এন্টি আওয়ামী লীগ ভোট বেশি : চুন্নু
জাতীয় পার্টির মনোনয়ন ফরম বিক্রির শেষ দিন আজ, সকাল ১০টা থেকে প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৪ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপি বলেছেন, দেশে এখন আওয়ামী লীগবিরোধী ভোটের সংখ্যা বেশি। এই ভোটাররা কেন্দ্রে গিয়ে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারলে জাতীয় পার্টি আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে পারে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের যা ভোট আছে, তার চেয়ে অনেক বেশি এন্টি আওয়ামী লীগ ভোট। কেন্দ্রে যদি ভোটার আসতে পারে। তাহলে আমার মনে হয় ৩০০ আসনে আমরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতেও পারি। আর যদি সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পাই, সরকার গঠন করতে পারি-তাহলে আমাদের অনেকেরই দেশ চালানোর যোগ্যতা আছে। আমাদের অনেকে মন্ত্রী ছিলেন, তাদের অভিজ্ঞতা আছে। আমরা দেশে সুশাসন দিতে পারব।
বৃহস্পতিবার বনানীতে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে দলটির মনোনয়ন বিক্রির সময় সাংবাদিকদের এমন আশার কথা জানান পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু। তিনি বলেন, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের আমলে দেশে ওষুধনীতি, উপজেলা পরিষদ প্রবর্তনসহ নানান উন্নয়নমূলক নীতি গ্রহণ করা হয়েছিল। যার সুফল এখনো দেশের মানুষ পাচ্ছে। এখনকার কোনো সরকার নতুন কিছু করেছে বলে দেখি না। গত ৩৩-৩৪ বছরে যারা শাসন করেছে তাদের চেয়ে অনেক ভালো শাসন ছিল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মেয়াদে। তাই আমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী।
নির্বাচনে অংশগ্রহণকে সামনে রেখে ২০ নভেম্বর দলের আগ্রহী প্রার্থীদের মাঝে মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু করে জাতীয় পার্টি। আজ শুক্রবার মনোনয়ন ফরম বিক্রির শেষ দিন। এ পর্যন্ত দেশের ৩০০টি সংসদীয় আসনে ১৭৩৭টি মনোনয়ন ফরম বিতরণ করেছে জাতীয় পাটি। যার মধ্যে গত ২০ নভেম্বর ৫৫৭টি, ২১ নভেম্বর ৬২২টি, ২২ নভেম্বর ৩৩১টি এবং বৃহস্পতিবার ২২৭টি মনোনয়ন ফরম বিতরণ করা হয়েছে। এবার জাতীয় পার্টির মনোনয়ন ফরমের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ হাজার টাকা।
জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আজ শুক্রবার রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হবে। শনিবার খুলনা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগ এবং রোববার ঢাকা, ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রাম বিভাগের সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত সাক্ষাৎকার নেওয়া হবে।
মহাসচিব বলেন, নির্বাচনে জয়ী হতে পারলে জাতীয় পার্টি দেশে বেকারত্ব দূর করবে। দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখবে। সুশাসন দেবে, কর্মমুখী শিক্ষাব্যবস্থা চালু করবে, দুর্নীতি দূর করবে, সবার জন্য সুচিকিৎসা নিশ্চিত করবে। আমরা নির্বাচিত হলে নির্বাচনি ব্যবস্থা পরিবর্তন করে আনুপাতিক হারে নির্বাচনের পদ্ধতি বাস্তবায়ন করব। আমরা চাই নির্বাচনকালীন কেউ অনিয়ম করলে নির্বাচন কমিশন যেন তার বিরুদ্ধে সরাসরি ব্যবস্থা নিতে পারে।
রাজনীতিবিদরা গরু-ছাগলের মতো বিক্রি হচ্ছে, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের উদ্ধৃতি তুলে জাতীয় পার্টি কোনো চাপে পড়ে নির্বাচনে যাচ্ছে কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, যে এখন বলছে, সেও দুই দিন পরে আসে কিনা, তা দেখার বিষয়। এগুলো রাজনৈতিক কথাবার্তা। আমাদের কেউ কেনেনি, টাকা-পয়সাও দেয়নি। দিলে তো ভালো হতো।
তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি একটা বড় দল। তার নিজস্ব রাজনীতি আছে। নিজস্ব কৌশল আছে। কৌশল অনুযায়ী ভোটে যাবে কী যাবে না তা দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো স্বাধীনতা আছে। নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হঠাৎ করে নেইনি। অনেক তর্ক-বিতর্ক করে মিটিং করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, রওশন এরশাদ নির্বাচন করতে চান। তিনি আমাদের শ্রদ্ধার পাত্র। তার সঙ্গে আমার ফোনে কথা হয়েছে। মনোনয়ন ফরম নিতে তার লোক পাঠানোর কথা। কিন্তু কেউ আসেননি। রওশন এরশাদ জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচন করলে তাকে সব ধরনের সহায়তা করা হবে।
মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, জাতীয় পার্টি তিনশ আসনেই নিজস্ব প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবে। কারণ কোনো জোটে যেতে আমরা নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দেইনি। রাজনীতিতে বিভিন্ন কৌশল থাকে। আমরা আমাদের নিজস্ব কৌশল নিয়ে এগিয়ে যাব। আমরা নিরপেক্ষ ভোটের একটি পরিবেশ চেয়েছি। নির্বাচন কমিশন ও সরকারের বিভিন্ন মহল আমাদের আশস্ত করেছে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। তারা বলেছে, যে কোনো মূল্যেই নির্বাচনের পরিবেশ সুষ্ঠু রাখবে। ভোটাররা কেন্দ্রে এসে অবাধে ভোট দিতে পারবেন। এই আশ্বাসের জন্যই আমাদের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণায় দেরি হয়েছে।
মহাসচিব বলেন, তাদের দলে কোনো বিভেদ নেই। জিএম কাদেরের নেতৃত্বে সবাই ঐক্যবদ্ধ। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন যেভাবে শিডিউল ঘোষণা করেছে, তাতে এখনো সংলাপের সুযোগ আছে। সবাই এক টেবিলে বসে আলোচনার মাধ্যমে একটি সিদ্ধান্তে আসতে পারবে।
