আধুনিক পৌরসভা গড়তে কাজ করছি: কুড়িগ্রাম পৌরসভার মেয়র
jugantor
যুগান্তরের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকার
আধুনিক পৌরসভা গড়তে কাজ করছি: কুড়িগ্রাম পৌরসভার মেয়র

  আহসান হাবীব নীলু, কুড়িগ্রাম  

২৭ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০:০০  |  প্রিন্ট সংস্করণ

আবদুল জলিল

১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে কুড়িগ্রাম পৌরসভার যাত্রা শুরু। ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত ২৭ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই পৌরসভার অবস্থান ধরলা নদীর কোলঘেঁষে।

পৌরসভার লোকসংখ্যা ১ লাখ ৮০ হাজার। এর মধ্যে ভোটার প্রায় ৫৮ হাজার। পৌরসভাটি ২০০৬ সালে প্রথম শ্রেণির মর্যাদালাভ করে। ২০১৬ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে বিপুল ভোটে মেয়র নির্বাচিত হন আবদুল জলিল। দায়িত্ব নিয়ে উন্নয়নমূলক অনেক প্রকল্প হাতে নিয়েছেন তিনি। এর মধ্যে কিছু বাস্তবায়ন হয়েছে। কিছু চলমান আছে।

র্তমান মেয়র পৌরসভার ঋণ পরিশোধের পাশাপাশি পৌরবাসীর সেবার মান বাড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন। দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরেছেন। প্রকল্প বাস্তবায়নে এনেছেন স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা। তবে নির্বাচনের সময় দেয়া প্রতিশ্রুতির অনেকটাই বাস্তবায়ন হয়নি।

বর্তমানে পৌরসভায় যেসব সমস্যা রয়েছে তা হল- বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করতে না পারা, রাস্তার অবস্থা বেহাল, ড্রেনেজ ব্যবস্থার ত্রুটি, ময়লা-আবর্জনা রাখার জন্য ‘ডাম্পিং গ্রাউন্ড’ নেই। এছাড়া আছে যানজট। বিদ্যুতের লো-ভোল্টেজের কারণে শহরবাসীকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

কুড়িগ্রাম দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি একেএম সামিউল হক নান্টুর অভিযোগ- কুড়িগ্রাম পৌরসভা নামেই প্রথম শ্রেণির। সেবার ক্ষেত্রে একেবারেই ঠন ঠন। পৌরসভার ভেতর চলাচলের জন্য উপযুক্ত কোনো রাস্তা নেই। রাস্তা খানাখন্দে ভরা। রাস্তার ওপর ময়লা-আবর্জনা স্তূপ হয়ে থাকে।

চরম পানি সংকটে ভুগছে পৌরবাসী। পর্যাপ্ত সড়কবাতি নেই। জলাবদ্ধতার কারণে শহরের প্রধান পাইকারি বাজারে (জিয়াবাজার) মানুষ স্বাভাবিকভাবে সওদা করতে যেতে পারে না। পানি নিষ্কাশনের প্রয়োজনীয় ড্রেনেজ ব্যবস্থা নেই। অল্প বৃষ্টিতে শহরের বিভিন্ন স্থানে পানি জমে।

এসব অভিযোগের জবাব দিতে যুগান্তরের মুখোমুখী হয়েছিলেন মেয়র আবদুল জলিল। তিনি বলেন, ‘দায়িত্ব নেয়ার পর পৌরসভা তথা পৌরবাসীর উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। অনেক সমস্যার সমাধান করেছি। তারপরও ঢালাও অভিযোগ শুনতে পাই। এসব অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই।’

তিনি বলেন, ‘নানা প্রতিকূল পরিবেশে মেয়রের দায়িত্ব নিয়েছি। পৌরসভার ঋণের বোঝা ছিল পাহাড়সমান। তা পর্যায়ক্রমে কমিয়ে এনেছি। প্রায় কোটি টাকার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া ছিল। নিজেদের আয় সীমিত। প্রতিমাসে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন এবং আনুষঙ্গিক ব্যয় নির্বাহ করতে প্রয়োজন হয় প্রায় ৩০ লাখ টাকা।

পৌরবাসীর পানির চাহিদার মাত্র চার ভাগের এক ভাগ উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে। কাজেই সংকট আছে। তবে রেশনিং পদ্ধতিতে সব ফিডারে পানি সরবরাহ করছি। ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের কাজ শেষ পর্যায়ে। চলতি বছরই এটি চালু হবে। এতে পানির সংকট থাকবে না। তবে এ কথা সত্য- মানুষ সচেতন নন।

শুধু সেবা চান। নিজেদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেন না। পৌরকর পরিশোধ, পানির বিল পরিশোধ সময়মতো করছেন না। শুধু পানির বিল বকেয়া রয়েছে প্রায় ৩০ লাখ টাকা। বকেয়া পৌরকরের পরিমাণ প্রায় কোটি টাকা।

বাসা-বাড়ির এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ময়লা-আবর্জনা যত্রতত্র এমনকি ড্রেনের মধ্যে ফেলা হচ্ছে। ফলে নানা জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে। অকেজো হয়ে পড়ছে ড্রেনেজ ব্যবস্থা। মাইকিং করেও এসব ধমানো যাচ্ছে না।’

মেয়র বলেন, ‘ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য ‘ডাম্পিং গ্রাউন্ড’ নেই। প্রশাসনের কাছে জমি বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলে এ সমস্যার সমাধান হবে।’

বেহাল রাস্তাঘাটের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘৮-১০ বছর রাস্তা সংস্কার না হওয়ায় সব দায় আমার ওপর এসে পড়েছে। তবে আশার কথা হল, ৫ কিমি. পাকা রাস্তার কাজ চলমান আছে। আরও ১৫ কিমি. পাকা রাস্তা সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

এসবের টেন্ডার প্রক্রিয়াও সম্পন্ন হয়েছে। এক কিলোমিটার নতুন ড্রেন নির্মাণের কাজ চলছে। শহরে রোড-লাইট অফিসিয়ালি রয়েছে এক হাজার চার শ। লোভোল্টেজ ও বজ পাতের কারণে লাইট নষ্ট হয়ে যায়। এসব মাথায় রেখে সড়কবাতি সবসময়ের জন্য সচল রাখার চেষ্টা চলছে।’

যানজটের কথা স্বীকার করে আবদুল জলিল বলেন, ‘রাস্তায় যানবাহনের সংখ্যা অনেক বেশি। কিন্তু পৌরসভার রাস্তা প্রসস্ত নয়। শহরের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত প্রধান তিনটি রাস্তা সড়ক বিভাগের। তাদের অসহযোগিতায় যানজট দূর করা যাচ্ছে না। এছাড়া দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাসের কোনো স্ট্যান্ড নেই। রাস্তার ওপর যাত্রী ওঠানামা করায় যানজটের সৃষ্টি হয়।’

মেয়র বলেন, ‘পৌরসভার ৬টি গোরস্থানের সংস্কার ও আধুনিকায়নের কাজ চলছে। সৌর বিদ্যুতায়নের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শহরের সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য নেয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। ঘোড়া চত্বর, দোয়েল চত্বর, বক চত্বর নির্মাণসহ দৃশ্যমান অনেক উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে। পৌরসভাকে দুর্নীতিমুক্ত করেছি।

স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার মধ্য দিয়ে চলছে সব কাজ। ই-টেন্ডারিং পদ্ধতিতে কাজ দেয়া হয়। আগে একটি সিন্ডিকেটের হাতে পৌরসভা জিম্মি ছিল। এখন পৌরসভার ১১৩ জন তালিকাভুক্ত ঠিকাদার প্রতিযোগিতামূলক পদ্ধতিতে দরপত্রে অংশ নিচ্ছেন। প্রতিবছর পৌর বাজেট নাগরিকদের উপস্থিতিতে ঘোষণা করা হয়।’

মেয়র আরও বলেন, ‘চলতি মেয়াদে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- ধরলা ব্রিজের পূর্বপ্রান্তে ২১ একর জমিতে ‘শেখ রাসেল শিশু পার্ক’ নির্মাণ প্রকল্প। ২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী কুড়িগ্রামের একটি জনসভায় জেলার ২২ লাখ মানুষের বিনোদনের জন্য এই পার্ক নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন।

জেলা প্রশাসক জমি হস্তান্তর করলেই নির্মাণকাজ শুরু হবে। এই পার্কের মধ্যে পিকনিক স্পট, শিশুদের জন্য বিভিন্ন রাইড এবং রিসোর্ট থাকবে। এছাড়া ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে কলেজ মোড় এলাকায় নির্মিত একটি আধুনিক অডিটোরিয়াম হল উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। এটি পৌর কর্তৃপক্ষের একটি বড় সফলতা।

প্রায় ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে পৌর ভবনের কাছে নির্মাণ করা হচ্ছে একটি মিনি অডিটোরিয়াম। এ দুটি অডিটোরিয়াম চালু হলে এ জেলা শহরে সংস্কৃতির বিকাশ ঘটবে। ফিরে আসবে একটি সুন্দর পরিবেশ। এক কোটি টাকা ব্যয়ে শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত প্রধান পাইকারী বাজারের সংস্কার ও নতুন ভবন নির্মাণে কাজ চলমান আছে।’

মেয়র আবদুল জলিল বলেন, পৌরবাসীর স্বপ্নের আধুনিক কুড়িগ্রাম পৌরসভা গড়ার কাজ চলছে। আশা করছি চলতি মেয়াদেই প্রত্যাশিত আধুনিক পৌরসভা উপহার দিতে পারব।

যুগান্তরের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকার

আধুনিক পৌরসভা গড়তে কাজ করছি: কুড়িগ্রাম পৌরসভার মেয়র

 আহসান হাবীব নীলু, কুড়িগ্রাম 
২৭ আগস্ট ২০১৯, ১২:০০ এএম  |  প্রিন্ট সংস্করণ
আবদুল জলিল
মেয়র আবদুল জলিল

১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে কুড়িগ্রাম পৌরসভার যাত্রা শুরু। ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত ২৭ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই পৌরসভার অবস্থান ধরলা নদীর কোলঘেঁষে।

পৌরসভার লোকসংখ্যা ১ লাখ ৮০ হাজার। এর মধ্যে ভোটার প্রায় ৫৮ হাজার। পৌরসভাটি ২০০৬ সালে প্রথম শ্রেণির মর্যাদালাভ করে। ২০১৬ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে বিপুল ভোটে মেয়র নির্বাচিত হন আবদুল জলিল। দায়িত্ব নিয়ে উন্নয়নমূলক অনেক প্রকল্প হাতে নিয়েছেন তিনি। এর মধ্যে কিছু বাস্তবায়ন হয়েছে। কিছু চলমান আছে।

র্তমান মেয়র পৌরসভার ঋণ পরিশোধের পাশাপাশি পৌরবাসীর সেবার মান বাড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন। দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরেছেন। প্রকল্প বাস্তবায়নে এনেছেন স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা। তবে নির্বাচনের সময় দেয়া প্রতিশ্রুতির অনেকটাই বাস্তবায়ন হয়নি।

বর্তমানে পৌরসভায় যেসব সমস্যা রয়েছে তা হল- বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করতে না পারা, রাস্তার অবস্থা বেহাল, ড্রেনেজ ব্যবস্থার ত্রুটি, ময়লা-আবর্জনা রাখার জন্য ‘ডাম্পিং গ্রাউন্ড’ নেই। এছাড়া আছে যানজট। বিদ্যুতের লো-ভোল্টেজের কারণে শহরবাসীকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

কুড়িগ্রাম দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি একেএম সামিউল হক নান্টুর অভিযোগ- কুড়িগ্রাম পৌরসভা নামেই প্রথম শ্রেণির। সেবার ক্ষেত্রে একেবারেই ঠন ঠন। পৌরসভার ভেতর চলাচলের জন্য উপযুক্ত কোনো রাস্তা নেই। রাস্তা খানাখন্দে ভরা। রাস্তার ওপর ময়লা-আবর্জনা স্তূপ হয়ে থাকে।

চরম পানি সংকটে ভুগছে পৌরবাসী। পর্যাপ্ত সড়কবাতি নেই। জলাবদ্ধতার কারণে শহরের প্রধান পাইকারি বাজারে (জিয়াবাজার) মানুষ স্বাভাবিকভাবে সওদা করতে যেতে পারে না। পানি নিষ্কাশনের প্রয়োজনীয় ড্রেনেজ ব্যবস্থা নেই। অল্প বৃষ্টিতে শহরের বিভিন্ন স্থানে পানি জমে।

এসব অভিযোগের জবাব দিতে যুগান্তরের মুখোমুখী হয়েছিলেন মেয়র আবদুল জলিল। তিনি বলেন, ‘দায়িত্ব নেয়ার পর পৌরসভা তথা পৌরবাসীর উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। অনেক সমস্যার সমাধান করেছি। তারপরও ঢালাও অভিযোগ শুনতে পাই। এসব অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই।’

তিনি বলেন, ‘নানা প্রতিকূল পরিবেশে মেয়রের দায়িত্ব নিয়েছি। পৌরসভার ঋণের বোঝা ছিল পাহাড়সমান। তা পর্যায়ক্রমে কমিয়ে এনেছি। প্রায় কোটি টাকার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া ছিল। নিজেদের আয় সীমিত। প্রতিমাসে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন এবং আনুষঙ্গিক ব্যয় নির্বাহ করতে প্রয়োজন হয় প্রায় ৩০ লাখ টাকা।

পৌরবাসীর পানির চাহিদার মাত্র চার ভাগের এক ভাগ উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে। কাজেই সংকট আছে। তবে রেশনিং পদ্ধতিতে সব ফিডারে পানি সরবরাহ করছি। ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের কাজ শেষ পর্যায়ে। চলতি বছরই এটি চালু হবে। এতে পানির সংকট থাকবে না। তবে এ কথা সত্য- মানুষ সচেতন নন।

শুধু সেবা চান। নিজেদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেন না। পৌরকর পরিশোধ, পানির বিল পরিশোধ সময়মতো করছেন না। শুধু পানির বিল বকেয়া রয়েছে প্রায় ৩০ লাখ টাকা। বকেয়া পৌরকরের পরিমাণ প্রায় কোটি টাকা।

বাসা-বাড়ির এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ময়লা-আবর্জনা যত্রতত্র এমনকি ড্রেনের মধ্যে ফেলা হচ্ছে। ফলে নানা জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে। অকেজো হয়ে পড়ছে ড্রেনেজ ব্যবস্থা। মাইকিং করেও এসব ধমানো যাচ্ছে না।’

মেয়র বলেন, ‘ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য ‘ডাম্পিং গ্রাউন্ড’ নেই। প্রশাসনের কাছে জমি বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলে এ সমস্যার সমাধান হবে।’

বেহাল রাস্তাঘাটের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘৮-১০ বছর রাস্তা সংস্কার না হওয়ায় সব দায় আমার ওপর এসে পড়েছে। তবে আশার কথা হল, ৫ কিমি. পাকা রাস্তার কাজ চলমান আছে। আরও ১৫ কিমি. পাকা রাস্তা সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

এসবের টেন্ডার প্রক্রিয়াও সম্পন্ন হয়েছে। এক কিলোমিটার নতুন ড্রেন নির্মাণের কাজ চলছে। শহরে রোড-লাইট অফিসিয়ালি রয়েছে এক হাজার চার শ। লোভোল্টেজ ও বজ পাতের কারণে লাইট নষ্ট হয়ে যায়। এসব মাথায় রেখে সড়কবাতি সবসময়ের জন্য সচল রাখার চেষ্টা চলছে।’

যানজটের কথা স্বীকার করে আবদুল জলিল বলেন, ‘রাস্তায় যানবাহনের সংখ্যা অনেক বেশি। কিন্তু পৌরসভার রাস্তা প্রসস্ত নয়। শহরের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত প্রধান তিনটি রাস্তা সড়ক বিভাগের। তাদের অসহযোগিতায় যানজট দূর করা যাচ্ছে না। এছাড়া দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাসের কোনো স্ট্যান্ড নেই। রাস্তার ওপর যাত্রী ওঠানামা করায় যানজটের সৃষ্টি হয়।’

মেয়র বলেন, ‘পৌরসভার ৬টি গোরস্থানের সংস্কার ও আধুনিকায়নের কাজ চলছে। সৌর বিদ্যুতায়নের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শহরের সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য নেয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। ঘোড়া চত্বর, দোয়েল চত্বর, বক চত্বর নির্মাণসহ দৃশ্যমান অনেক উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে। পৌরসভাকে দুর্নীতিমুক্ত করেছি।

স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার মধ্য দিয়ে চলছে সব কাজ। ই-টেন্ডারিং পদ্ধতিতে কাজ দেয়া হয়। আগে একটি সিন্ডিকেটের হাতে পৌরসভা জিম্মি ছিল। এখন পৌরসভার ১১৩ জন তালিকাভুক্ত ঠিকাদার প্রতিযোগিতামূলক পদ্ধতিতে দরপত্রে অংশ নিচ্ছেন। প্রতিবছর পৌর বাজেট নাগরিকদের উপস্থিতিতে ঘোষণা করা হয়।’

মেয়র আরও বলেন, ‘চলতি মেয়াদে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- ধরলা ব্রিজের পূর্বপ্রান্তে ২১ একর জমিতে ‘শেখ রাসেল শিশু পার্ক’ নির্মাণ প্রকল্প। ২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী কুড়িগ্রামের একটি জনসভায় জেলার ২২ লাখ মানুষের বিনোদনের জন্য এই পার্ক নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন।

জেলা প্রশাসক জমি হস্তান্তর করলেই নির্মাণকাজ শুরু হবে। এই পার্কের মধ্যে পিকনিক স্পট, শিশুদের জন্য বিভিন্ন রাইড এবং রিসোর্ট থাকবে। এছাড়া ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে কলেজ মোড় এলাকায় নির্মিত একটি আধুনিক অডিটোরিয়াম হল উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। এটি পৌর কর্তৃপক্ষের একটি বড় সফলতা।

প্রায় ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে পৌর ভবনের কাছে নির্মাণ করা হচ্ছে একটি মিনি অডিটোরিয়াম। এ দুটি অডিটোরিয়াম চালু হলে এ জেলা শহরে সংস্কৃতির বিকাশ ঘটবে। ফিরে আসবে একটি সুন্দর পরিবেশ। এক কোটি টাকা ব্যয়ে শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত প্রধান পাইকারী বাজারের সংস্কার ও নতুন ভবন নির্মাণে কাজ চলমান আছে।’

মেয়র আবদুল জলিল বলেন, পৌরবাসীর স্বপ্নের আধুনিক কুড়িগ্রাম পৌরসভা গড়ার কাজ চলছে। আশা করছি চলতি মেয়াদেই প্রত্যাশিত আধুনিক পৌরসভা উপহার দিতে পারব।

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন