Logo
Logo
×

শেষ পাতা

আইএমএফের প্রতিবেদন

করোনার সঙ্গে নতুন চ্যালেঞ্জ বন্যার ক্ষতি মোকাবেলা

Icon

যুগান্তর রিপোর্ট

প্রকাশ: ১৯ জুলাই ২০২০, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

করোনার সঙ্গে নতুন চ্যালেঞ্জ বন্যার ক্ষতি মোকাবেলা

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের প্রভাবে বাংলাদেশের সার্বিক বিপর্যস্ত অর্থনীতি স্বাভাবিক করতে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক যখন নানামুখী প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়ন নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে, তখনই হানা দিয়েছে বন্যা। অর্থনীতিতে করোনার ক্ষতি মোকাবেলার পাশাপাশি এখন নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে যোগ হয়েছে বন্যা পরিস্থিতি। এতে কৃষির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।

কর্মসংস্থান হারিয়ে বন্যাকবলিত এলাকার মানুষের আয়-রোজগার প্রায় বন্ধ। পাশাপাশি কর্মসক্ষমতাও হ্রাস পেয়েছে। এর প্রভাবে উৎপাদন ও বিপণন ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রকাশিত ‘করোনার প্রভাব মোকাবেলায় নীতি সহায়তা’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। বিভিন্ন দেশে করোনার প্রভাবের হালনাগাদ অবস্থা নিয়ে আইএমএফ শুক্রবার এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে।

এতে বলা হয়েছে, করোনার প্রভাব থেকে পর্যায়ক্রমে অর্থনীতিতে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশ গত ৩১ মে থেকে সীমিত আকারে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালু করে। পরবর্তী সময়ে এর পরিধি আরও বাড়ানো হয়। এর মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক অর্থনৈতিক পাওয়ার হাউসগুলোতে কর্মকাণ্ড স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। তবে অপ্রাতিষ্ঠানিক পাওয়ার হাউসগুলো এখনও কাজ শুরু করতে পারেনি। কেননা, অর্থনীতি সচল করার জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন মানুষের চলাচল স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা, চাহিদা সৃষ্টি ও ক্রয়ক্ষমতা বাড়ানো। এই প্রক্রিয়াটিকে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক নানামুখী প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়নের মাধ্যমে যখন এগিয়ে যাচ্ছিল, ঠিক তখনই বন্যা হানা দিয়েছে, যা অর্থনীতিতে স্বাভাবিক করতে সরকারের জন্য নতুন উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বন্যায় এখন পর্যন্ত ৪০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাংলাদেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ নিচু এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এটি কৃষি খাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। উৎপাদন কমে যেতে পারে। ফলে সরকারকে বেশি মাত্রায় খাদ্য আমদানি করতে হতে পারে। এ ছাড়া বন্যার প্রভাব মোকাবেলার জন্য জরুরি ব্যয় নির্বাহ করতে হবে। সে জন্যও সরকারকে প্রস্তুতি নিতে হবে।

এতে বলা হয়েছে, করোনায় বাংলাদেশে মৃত্যুর সংখ্যা কম হলেও পরীক্ষার মাত্রা না বাড়ানোটা এখন বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ। পরীক্ষার মাত্রা না বাড়ানোর কারণে ভাইরাসটির বিস্তার সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। করোনার নিয়ন্ত্রণ দীর্ঘায়িত হলে দেশটির অন্য দেশের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

করোনার প্রভাব মোকাবেলায় সরকার ধীরে ধীরে বিভিন্ন খাতে আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো প্রত্যাহার করে নিচ্ছে। দেশের ভেতরে করোনা নিয়ে সৃষ্ট সংকটের কারণে বাইরের যোগাযোগ বাধাগ্রস্ত হলে রেমিটেন্সপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হবে। কেননা, করোনা নিয়ন্ত্রণে না এলে বিদেশে বাংলাদেশের শ্রমিকরা যেতে পারবেন না। জিডিপিতে এখন ৫ শতাংশ ভূমিকা রাখে রেমিটেন্স। এদিকে পোশাক রফতানিতেও নেতিবাচক অবস্থা বিরাজ করছে। মোট রফতানির ৮০ শতাংশই রয়েছে পোশাক। বড় ক্রেতারা তাদের দেয়া রফতানির কার্যাদেশ বাতিল করে দিচ্ছে। এখন ছোট ছোট কিছু রফতানির আদেশ আসছে। আইএমএফের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলার বিভিন্ন রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলোয় করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি মারাত্মক রূপ নিয়েছে। এ বিষয়ে সরকার থেকে একটি সমীক্ষা প্রণয়ন করে ঝুঁকি হ্রাসের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। গত ৩০ জুন পর্যন্ত ৫০ জন করোনা রোগী শনাক্ত ও ৫ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

করোনাভাইরাস অর্থনীতি বন্যা আইএমএফ

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম