Logo
Logo
×

শেষ পাতা

বিএনপির মানববন্ধনে মির্জা ফখরুল

বিদ্যুৎ পানির দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসুন

খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের সঠিক রিপোর্ট না দিতে চিকিৎসকরা বাধ্য হয়েছেন

Icon

যুগান্তর রিপোর্ট

প্রকাশ: ০৩ মার্চ ২০২০, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

বিদ্যুৎ পানির দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসুন

বিদ্যুৎ-পানির দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত থেকে সরকার সরে না আসলে ‘জনগণের আন্দোলনে’ সরকার ভেসে যাবে বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মঙ্গলবার পানি-বিদ্যুৎ-এর দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত এক মানববন্ধনে তিনি এ হুশিয়ারি দেন। এ সময়ে ফখরুল আরও বলেন, ‘সরকারের কাছে বলতে চাই, বিদ্যুৎ ও পানির দাম যেটা বাড়িয়েছেন সেটা প্রত্যাহার করুন, গ্যাসে দাম যেটা বাড়িয়েছেন সেটা প্রত্যাহার করুন। অন্যথায় জনগণের যে উত্তাল তরঙ্গ সৃষ্টি হবে সেখানে ভেসে যাবেন।’

বিএনপির কারাবন্দি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের সঠিক রিপোর্ট না দিতে সরকার চিকিৎসকদের বাধ্য করেছে- এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, দুর্ভাগ্য আমাদের আজকে পিজি হাসপাতালের (বিএসএমএমইউ) ডাক্তাররা, যাদের এই দেশের মানুষ শ্রদ্ধা করে, নির্ভর করে, তারা সঠিক রিপোর্ট দিতে পারলেন না। সরকার তাদের বাধ্য করেছে সঠিক রিপোর্ট না দেয়ার জন্য। দুর্ভাগ্য আমাদের বিচার বিভাগ, উচ্চ আদালত সঠিক বিচার করতে পারেন না। কারণ এখানে একনায়কতন্ত্রের রাষ্ট্র, ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রব্যবস্থা।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সকাল ১১টা থেকে এক ঘণ্টার এই কর্মসূচি হয়। ফুটপাতে দাঁড়িয়ে নেতা-কর্মীরা বিদু্যুতের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদের পাশাপাশি খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতেও স্লোগান দেয়।

মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি যুগ্ম-মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে ও সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিমের পরিচালনায় মানববন্ধনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, সেলিমা রহমান, কেন্দ্রীয় নেতা এজেডএম জাহিদ হোসেন, হাবিবুর রহমান হাবিব, খায়রুল কবির খোকন, ফজলুল হক মিলন, মীর সরফত আলী সপু, এবিএম মোশাররফ হোসেন, আবদুস সালাম আজাদ, শহীদুল ইসলাম বাবুল, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, সুলতানা আহমেদ, মোস্তাফিজুল করীম মজুমদার, হাসান জাফির তুহিন, আবদুর রহিম বক্তব্য দেন। এছাড়া মানববন্ধনে বিএনপির ডা. দেওয়ান সালাহউদ্দিন, শিরিন সুলতানা, আমিনুল হক, শফিউল বারী বাবু, খন্দকার আবু আশফাক, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, আবদুল আউয়াল খান, শামীমুর রহমান শামীম, আমিরুজ্জামান শিমুল, রফিক শিকদার, নিপুন রায় চৌধুরী, হেলেন জেরিন খান, মোরতাজুল করীম বাদরু, নুরুল ইসলাম নয়ন, এসএম জাহাঙ্গীর, শফিকুল ইসলাম মিল্টন, রফিকুল আলম মজনু, ইকবাল হোসেন শ্যামলসহ মহানগরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, পানির দাম কমপক্ষে দশবার বেড়েছে এবং সেই পানি যে পানি মুখে দেয়া যায় না, খাওয়া যায় না। বিদ্যুতের দাম আগে ৮ বার বেড়েছে। কারণ কী? কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্টের নামে তারা যে সব লুট করেছে, প্রতিদিন লুট করছে তাদের ভর্তুকি দেয়ার জন্য জনগণের পকেট কেটে তারা বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছে।

তারা যে চুক্তিগুলো করেছে যদি কোনো পাওয়ার প্ল্যান্ট বিদ্যুৎ সরবরাহ না করে তারপরেও তাকে পয়সা দিতে হবে। অর্থাৎ প্রতিবছর তাদের ৫১ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। এই টাকা বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে জনগণের পকেট থেকে নিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, যখন চাল, পেঁয়াজ, লবণসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ছে, বাড়ি ভাড়া বাড়ছে তখন বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে, পানির দাম বাড়িয়ে নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত মানুষকে একটা চরম অসহায়ত্বের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। কারণ সরকারের জনগণের প্রতি কোনো দায়বদ্ধতা নেই। তারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি, রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় এসেছে। সুতরাং তাদের জনগণের দুঃখ-দুর্দশা বোঝার মতো কোনো ক্ষমতাই নেই।

ফখরুল বলেন, গত ১২ বছর ধরে জনগণের ওপর সরকার যে অত্যাচার-নিপীড়ন-নির্যাতন-হত্যার যে স্টিমরোলার চালাচ্ছেন জনগণ কখনোই তা মেনে নেবে না। তাদেরকে অবশ্যই জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে, কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন যে, ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক হচ্ছে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক যদি হবে তাহলে এনআরসি তৈরি করে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূতদেরকে তারা (ভারত) জোর করে ফেরত পাঠিয়ে দেবে কেন।

অথচ সরকার এখনও বলছে যে, এটা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। সীমান্তে হত্যা বন্ধে সরকার কোনো কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। সীমান্তের নদীগুলোর পানির ন্যায্য হিস্যা হয়নি। ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনে বাংলাদেশের কথা বলা হলেও সরকার সেটা নিয়ে কথা বলতে পারে না। এরা নতজানু সরকার, পুতুল সরকার।

তাদেরকে দিয়ে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ হবে না। স্বাধীনতার এই মাসে আমরা বলতে চাই, স্বাধীনতাকে তারা (সরকার) রক্ষা করতে পারবে না, এই স্বাধীনতাকে তারা বিক্রি করে দিচ্ছে। আমাদেরকে অবশ্যই রুখে দাঁড়াতে হবে, আমাদেরকে জেগে উঠতে হবে।

সরকারের সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, তারা বাংলাদেশকে ধ্বংস করে দিয়েছে। ব্যাংকিং সেক্টর ধবংস করেছে, অর্থনীতিকে ধবংস করেছে, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে ধবংস করেছে, স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে ধবংস করেছে, আমাদের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কিছুই নেই। তারা সুপরিকল্পিতভাবে সংবিধানে কেটে-ছেঁটে নষ্ট করে দিয়ে জনগণের অধিকার কেড়ে নিয়ে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়ে একটা একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে।

আবদুল মঈন খান বলেন, সরকার বিনা ভোটের সরকার, তারা জনপ্রতিনিধিত্ববিহীন সরকার। তারা এ দেশের মানুষকে লুটেপুটে খাচ্ছে। এই সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার কায়েম করতে হলে আমাদেরকে রাজপথে থাকতে হবে, আমরা রাজপথে আছি, আমরা রাজপথে থাকব- এটাই হোক আমাদের শপথ।

বিএনপি বিদ্যুৎ পানি

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম