উইকিপিডিয়ার ২০ বছরে আলোচিত পাঁচ
অনলাইনের বৃহত্তম মুক্ত বিশ্বকোষ উইকিপিডিয়া প্রতিষ্ঠার ২০ বছর পূর্ণ করেছে। ২০০১ সালের ১৫ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে অনলাইনভিত্তিক বৃহত্তম এ প্ল্যাটফমরটি। দুই মার্কিন উদ্যোক্তা জিমি ওয়েলস ও ল্যারি সেঙ্গারের হাত ধরে যাত্রা শুরু হয় এ তথ্যভান্ডারের। আজকের আয়োজনে উইকিপিডিয়ার ২০ বছরের আলোচিত বিষয়গুলো নিয়ে লিখেছেন-
সাইফ আহমাদ
প্রকাশ: ১৭ জানুয়ারি ২০২১, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
উইকিপিডিয়া ইংরেজি সংস্করণ দিয়ে শুরু হলেও দ্রুতই এর প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে অন্যান্য ভাষায় চালু হতে থাকে অনলাইন এ বিশ্বকোষ। ২০০৪ সালের ২৭ জানুয়ারি বাংলা ভাষায় যাত্রা শুরু করে উইকিপিডিয়া। অনলাইনে জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা ১৫ ওয়েবসাইটের একটি উইকিপিডিয়া। বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত অনলাইননির্ভর জ্ঞানকোষ বা তথ্যভান্ডার হিসাবে ধরা হয় উইকিপিডিয়াকে। প্রতিষ্ঠার মাত্র পাঁচ বছরের মধ্যেই উইকিপিডিয়ার সঠিকতা এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকার সমকক্ষ হয়ে ওঠে।
উইকিপিডিয়া উন্মুক্ত হওয়ায় বিনা খরচে যে কেউ পড়তে ও লিখতে পারবেন। যে কেউ চাইলেই তার নিজ ভাষায় লিখতে পারেন এখানে। ‘সবচেয়ে বড় তথ্যভান্ডার’ হয়ে ওঠার অন্যতম কারণ সবাইকে এখানে প্রবেশাধিকার দেয় উইকিপিডিয়া। পৃথিবীজুড়ে এমন অনেক ব্যক্তি ও বিষয় আছে, যেগুলোর ব্যাপারে সাধারণের অতিভক্তি কিংবা বিরূপ মনোভাব রয়েছে। এসব বিষয়ে সবাইকে লেখা বা সম্পাদনার সুযোগ করে দেওয়া উইকিপিডিয়ার জন্য অন্যতম চ্যালেঞ্জ। কেননা, কেউ যদি একজনকে অপছন্দ করে, তাহলে তার ব্যাপারে ভালো কিছু লিখবে না। এটা সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতা নীতির লঙ্ঘন। পাশাপাশি আলোচিত, সবচেয়ে বেশি পঠিত এবং বারংবার সম্পাদিত পাঁচটি বিষয়বস্তু বা পেজের তালিকা একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এসব পেজের মধ্যে এমনও পেজ আছে যেটি বিতর্কের কারণে মুছে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
এ ধরনের ৫টি পেজ:
জর্জ বুশ
উইকিপিডিয়ার জন্ম ২০০১ সালের ১৫ জানুয়ারি। এর ঠিক ৫ দিন পর আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে শপথ নিলেন জর্জ বুশ। তার নামেও তৈরি হলো উইকি পেজ। আর জটিলতার শুরু সেখানেই। উইকিপিডিয়ার খোলামেলা পলিসির কারণে জর্জ বুশ সম্পর্কে একাধিক ভুল তথ্য ঢুকে গেল পেজে। বিশেষ করে গালফ ওয়ার সম্পর্কে তো গুজবের বন্যা বয়ে যায়।
কোভিড-১৯ পেনডামিক
বিশ্বের ইতিহাসে এত বেশি গুজব আগে কখনো ছড়ায়নি। আর সেই গুজবের প্রভাব পড়তে শুরু করে উইকিপিডিয়া পেজেও। এমনকি এমন কোনো মহামারির অস্তিত্ব নেই বলেও দাবি করেন অনেকে। তবে উইকিপিডিয়ার সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসকরা পরিস্থিতি সামাল দেন। ২০২০ সালের মে মাস থেকে আর যে কেউ এ পেজ এডিট করতে পারেন না। আজও সেই নিয়ন্ত্রণ চালু আছে।
গ্ল্যাডিস মে ওয়েস্ট
প্ল্যাটফমরটিতে ব্যাপক জনপ্রিয় অথচ বিতর্কিত পেজ ‘গ্ল্যাডি ওয়েস্ট’। গ্ল্যাডি ওয়েস্ট জিপিএস ব্যবস্থা সম্পর্কে গবেষণার একজন পথিকৃৎ। একে তো কৃষ্ণাঙ্গ মহিলা। আর এ বর্ণবিদ্বেষী সমাজে বারবার আক্রমণের মুখে পড়েছে ‘গ্ল্যাডি ওয়েস্ট’ পেজটি। অবশ্য এর পরও পেজটিকে রক্ষা করে চলেছেন উদ্যোক্তারা।
লিস্ট অব ডব্লিউডব্লিউ পার্সোনেল
ডব্লিউডব্লিউই খেলার রেসলারদের তালিকা বেশ গোলমেলে। বর্তমানে এটিই সবচেয়ে বেশিবার এডিট হওয়া উইকি পেজ। জর্জ বুশের পেজের থেকেও বেশিবার এডিট হয়েছে এটি। জানা যায়, অনেকেই নাকি নিজেদের রেসলার বলে পরিচয় দিয়ে তালিকায় নাম তুলে নিতে চান।
ইনহেরেন্টলি ফানি ওয়ার্ডস
‘ফানি ওয়ার্ডস’ নামের এ তালিকা তৈরি করে বেশ বিব্রত হয়েছিলেন উদ্যোক্তারা। কোন শব্দ মজাদার, তা মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির ওপর নির্ভর করে। সত্যিই কি এর কোনো মাপকাঠি হয়? একসময় তো পেজটি সরিয়ে নেওয়ার কথাও ভাবা হয়েছিল। যদিও এখনো বহাল তবিয়তে টিকে রয়েছে পেজটি। নানা দেশের ভাষাবিদদের সাহায্যে তৈরি হয়েছে মাপকাঠিও। বর্তমানে পেজটিকে রীতিমতো একটি গবেষণার ফসল বলা চলে।
একনজরে উইকিপিডিয়া
* বর্তমানে তিন শতাধিক ভাষার উইকিপিডিয়া রয়েছে।
* প্রায় পাঁচ কোটি ৩০ লাখ নিবন্ধ রয়েছে।
* প্রতি মাসে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা ১৫০ কোটিরও বেশি মানুষ স্বতন্ত্র ডিভাইসের মাধ্যমে উইকিপিডিয়া থেকে তথ্য আহরণ করে থাকেন।
* বিশ্বের যে কেউ স্বেচ্ছাসেবার ভিত্তিতে অবদান রাখতে পারেন অনলাইনের বৃহত্তম এ জ্ঞানের মাধ্যমে।
জীবনী, বিজ্ঞান, চলচ্চিত্র, ইতিহাসসহ জ্ঞান-বিজ্ঞানের সব শাখা সম্পর্কেই তথ্য রয়েছে এখানে। ইন্টারনেট সংযোগ আছে এমন যে কেউ যে কোনো স্থান থেকে এ তথ্য আহরণ করতে পারেন, একইসঙ্গে অবদানও রাখতে পারেন। নির্ভরযোগ্যতা বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যসূত্রের ভিত্তিতে নিবন্ধ তৈরি করা হয় উইকিপিডিয়ায়।
