ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাবরেজিস্ট্রি অফিস: ‘কোটিপতি’ পিয়ন ইয়াছিন অবশেষে গ্রেফতার
jugantor
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাবরেজিস্ট্রি অফিস: ‘কোটিপতি’ পিয়ন ইয়াছিন অবশেষে গ্রেফতার
দুদকে অভিযোগ * ৫ কোটি ৭৭ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

  ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি  

০৭ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০:০০  |  প্রিন্ট সংস্করণ

আলোচিত কোটিপতি ইয়াসিন

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা সাবরেজিস্ট্রি অফিসের ‘কোটিপতি’ পিয়ন ইয়াছিন মিয়াকে (৪২) অবশেষে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার ভোরে সদর থানা এলাকা থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।

সাবরেজিস্ট্রি অফিসে অডিট কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর ইয়াছিন তৃতীয় স্ত্রীকে নিয়ে গা-ঢাকা দিয়েছিল। সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন জানান, জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ইয়াছিনকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

বাঞ্ছারামপুর উপজেলার আতুয়াকান্দি গ্রামের মোহন মিয়ার ছেলে ইয়াছিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ- সোনালী ব্যাংকের ভুয়া চালানের মাধ্যমে জালিয়াতি করে তিনি পাঁচ কোটি ৭৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এ অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় চট্টগ্রাম রেজিস্ট্রার অফিসের বিভাগীয় পরিদর্শক নৃপেন্দ্র নাথ শিকদার অভিযোগ করেন।

২৬ নভেম্বর থেকে সাবরেজিস্ট্রি অফিসের অডিট কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর অফিস সহায়ক (পিয়ন) ইয়াছিনের কোটি টাকার ঘাপলা বেরিয়ে আসতে থাকে। অডিট কার্যক্রম শুরু হলে তিনি গা-ঢাকা দেন। ২৯ নভেম্বর রাতে ইয়াছিনের বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর সাবরেজিস্ট্রার মোস্তাফিজুর রহমান থানায় লিখিত অভিযোগ (জিডি) করেন।

জিডি হওয়ার পর ইয়াছিনের খোঁজে মাঠে নামে পুলিশ। তার তিন স্ত্রীর মধ্যে দু’জনকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে। প্রথম স্ত্রী সাজেদা বেগমকে থানায় ডেকে নিয়ে এবং দ্বিতীয় স্ত্রী আকলিমা বেগমকে শহরের পশ্চিম পাইকপাড়ার তার বাসায় গিয়ে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে।

জিজ্ঞাসাবাদে দুই স্ত্রীর কাছ থেকে পুলিশ ইয়াছিন সম্পর্কে ব্যাপক তথ্য পেয়েছে। তৃতীয় স্ত্রী মকছুরা বেগম ইয়াছিনের সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ায় পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেনি। একটি সূত্র জানায়, জালিয়াতি করে নেয়া টাকা ফেরত দিতে রাজি হওয়ার পর অফিসের লোকজনের সহায়তায় ইয়াছিনকে আত্মসমর্পণ করানোও হয়েছে।

সাবরেজিস্ট্রার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, সদর সাবরেজিস্ট্রি অফিসে নকল, তল্লাশি ও রেজিস্ট্রেশন ফিসহ বিভিন্ন সরকারি ফি ইয়াছিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সোনালী ব্যাংকের প্রধান শাখায় জমা দিতেন।

সোনালী ব্যাংকের চালান জালিয়াতি করে ইয়াছিন বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাবরেজিস্ট্রি অফিসের একাধিক কর্মচারী ও দলিল লেখক জানান, সামান্য পিয়নের চাকরি করে ইয়াছিন বিপুল ধন-সম্পদের মালিক হয়েছেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরে তার তিনটি বাড়ি রয়েছে। এছাড়া নামে-বেনামে তার একাধিক ফ্ল্যাট রয়েছে। সূত্র জানায়, ইয়াছিনের পোস্টিং নাসিরনগর উপজেলা সাবরেজিস্ট্রি অফিসে হলেও তিনি দীর্ঘদিন ধরে ডেপুটেশনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা সাবরেজিস্ট্রি অফিসে কাজ করেন।

শুক্রবার সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন জানান, ইয়াছিনের বিরুদ্ধে দেয়া পরিদর্শক নৃপেন্দ্র নাথের অভিযোগ দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) পাঠানো হয়েছে। অভিযোগটি দুদক খতিয়ে দেখবে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাবরেজিস্ট্রি অফিস: ‘কোটিপতি’ পিয়ন ইয়াছিন অবশেষে গ্রেফতার

দুদকে অভিযোগ * ৫ কোটি ৭৭ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
 ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি 
০৭ ডিসেম্বর ২০১৯, ১২:০০ এএম  |  প্রিন্ট সংস্করণ
আলোচিত কোটিপতি ইয়াসিন
আলোচিত কোটিপতি ইয়াসিন। ছবি: সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা সাবরেজিস্ট্রি অফিসের ‘কোটিপতি’ পিয়ন ইয়াছিন মিয়াকে (৪২) অবশেষে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার ভোরে সদর থানা এলাকা থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।

সাবরেজিস্ট্রি অফিসে অডিট কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর ইয়াছিন তৃতীয় স্ত্রীকে নিয়ে গা-ঢাকা দিয়েছিল। সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন জানান, জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ইয়াছিনকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

বাঞ্ছারামপুর উপজেলার আতুয়াকান্দি গ্রামের মোহন মিয়ার ছেলে ইয়াছিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ- সোনালী ব্যাংকের ভুয়া চালানের মাধ্যমে জালিয়াতি করে তিনি পাঁচ কোটি ৭৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এ অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় চট্টগ্রাম রেজিস্ট্রার অফিসের বিভাগীয় পরিদর্শক নৃপেন্দ্র নাথ শিকদার অভিযোগ করেন।

২৬ নভেম্বর থেকে সাবরেজিস্ট্রি অফিসের অডিট কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর অফিস সহায়ক (পিয়ন) ইয়াছিনের কোটি টাকার ঘাপলা বেরিয়ে আসতে থাকে। অডিট কার্যক্রম শুরু হলে তিনি গা-ঢাকা দেন। ২৯ নভেম্বর রাতে ইয়াছিনের বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর সাবরেজিস্ট্রার মোস্তাফিজুর রহমান থানায় লিখিত অভিযোগ (জিডি) করেন।

জিডি হওয়ার পর ইয়াছিনের খোঁজে মাঠে নামে পুলিশ। তার তিন স্ত্রীর মধ্যে দু’জনকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে। প্রথম স্ত্রী সাজেদা বেগমকে থানায় ডেকে নিয়ে এবং দ্বিতীয় স্ত্রী আকলিমা বেগমকে শহরের পশ্চিম পাইকপাড়ার তার বাসায় গিয়ে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে।

জিজ্ঞাসাবাদে দুই স্ত্রীর কাছ থেকে পুলিশ ইয়াছিন সম্পর্কে ব্যাপক তথ্য পেয়েছে। তৃতীয় স্ত্রী মকছুরা বেগম ইয়াছিনের সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ায় পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেনি। একটি সূত্র জানায়, জালিয়াতি করে নেয়া টাকা ফেরত দিতে রাজি হওয়ার পর অফিসের লোকজনের সহায়তায় ইয়াছিনকে আত্মসমর্পণ করানোও হয়েছে।

সাবরেজিস্ট্রার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, সদর সাবরেজিস্ট্রি অফিসে নকল, তল্লাশি ও রেজিস্ট্রেশন ফিসহ বিভিন্ন সরকারি ফি ইয়াছিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সোনালী ব্যাংকের প্রধান শাখায় জমা দিতেন।

সোনালী ব্যাংকের চালান জালিয়াতি করে ইয়াছিন বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাবরেজিস্ট্রি অফিসের একাধিক কর্মচারী ও দলিল লেখক জানান, সামান্য পিয়নের চাকরি করে ইয়াছিন বিপুল ধন-সম্পদের মালিক হয়েছেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরে তার তিনটি বাড়ি রয়েছে। এছাড়া নামে-বেনামে তার একাধিক ফ্ল্যাট রয়েছে। সূত্র জানায়, ইয়াছিনের পোস্টিং নাসিরনগর উপজেলা সাবরেজিস্ট্রি অফিসে হলেও তিনি দীর্ঘদিন ধরে ডেপুটেশনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা সাবরেজিস্ট্রি অফিসে কাজ করেন।

শুক্রবার সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন জানান, ইয়াছিনের বিরুদ্ধে দেয়া পরিদর্শক নৃপেন্দ্র নাথের অভিযোগ দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) পাঠানো হয়েছে। অভিযোগটি দুদক খতিয়ে দেখবে।

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন