চট্টগ্রাম চেম্বারের প্রতিক্রিয়া
বাজেট সময়োপযোগী তবে বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা জরুরি
বন্দরের বে-টার্মিনালসহ বড় প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি
চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: ১২ জুন ২০২০, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
প্রস্তাবিত বাজেটকে করোনার প্রেক্ষাপটে জীবন-জীবিকার, ব্যবসাবান্ধব এবং জনবান্ধব হিসেবে উল্লেখ করেছেন চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম।
গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা এবং একই সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতিতে অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার করার জন্য প্রস্তাবিত বাজেট সময়োপযোগী। তবে বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সততা, স্বচ্ছতা ও দক্ষতা নিশ্চিত করা জরুরি। স্বাস্থ্য খাতে ২৯ হাজার ২৪৭ কোটি, কৃষি খাতে ২৯ হাজার ৯৮৩ কোটি এবং সামাজিক সুরক্ষা খাতে ৯৫ হাজার ৪৭৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া ইতিবাচক।’
চেম্বার সভাপতি বলেন, ‘কর্ণফুলী নদীর তলদেশে ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার দীর্ঘ টানেলের ৫১ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া কুমিল্লা-লাকসাম হয়ে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত ডাবল ট্র্যাক দ্রুতগতির রেললাইন বাস্তবায়ন করা হবে বলে প্রস্তাবিত বাজেটে উল্লেখ করা হয়েছে। সমুদ্রবন্দরগুলোর পণ্য হ্যান্ডলিং সক্ষমতা বৃদ্ধিতে নতুন কনটেইনার টার্মিনাল, ওভারফ্লো ইয়ার্ড, বে- টার্মিনাল ও বাল্ক টার্মিনাল নির্মাণের কথা বলা হয়েছে। আমরা এসব প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানাই।’
চেম্বার সভাপতি বলেন, ‘ব্যক্তিগত করমুক্ত আয়ের সীমা তিন লাখ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি, সর্বনিু কর হ্রাস করে ৫ শতাংশ নির্ধারণ এবং সর্বোচ্চ করহার ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করায় করদাতাদের উৎসাহিত করবে। মহামারীর কারণে রিটার্ন দাখিলে ব্যর্থ করদাতাদের জরিমানা ও সুদ ব্যতীত সময়সীমা বৃদ্ধি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত।’
আগামী জুলাই থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের আয়কর রিটার্নে অপ্রদর্শিত জমি, বিল্ডিং, ফ্ল্যাট ও অ্যাপার্টমেন্টের ওপর নির্দিষ্ট হারে এবং নগদ অর্থ, ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, সঞ্চয়পত্র, শেয়ার, বন্ড, সিকিউরিটিজ এবং পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ওপর ১০ শতাংশ কর প্রদান করে বৈধ করার সুযোগকে স্বাগত জানিয়েছেন চেম্বার সভাপতি। তিনি বলেন, এর ফলে অপ্রদর্শিত অর্থ অর্থনীতির মূলধারায় যুক্ত হয়ে তারল্য সংকট নিরসনে সহায়ক হবে।
চেম্বার সভাপতি বলেন, ‘স্থানীয় উৎপাদনমুখী শিল্পের কাঁচামাল আমদানিতে অগ্রিম কর ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪ শতাংশ করা, রেয়াতের সময়সীমা ২ কর মেয়াদ থেকে বৃদ্ধি করে ৪ মেয়াদ করায় দেশীয় শিল্পের বিকাশ ঘটবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য চাল, আটা, আলু, পেঁয়াজ, রসুন, চিনি ইত্যাদি সরবরাহের ক্ষেত্রে উৎসে কর ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ শতাংশ নির্ধারণ, রসুন ও চিনি আমদানির ক্ষেত্রে অগ্রিম আয়কর ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ শতাংশ নির্ধারণ, পোলট্রি শিল্পের বিকাশের লক্ষ্যে হাঁস, মুরগির খাদ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত কাঁচামাল আমদানিতে অগ্রিম কর ৫ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ২ শতাংশ নির্ধারণ করায় এসব পণ্যের মূল্য হ্রাস পাবে এবং সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে। পাশাপাশি দেশীয় পেঁয়াজ চাষীদের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আমদানির ওপর শুল্কারোপ চাষীদের উৎসাহিত করবে।
কোভিড-১৯ মোকাবেলায় বাজেট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে আশা প্রকাশ করে চট্টগ্রামের এই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, পিপিই, মাস্ক ইত্যাদি উৎপাদন ও ব্যবসায়ী পর্যায়ে মূসক অব্যাহতি এবং পিপিই, মাস্ক, স্যানিটাইজার ইত্যাদি পণ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত কাঁচামাল আমদানির ওপর সমুদয় শুল্ককর মওকুফ করা হয়েছে। এছাড়া কোভিড-১৯ মোকাবেলায় ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে যা ইতিবাচক। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প বিকাশে বাজেট ভূমিকা রাখবে বলে উল্লেখ করেন চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি।
