Logo
Logo
×

আইটি বিশ্ব

প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় অনন্য মেট্রোরেল

Icon

সাইফ আহমাদ

প্রকাশ: ২৮ ডিসেম্বর ২০২২, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় অনন্য মেট্রোরেল

মেট্রোরেল যুগে প্রবেশ করল বাংলাদেশ। সম্পূর্ণ প্রযুক্তিনির্ভর দেশের প্রথম মেট্রোরেল চালু হয়েছে। বিদ্যুৎচালিত এ ট্রেনের চলাচল হবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে। কীভাবে চলবে মেট্রোরেল, প্রযুক্তিগত কী চমক আছে? বিদ্যুৎ না থাকলে কী হবে? জনমনে ঘুরপাক খাচ্ছে এমন নানা প্রশ্ন। আজকের আয়োজনে মেট্রোরেলের প্রযুক্তিগত বিষয়

বিস্তারিত লিখেছেন-সাইফ আহমাদ

গতকাল উত্তরার দিয়াবাড়ী থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার অংশের উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাজধানীকে যানজটমুক্ত রাখতে এ রেল চলবে ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার গতিতে। মাত্র ২০ মিনিটে পাড়ি দেবে ১০ কিলোমিটার পথ। দিয়াবাড়ী থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেলের চলাচল শুরু হবে আজ।

অটোমেটিক স্টপ কন্ট্রোল

ট্রেন অটোমেটিক স্টপ কন্ট্রোলের মাধ্যমে কোথায়, কখন থামাতে হবে সেটি নির্ধারিত হবে এবং এসব প্রযুক্তি ব্যবহার করার কারণে চালকের বেশি কিছু করার থাকবে না। প্রোগ্রাম রুট কন্ট্রোলার সিস্টেমের মাধ্যমে ট্রেনের রুটগুলো নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এসব উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করার ফলে মেট্রোরেল পরিচালনা খুবই সহজতর হয়েছে।

ডিজিটাল টিকিট

মেট্রোরেলের টিকিট পুরোপুরিই কম্পিউটারাইজড। স্টেশনের মূল প্লাটফরমে ঢোকা ও বের হওয়ার মুখের দরজা খুলতে ব্যবহার করতে হবে চিপযুক্ত টিকিট। স্টেশনে যাত্রীদের তাৎক্ষণিক টিকিট কাটার ব্যবস্থার পাশাপাশি সাপ্তাহিক ও মাসিক টিকিটও মিলবে বিশেষ মেশিনে। এ প্রযুক্তি তৈরি করছে সনি কোম্পানি। নির্দিষ্ট একটি কার্ড কিনে সেই কার্ডের মাধ্যমে পাঞ্চ করে টিকিট সংগ্রহ করতে হবে মেট্রোরেলে চলার জন্য। সেই কার্ড আবার পাঞ্চ করেই রেল থেকে বের হতে পারবেন যাত্রীরা।

বিদ্যুৎ বিপর্যয়েও বন্ধ হবে না

এ ট্রেন চলাচলের জন্য নিজস্ব বিদ্যুৎ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এর জন্য উত্তরার ডিপোয় সাবস্টেশন স্থাপন করা হয়েছে। মতিঝিলে আরেকটি স্থাপনের কাজ চলছে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, প্রতিটি সাবস্টেশনে দুটি ট্রান্সফরমার থাকবে। একটি বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে এবং অন্যটি জরুরি প্রয়োজনে চালু হবে। অর্থাৎ কোথাও বিদ্যুৎবিভ্রাট হলেও ট্রেন চলাচল বন্ধ হবে না। জাতীয় গ্রিড বিপর্যয় হলেও ব্যাটারির মাধ্যমে চলমান ট্রেনগুলো নিকটবর্তী স্টেশনে পৌঁছাতে পারবে।

সার্বক্ষণিক মনিটরিং

প্রতিটি স্টেশনে কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত ঘোষণার মাধ্যমে যাত্রীদের জন্য থাকবে দিকনির্দেশনা। স্টেশনে ও ট্রেনের ভেতরে ক্লোজসার্কিট ক্যামেরার মাধ্যমে চলবে সার্বক্ষণিক মনিটরিং।

স্টেশনে তাক লাগানো প্রযুক্তি

মেট্রোরেলে যাত্রী নিরাপত্তায় থাকছে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি। স্টেশনে ঢোকার পর থেকে প্রতিটি ধাপে অত্যাধুনিক স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তির সহায়তায় সহজতর হবে যাত্রাপথ। ঢাকায় মেট্রোর প্রতিটি স্টেশনে রয়েছে চলন্ত সিঁড়ি। এর পর প্লাটফরমের নির্দিষ্ট পয়েন্টে আছে স্বয়ংক্রিয় দরজা। ট্রেন আসার সঙ্গে সঙ্গে খুলে যাবে এ দরজা। এটি নিয়ন্ত্রণের সফটওয়্যার তৈরি করেছে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান নিপ্পন। ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বাংলাদেশের প্রথম উড়াল মেট্রোরেলের নিয়ন্ত্রণ ও যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কমিউনিকেশন বেজড ট্রেন কন্ট্রোল সিস্টেম (সিবিটিসি) অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। থাকছে অটোমেটিক ট্রেন অপারেশন (এটিও), অটোমেটিক ট্রেন প্রটেকশন (এটিপি), অটোমেটিক ট্রেন সুপারভিশন (এটিএস) ও মুভিং ব্লক সিস্টেম (এমবিএস)।

এ ছাড়া আপৎকালীন পরিস্থিতিতে মেট্রোরেল স্টেশন থেকে বের হতে জরুরি বহির্গমন পথ রয়েছে। স্টেশন ও ট্রেনে রাখা হয়েছে স্বয়ংক্রিয় অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা। মেট্রোরেলের পুরো লাইনজুড়ে আছে ‘নয়েজ ব্যারিয়ার ওয়াল।’ এটি টেন চলাচলের সময় শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে রাখবে।

প্রযুক্তি মেট্রোরেল

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম