বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রথম ভার্চুয়াল অধিবেশন শুরু
করোনা মোকাবেলা নিয়ে আন্তর্জাতিক তদন্ত দাবি
চীনের প্রতিবাদ
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮ মে ২০২০, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
করোনাভাইরাসের উৎস নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে তীব্র রেষারেষির মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রথম ভার্চুয়াল অধিবেশন শুরু হয়েছে। সোমবার শুরু হওয়া অধিবেশনে করোনা মোকাবেলার পদক্ষেপ নিয়ে আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি জানিয়েছে কয়েকটি দেশ। তবে এর প্রতিবাদ জানিয়েছে চীন। করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলায় জোরালো পদক্ষেপ নেয়ার ক্ষেত্রে চীন-যুক্তরাষ্ট্রের দ্বন্দ্ব বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। খবর বিবিসি ও এএফপির।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অধিবেশন সাধারণত তিন সপ্তাহব্যাপী হয়ে থাকে। তবে এবার শুধু করোনাভাইরাস নিয়ে আলোচনার জন্য দুই দিনের অধিবেশন ডাকা হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রেয়াসুস বলেছেন, ১৯৪৮ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ অধিবেশন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ। সংস্থার ৭৩তম অধিবেশনে বেশ কয়েকজন রাষ্ট্রপ্রধান, সরকারপ্রধান, স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও শীর্ষ নেতারা যুক্ত হয়েছেন। চীন-মার্কিন উত্তেজনা সত্ত্বেও করোনা মহামারীর বিরুদ্ধে একটি সম্মিলিত প্রতিক্রিয়ার আহ্বান জানিয়ে ঐকমত্যের মাধ্যমে একটি প্রস্তাব গ্রহণের ব্যাপারে সদস্য দেশগুলো আশাবাদী। সংস্থাটির সক্ষমতা বিবেচনায় পুনর্গঠনের বিষয়টিও দেশগুলো উড়িয়ে দেয়নি।
এদিকে করোনা মোকাবেলার পদক্ষেপ নিয়ে আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি জানিয়েছে কয়েকটি দেশ। নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়েছে জার্মানি, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া, ভারতসহ ৬২টি দেশ। খসড়া প্রস্তাবও উত্থাপন করা হয়েছে। তবে এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে চীন। দেশগুলোর নেতৃত্ব দিচ্ছে যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া এ মহামারী মোকাবেলায় কী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে এবং এর থেকে কী শিক্ষা পাওয়া গেছে, তা নিয়ে তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে। এছাড়া প্রস্তাবে ভাইরাসটির উৎস সন্ধানে আন্তর্জাতিক অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে কাজের কথাও রাখা হয়েছে। কূটনীতিকরা খসড়া প্রস্তাবে নীতিগতভাবে একমত হলেও পর্যবেক্ষকরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক পরিবেশ কিছু ঐকমত্য ভেঙে দেয়ার পথ বেছে নিতে পারে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের মুখপাত্র ভিরজিনি বাট্টু হেনরিকসন বলেন, যে কোনো পর্যালোচনার অংশ হিসেবে কিছু প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। সেগুলো হল- কীভাবে এ মহামারী ছড়িয়েছে? এটি ছড়িয়ে পড়ার ব্যাপারে মহামারী তত্ত্ব কী বলে? এ ধরনের আরেকটি মহামারী ঠেকাতে আমাদের জন্য এ প্রশ্নগুলোর উত্তর জানা জরুরি। তবে এখন দোষারোপের খেলায় মেতে ওঠার সময় নয় বলে সতর্ক করেছেন হেনরিকসন।
এ অধিবেশনে মহামারী মোকাবেলায় নিজেদের ভূমিকা নিয়ে বড় ধরনের চাপের মুখে পড়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এর মুখপাত্র ড. মার্গারেট হারিস বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংক্রান্ত এ অধিবেশন সব সময়ই ডব্লিউএইচও’র জন্য চাপের। তবে তিনি মনে করেন, এ মহামারী মোকাবেলায় সব ধরনের দায়িত্ব, বিজ্ঞান ও সমাধানে নেতৃত্ব দিতে নিবিড়ভাবে কাজ করছে সংস্থা।
গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা বলেছেন। চীনের উহান থেকে করোনাভাইরাস উৎপত্তির পর থেকে দেশটির ভূমিকার সমালোচনা করে আসছেন ট্রাম্প। ভাইরাসটি চীনের ল্যাবে উৎপত্তি হয়েছে- এমন প্রমাণহীন দাবিও করেছেন তিনি। চীনের হয়ে কাজ করার ও মহামারীর বিষয়টিকে প্রথম দিকে গুরুত্ব না দেয়ার অভিযোগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় অর্থায়ন বন্ধের ঘোষণাও দেন ট্রাম্প।
