প্রতিশ্রুতির ৭০ ভাগ বাস্তবায়ন করেছি: যুগান্তরের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে কিশোরগঞ্জ পৌর মেয়র

ময়লা-আবর্জনা অপসারণ ও যানজট নিরসনে ব্যর্থতা আছে
 এটিএম নিজাম, কিশোরগঞ্জ ব্যুরো 
১৯ আগস্ট ২০১৯, ১২:০০ এএম  |  প্রিন্ট সংস্করণ
প্রতিশ্রুতির ৭০ ভাগ বাস্তবায়ন করেছি: যুগান্তরের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে কিশোরগঞ্জ পৌর মেয়র
ছবি: যুগান্তর

নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালনে নিজের সফলতা ও ব্যর্থতার কথা জানিয়েছেন কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মাহমুদ পারভেজ। তিনি বলেছেন, প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে ৭০ ভাগ সফল হয়েছি। বাকিটা মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই শেষ করব।

অতিসম্প্রতি যুগান্তরের মুখোমুখী হন আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচিত হওয়া এই মেয়র। এ সময় তিনি বলেন, পৌরসভার সামগ্রিক উন্নয়নে কোনো মাস্টারপ্ল্যান ছিল না। নগর পরিকল্পনাবিদদের সহায়তায় ইতিমধ্যেই ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নে কাজ করছি। এই কাজ শেষ হলে পৌর এলাকায় জলাবদ্ধতা থাকবে না। এছাড়া প্রধান সড়কগুলোর উন্নয়ন ও সংস্কার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। পৌর এলাকার সব শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত নগর উন্নয়ন কমিটি (ইউজিআইআইপি) অনুমোদন নিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়। ইতিমধ্যে বহুতল মার্কেট নির্মাণে ১৫ কোটি, ওয়াটার সাপ্লাইয়ে ৫ কোটি, সড়ক ও ড্রেন উন্নয়নে ৪৫ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ হয়েছে। এসব কাজের ফল নগরবাসী পাচ্ছেন। এছাড়া ময়লা, আবর্জনা ও বর্জ্যরে জন্য শহরের নতুন জেলখানার কাছে খিলপাড়া এলাকায় ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘ডাম্পিং গ্রাউন্ড’-এর জন্য জমি অধিগ্রহণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এটি একটি বড় সাফল্য। তবে শহর ময়লা-আবর্জনামুক্ত করার কাজ যেভাবে এগোচ্ছে তা সন্তোষজনক নয়। এ ব্যাপারে পৌরবাসীকে সচেতন করার জন্য নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচিত এই মেয়র আরও বলেন, ‘ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় শহর সয়লাব। এ কারণে শহরের ব্যস্ততম এলাকাগুলোয় প্রায়ই তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। যে কারণে ভোগান্তিতে পড়ে পৌরবাসী। অনেক চেষ্টা করেও যানজট কমানো যায়নি। তবে এ সমস্যার স্থায়ী সমাধানের পথ খোঁজা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘আমার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিগুলোর মধ্যে অগ্রাধিকার ছিল রাস্তাঘাট উন্নয়ন ও জলাবদ্ধতা নিরসন। এ প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে পেরেছি। তবে শহর যানজটমুক্ত করতে পারিনি। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কারের কাজ সন্তোষজনক না। তবে এ দুটি সমস্যা সমাধানে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি। শুধু তা-ই নয়, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী যেসব কাজ করতে পরিনি, সেসবের তালিকা তৈরি করেছি। আগামী নির্বাচনের আগে এগুলো সমাপ্ত করব।’

পৌরসভায় বিভিন্ন কাজে ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি নিজে ঘুষ ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নই। পৌরসভার কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের প্রমাণ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেব।’

খাল ও খাস জমি দখল প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নেয়ার পর কোনো খাল কিংবা খাস জমি দখলের ঘটনা ঘটেনি। বরং বেশ কয়েকটি ব্যক্তি মালিকানাধীন জলাধার ভরাটের উদ্যোগ কঠোর হস্তে প্রতিহত করেছি।’

সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, মাদক ও যৌন হয়রানির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এগুলো সামাজিক ব্যধি। এসব প্রতিরোধের সামাজিক আন্দোলন অব্যাহত আছে। এ ব্যপারে সফলতা পাচ্ছি।’

এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ‘পৌরবাসীর কাছ থেকে আদায় করা করের অর্থ ময়লা-আবর্জনা অপসারণ, বিদ্যুতায়ন, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন এবং সমাজকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করা হয়। পৌরসভা একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে। এই প্রতিষ্ঠানের ব্যয়ভারও বহন করে পৌরসভা। এছাড়া পৌরসভার তত্ত্বাবধানে বেসরকারি সংস্থার সহায়তায় ২টি নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং ১টি হাসপাতাল পরিচালিত হচ্ছে।’

মেয়র জানান, পৌরসভার মানোন্নয়নে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে যানবাহনের স্ট্যান্ড নির্মাণ, রাস্তাঘাটের প্রশস্ততা বৃদ্ধি, বিল্ডিং কোড অনুযায়ী ইমারত নির্মাণ ইত্যাদি।

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন