Logo
Logo
×

শেষ পাতা

ব্যাংকগুলোর পরিচালন মুনাফায় ধস, মূলধনে আঘাতের শঙ্কা

Icon

হামিদ বিশ্বাস

প্রকাশ: ০৩ মে ২০২০, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ব্যাংকগুলোর পরিচালন মুনাফায় ধস, মূলধনে আঘাতের শঙ্কা

ফাইল ছবি

দীর্ঘদিন ধরে ধারাবাহিকভাবে মুনাফা করে আসছিল ব্যাংকিং খাত। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সঙ্গে ভেঙে পড়েছে সেই ধারাবাহিকতা। এক মাসের ব্যবধানে বেশিরভাগ ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা এক-তৃতীয়াংশে নেমে এসেছে।

এর ফলে ব্যাংকের মূলধনে আঘাতের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীরা বলছেন, ‘কর্পোরেট কর প্রদান, ঋণমানের বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণ এবং যাবতীয় খরচ বাদ দিলে ব্যাংকের নিট মুনাফা বলতে কিছুই থাকবে না।

তবুও একদিন না একদিন মুনাফা হয় তো করা যাবে। কিন্তু মূলধনে আঘাত এলে ব্যাংক বাঁচবে না।’

জানতে চাইলে যমুনা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মির্জা ইলিয়াছ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘একক মাসের হিসাবে পরিচালন মুনাফা কমে অর্ধেকে নেমে এসেছে। এটা আমার ব্যাংকিং জীবনে এই প্রথম। তবুও মুনাফা নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত নই, কারণ মুনাফা যে কোনো সময় ঘুরে দাঁড়াবে।

তবে বেশি চিন্তিত মূলধন নিয়ে, যদি করোনাভাইরাসের সময়সীমা আরও বেড়ে যায় তাতে ব্যাংকের মূলধনে আঘাত আসবে। আর ব্যাংক কখনও মূলধনের আঘাত সইতে পারে না। এতে নির্ঘাত ধ্বংস।’

জানা যায়, এপ্রিলে বেসরকারি খাতের প্রাইম ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা দাঁড়িয়েছে ২০ কোটি টাকা। কিন্তু এক মাস আগেও তা ছিল ৬০ কোটি টাকা। একই অবস্থা সাউথইস্ট ব্যাংকের। এক মাসের ব্যবধানে ব্যাংকটির পরিচালন মুনাফা ৫৩ কোটি টাকা কমেছে।

এপ্রিলে মাত্র ২২ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা হয়েছে সাউথইস্ট ব্যাংকের। আরও করুণ অবস্থা বেসরকারি খাতের ওয়ান ব্যাংক লিমিটেডের। এপ্রিলে মাত্র ১০ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা হয়েছে ব্যাংকটির। কিন্তু মার্চে মুনাফা ছিল ৫০ কোটি টাকা।

সাউথইস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম কামাল হোসেন বলেন, সব ব্যাংকের একই চিত্র। পরিচালন মুনাফা কমা এটা প্রথম ধাক্কা। এরপর ভয়াবহ মূলধন ঘাটতির দিকে যাচ্ছে ব্যাংকিং খাত।

করোনার আঘাতে বেসরকারি খাতের সবচেয়ে বড় ব্যাংকটির মুনাফাও অর্ধেকে নেমে এসেছে। মার্চে ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালন মুনাফা ছিল ১৬০ কোটি টাকা। কিন্তু এপ্রিলে এসে তা দাঁড়িয়েছে মাত্র ৮০ কোটি টাকায়।

মার্চ ও এপ্রিলের হিসাব অনুযায়ী পূবালী ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা নেমেছে ৭২ থেকে ৩৪ কোটি, ন্যাশনাল ব্যাংকের ৫৬ থেকে ১০ কোটি, ব্যাংক এশিয়ার ৭০ থেকে ৩৩ কোটি, শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের ৬৩ থেকে ১৮ কোটি, যমুনা ব্যাংকের ৬৩ থেকে ৩০ কোটি, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ৫১ থেকে ১৪ কোটি, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের ৭২ থেকে ২৭ কোটি, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের ৭০ থেকে ৩০ কোটি, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের ৪২ থেকে ২০ কোটি, এনসিসি ব্যাংকের ৬৫ থেকে ৩১ কোটি, উত্তরা ব্যাংকের ৪২ থেকে ২১ কোটি এবং মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের (এমটিবি) ৪০ থেকে ১৮ কোটি টাকা। এ প্রসঙ্গে এমটিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, এমন দৃশ্য জীবনেও দেখিনি। ভয়াবহ পরিস্থিতির দিকে এগোচ্ছি।

মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কামরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, গত কয়েক মাস সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ। এলসি খোলা ও নিষ্পত্তি হচ্ছে না। রেমিটেন্স আসছে না। ঋণের টাকা আদায় হচ্ছে না। পরিস্থিতি এখন আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। শুধু পরিচালন মুনাফা নয়, এবার মূলধনেও আঘাত আসবে।

ব্যাংক

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম