সরকারি চাকরির বয়সে ৫ মাস ছাড়
প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে -জনপ্রশাসন সচিব
যুগান্তর রিপোর্ট
প্রকাশ: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
করোনা মহামারীর কারণে সরকারি চাকরির নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত ছিল। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন চাকরিপ্রত্যাশী শিক্ষিত বেকাররা। তাদের ক্ষতি পুষিয়ে দিতে বয়সে ছাড় দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি সাপেক্ষে ৫ মাসের বয়সের ছাড় পাবেন চাকরিপ্রত্যাশীরা।
বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন জনপ্রশাসন সচিব শেখ ইউসুফ হারুন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিনি যুগান্তরকে বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া মার্চ থেকে বন্ধ ছিল। এ সময়ে চাকরিপ্রার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাদের ক্ষতির বিষয়টি বিবেচনা করতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। তার অনুমোদনের জন্য ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। সম্মতি পাওয়া সাপেক্ষে চাকরিপ্রত্যাশীরা ৫ মাসের বয়সে ছাড় পেতে পারেন।’
এর আগে বিকেলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘করোনার কারণে বন্ধের মধ্যে মন্ত্রণালয়, বিভাগ কিংবা সংস্থা চাকরির জন্য বিজ্ঞপ্তি দিতে পারেনি। অনেকের চাকরির বয়স এ সময়ের মধ্যে চলে গেছে। সে ক্ষেত্রে তারা ৫ মাসের একটা ছাড় পাবেন। আগস্ট পর্যন্ত বিজ্ঞপ্তিগুলোতে আবেদন করতে পারবেন তারা। বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি সম্মতি জানিয়েছেন। নির্দেশনা দিয়েছেন যে এভাবে করো। এটা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা।’
করোনার কারণে গত কয়েক মাসে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি পায়নি শিক্ষিত বেকার জনগোষ্ঠী। অংশ নিতে পারেনি কোনো নিয়োগ পরীক্ষাতেও। এরই মধ্যে অনেকেরই বয়স ৩০ বছর পেরিয়ে গেছে।
স্বাভাবিকভাবেই সরকারি চাকরির আবেদনে সুযোগ শেষ হয়ে যায় তাদের। এ কারণেই ৩০ বছর পেরিয়ে যাওয়া প্রার্থীদের চাকরির আবেদনে ৫ মাসের বেশি সময় ছাড় দিয়েছে সরকার।
২৫ মার্চ যাদের বয়স ৩০ বছর হবে তারা আগস্ট পরবর্তী সময়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সুযোগ পাবেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২৬ মার্চের পর মার্চ-এপ্রিল-মে-জুন-জুলাই-আগস্ট পর্যন্ত যেসব মন্ত্রণালয় চাকরির জন্য তাদের বিজ্ঞাপন দেয়ার কথা ছিল কিন্তু দিতে পারেনি তারা আগস্টের পর থেকে বিজ্ঞপ্তি দিচ্ছে।
সেই ক্ষেত্রে প্রার্থী যারা থাকবেন তাদের জন্য আবেদন চাইবে যে ২৫ মার্চ তাদের বয়স ৩০ বছর হতে হবে। এটুকু দিলে তারা (চাকরিপ্রত্যাশী) কনসেশনটা পেয়ে গেলেন।
আবেদনকারীদের জন্য এ সুবিধা আগস্ট পর্যন্ত থাকবে। আগস্টের পর তো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি যাচ্ছে। সেপ্টেম্বর থেকে যে বিজ্ঞপ্তিগুলো যাচ্ছে ২৫ মার্চ তার ৩০ বছর হয়ে যাবে। তাহলে আর কোনো সমস্যা হবে না।
সরকারি চাকরির বয়স বাড়িয়ে ৩৫ বছর করার দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, চাকরির বয়স যেটা (৩০ বছর) আছে সেটাই থাকবে। শুধু কোভিড সিচ্যুয়েশনের কারণে ওই সময়টায় ২৬ মার্চ থেকে ছুটি শুরু হয়েছে, ২৫ মার্চ বয়স ৩০ বছর হতে হবে।
এটা আমরা বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করে দেব। তাতে যাদের বয়স পার হয়ে গেছে তারাও আবেদনটা করতে পারবেন।
ফরহাদ হোসেন বলেন- সরকারি সব মন্ত্রণালয়, দফতর, সংস্থা, অধিদফতরে যেখানে চাকরির জন্য বিজ্ঞাপন দেয়ার কথা ছিল তাদের সবার জন্য এটা প্রযোজ্য হবে। অর্থাৎ সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত সব প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য হবে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মহামারী ছড়িয়ে পড়ার মধ্যে দেশে ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ১৭ মার্চ থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সার্বিক চলাচলও নিয়ন্ত্রণ করে সরকার।
পর্যায়ক্রমে অফিস-আদালত-গণপরিবহন চালু হয়। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। সংক্রমণ প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিয়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে চলছে জনজীবন। এ অবস্থায় সরকারি চাকরিপ্রত্যাশীদের জন্য সুখবর দিল সরকার।
