আপনাদের সভা-সমাবেশে বাধা দিচ্ছে না, তবুও কাঙ্ক্ষিত সাড়া ফেলতে পারছেন না। কারণটা কী মনে হয় আপনার।
মান্না : আমরা এখন পর্যন্ত নিজস্ব শক্তির ওপর ভর করে আন্দোলন করছি। জয়ী হতে পারব বলেই আন্দোলন করছি। তবে এটাও ঠিক এখন পর্যন্ত চলমান এমন কোনো আন্দোলন হয়নি, যা সরকার হটাতে চূড়ান্ত আঘাত হানতে পারে। এমন আন্দোলন এখন পর্যন্ত হয়নি। চূড়ান্ত আঘাত হানতে হলে সেরকম কর্মসূচি আসতে হবে। এক্ষেত্রে শুধু গণ-আন্দোলনেই সরকার পতন হবে-এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই। তাই অন্যান্য শক্তিকেও এই আন্দোলনে কাজে লাগাতে হবে। আন্দোলনে সম্পৃক্ত করতে হবে। ৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থান বলেন, পরবর্তী সময়ে যত গণতান্ত্রিক আন্দোলন হয়েছে, সেগুলোর কথা বলেন-সবার অংশগ্রহণেই আন্দোলন সফল হয়েছে। এবারের আন্দোলনেও বিজয় সেভাবে সম্ভব।
যুগান্তর : আওয়ামী লীগসহ তাদের শরিকরা বারবার অভিযোগ করছে বিএনপিসহ আপনারা বিদেশি শক্তির ওপর ভর করে এই সরকারকে হটাতে চান। বিদেশি শক্তি সরকার বদলাতে পারবে কি না, কী মনে হয় আপনার।
মান্না : যদি নির্মোহভাবে তাকান, দেখবেন সরকারপক্ষ যেভাবে বিদেশিদের ওপর নির্ভরতা দেখিয়েছে, সেরকমটা বিরোধী পক্ষ দেখায়নি। দেখানোর সুযোগও হয়নি। আমেরিকার বাইডেন সরকার যা করছে, তা তারা তাদের নির্বাচনি ইশতেহার অনুযায়ী করছে। তারা বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়। সে অনুযায়ী ভিসানীতি, স্যাংশন বা যা যা করার করছে। এটা যে তারা বাংলাদেশের বেলায় করছে, তা নয়। বহু দেশের বিরুদ্ধেই এমন ব্যবস্থা নিচ্ছে। আমরা যুক্তরাষ্ট্রের এই ভূমিকার অ্যাডভান্টেজ পেয়েছি। তারা কিন্তু বহুবার বলেছে, তারা এ দেশে একটি ভালো নির্বাচন দেখতে চায়। তারা সংঘাত-সহিংসতা দেখতে চায় না। আমেরিকা বহুবার বলেছে তারা কোনো দলের পক্ষে নয়।
খেয়াল করে দেখবেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি দিল্লিতে সেলফি নিয়ে যা করেছেন, তা কিন্তু আমরা করিনি। ওরা অর্থাৎ আমেরিকা আমাদের পক্ষে আছে, এটা বোঝানোর যে নির্লজ্জ চেষ্টা, তা শেখ হাসিনার দিল্লিতে একটি সেলফিতেই প্রমাণিত হয়েছে। আমরা কিন্তু এমনটা করিনি।
আমরাও মনে করি, বিদেশিরা একটি সরকার পরিবর্তন করতে পারে না। বস্তুর পরিবর্তন বস্তু দিয়েই হয়ে থাকে। আমাদের এখানে যে সমস্যাগুলো রয়েছে, তা আমাদের আন্দোলনের মধ্য দিয়েই অর্জন করতে হবে। তবে এটা ঠিক, আমেরিকার ভিসানীতি, স্যাংশন-এর ফলে আমাদের ওপর যে জগদ্দল পাথরটা অনেকদিন থেকে চেপে ছিল, তা অনেকটাই সরিয়ে দিয়েছে।
যুগান্তর : আন্দোলনের পাশাপাশি নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন?
মান্না : আমরা আপাতত নির্বাচন নিয়ে ভাবছি না। আগে আন্দোলনে জয়ী হই। এরপর নির্বাচন নিয়ে ভাবা যাবে। কারণ, এই সরকার না থাকলে রাজনীতির পুরো চালচিত্র বদলে যাবে। আমাদের সামনে বড় বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার বিষয়টি অপেক্ষা করছে। আমাদের রিজার্ভ তলানিতে। আর কিছুদিন পর যখন ঋণ শোধ করতে হবে, তখন রিজার্ভে কিছুই থাকবে না। এই রিজার্ভ সংকটটা এখন সীমাহীন সংকট। এর বাইরে আমাদের অর্থনৈতিক সংকট তীব্র থেকে আরও তীব্র হচ্ছে। অর্থ পাচার বাড়ছে। খেলাপি ঋণের পরিমাণ বাড়ছে। দুর্নীতি, লুটপাটের কথা না হয় না-ই বললাম। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের জীবনযাপন কঠিন হয়ে গেছে। এরকম আরও অনেক সীমাহীন সংকট মোকাবিলা করতে হবে আমাদের। আমাদের সামনে আরও অনেক বিষয় রয়েছে। এগুলো সংস্কার করা জরুরি। এসব সংকট থেকে উত্তরণের জন্যই সংস্কার জরুরি। ৩ মাসের তত্ত্বাবধায়ক সরকার এসব সংকট মোকাবিলা করতে পারবে না, তাই সময় লাগবে। আমরা বলছি না, কিন্তু সত্যিটা হচ্ছে-এই ৩ মাসের সরকারই ২ বছর বা এরও বেশি সময় নিয়ে এই সংকট মোকাবিলা করবে। এজন্যই তো আমরা বারবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা বলছি।
যুগান্তর : এর মানে আপনারা আরেকটি এক-এগারোর মতো অনির্বাচিত সরকার চান।
মান্না : আওয়ামী লীগ যদি সংবিধান মেনে ক্ষমতা হস্তান্তর করে, যদিও এটার সম্ভাবনা নেই। এরপরও যদি আমরা আন্দোলনে জয়ী হই, তারপর যে সরকারটা আসবে সেটাকে গণতান্ত্রিক বা নির্বাচিত সরকার বলা যাবে না, তবে অবশ্যই এটাকে সাংবিধানিক সরকার বলা যাবে। এই সরকার সময় নিয়ে সংস্কারগুলো করবে।
যুগান্তর : বিএনপির সঙ্গে আপনাদের কোনো দূরত্ব আছে কি না।
মান্না : তা নেই। তবে এটা ঠিক, বিএনপি অভিজ্ঞ। তারা সরকারে ছিল। আমরা ছিলাম না। বিএনপি আশা করে আগামী দিনে আবার ক্ষমতায় তারাই যাবে। ক্ষমতাটা তাদেরই প্রাপ্য। আমরা সেটা আশা করতে পারি না। তাই আমরা মনে করি, আমাদের যেহেতু লড়াইটা করতেই হবে, তাই লড়াইটা করব। এ লড়াইটা বিএনটির সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্কের মাধ্যমে হবে নাকি লড়াইয়ের সম্পর্ক হবে, তা আমরা জানি না। তবে আমরা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখেই লড়াইটা করতে চাই। আমরা ৩১ দফা দিয়েছি। বিএনপি যদি ক্ষমতায় এসে আন্তরিকভাবে এই ৩১ দফা বাস্তবায়নের চেষ্টা করে, তাও আমাদের জন্য বড় পাওয়া হবে। আমরা পরে কী করব, তা বিএনপির আচরণের ওপর নির্ভর করবে। কারণ, আমরা কিন্তু বারবার সংস্কারের কথা বলছি। সংস্কার না হলে কোনো সুফল দেশের মানুষ পাবে না।
যুগান্তর : আপনার বিবেচনায় বাংলাদেশে এ মুহূর্তে বড় সংকট কী।
মান্না : এ মুহূর্তে বড় সংকট সরকারের একগুঁয়েমি। সরকারের ফ্যাসিবাদী নীতি।
যুগান্তর : আগামী দিনে যে সরকার আসবে, তারাও যে একই পথে হাঁটবে না, এর নিশ্চয়তা কী।
মান্না : আশা করতে হবে। মানুষ আশা নিয়ে বাঁচে। নতুন সরকার যদি আওয়ামী লীগের মতো করেই পথ চলে। আওয়ামী লীগকেই অনুসরণ করে বা অতীতের সরকারগুলোকেই অনুসরণ করে, তাহলে এত লড়াই-সংগ্রাম করলাম কেন। তাই আশা করতে হবে। আমরা বারবার এ কারণেই বলছি-সরকার এবং শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন চাই। আমরা শুধু একা নই, গণতন্ত্র মঞ্চের বাকি শরিকরা, এগারো দলসহ যত রাজনৈতিক দল যুগপৎভাবে সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে আন্দোলন করছে, তাদের সবারই একই চাওয়া।
