ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করতেন এমডি স্বাধীন
শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজ
রাজশাহী ব্যুরো
০১ ডিসেম্বর ২০২০, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
রাজশাহীর শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মুনীরুজ্জামান স্বাধীনের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানিসহ নানা অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, স্বাধীন প্রায়ই গভীর রাতে ছাত্রীদের রুমে হানা দিতেন। এমনকি তাদের বাথরুমে গোপন ক্যামেরাও রেখেছিলেন তিনি। এতদিন তার ক্যাডারদের ভয়ে মুখ বন্ধ রেখেছিলেন তারা। স্বাধীন নিজেও শিবিরের বড় মাপের একজন ক্যাডার ছিলেন বলে জানান তারা।
শুক্রবার সন্ধ্যায় স্বাধীনের সশস্ত্র ক্যাডারদের হামলায় শাহমখদুম মেডিকেল কলেজের ১০ শিক্ষার্থী আহত হয়। এ ঘটনায় মামলা হলে পুলিশ স্বাধীনের ভাই ও তার ভাইয়ের স্ত্রীকে গ্রেফতার করে। শনিবার স্বাস্থ্য অধিদফতর ও মন্ত্রণালয়ের একটি টিম মেডিকেল কলেজ পরিদর্শন করে। এ সময় মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের কাছে শিক্ষার্থীরা এসব অভিযোগ তুলে ধরেন।
স্বাধীন পলাতক থাকায় এসব অভিযোগের বিষয়ে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া যায়।
মন্ত্রণালয়ের টিমের কাছে কয়েকজন ছাত্রী অভিযোগে বলেন, রাত ১২টার পর হোস্টেলে গিয়ে নাম ধরে ধরে মেয়েদের নিজের রুমে ডাকতেন স্বাধীন। তারা ২-৩ জন একসঙ্গে যেতে চাইলে তিনি আপত্তি করতেন। বলতেন, যাকে ডাকা হবে সেই আসবে। একবার তিনি মেয়েদের হোস্টেলের বাথরুমে গোপন ক্যামেরাও রেখেছিলেন। এ নিয়ে ছাত্রীরা প্রতিবাদ করলে উল্টো তাদেরই হয়রানি করা হয়। ছাত্রীরা আরও বলেন, এসব বিষয় অভিভাবকদের জানানো হলে স্বাধীন আরও বেপরোয়া আচরণ করতেন। অনেক সময় স্বাধীন তার ক্যাডার বাহিনীও লেলিয়ে দিতেন। একজন অভিভাবক বলেন, আমরা এই খারাপ লোকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। আমরা আমাদের মেয়েদের এই কলেজে আর একদিনের জন্যও রাখতে চাই না। শিক্ষার্থীরা জানান, কলেজটি রাজশাহী মহানগরীর বাইরে নির্জন এলাকা খড়খড়িতে অবস্থিত। সেখানে নিরাপত্তা বলতে কিছুই নেই। তারা বলেন, মেডিকেল কলেজটিতে শিক্ষার ন্যূনতম ব্যবস্থা নেই। নেই শিক্ষক, নেই গবেষণা সরঞ্জাম। হাসপাতাল চালু না হওয়ায় ব্যবহারিক কোনো শিক্ষাও তারা পান না।
যখনই সরকারি কোনো টিম কলেজ পরিদর্শন করতে আসত, তখন ভাড়া করা শিক্ষক নিয়ে আসা হতো।
নীতিমালা লঙ্ঘনের অভিযোগে ২ নভেম্বর রাজশাহীর আলোচিত শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজটি বন্ধ ঘোষণাসহ শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধের নির্দেশ জারি করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ সচিব আবদুল মান্নান বলেন, কোনো শিক্ষার্থীর ওপর হামলা, নির্যাতন বা যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটে থাকলে আইনি প্রক্রিয়ায় অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা হবে। শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজটিতে আর শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমতি দেয়া হবে না। এই কলেজের কোনো নিবন্ধন নেই।
অভিযোগের বিষয়ে আরএমপির কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজ
ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করতেন এমডি স্বাধীন
রাজশাহীর শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মুনীরুজ্জামান স্বাধীনের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানিসহ নানা অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, স্বাধীন প্রায়ই গভীর রাতে ছাত্রীদের রুমে হানা দিতেন। এমনকি তাদের বাথরুমে গোপন ক্যামেরাও রেখেছিলেন তিনি। এতদিন তার ক্যাডারদের ভয়ে মুখ বন্ধ রেখেছিলেন তারা। স্বাধীন নিজেও শিবিরের বড় মাপের একজন ক্যাডার ছিলেন বলে জানান তারা।
শুক্রবার সন্ধ্যায় স্বাধীনের সশস্ত্র ক্যাডারদের হামলায় শাহমখদুম মেডিকেল কলেজের ১০ শিক্ষার্থী আহত হয়। এ ঘটনায় মামলা হলে পুলিশ স্বাধীনের ভাই ও তার ভাইয়ের স্ত্রীকে গ্রেফতার করে। শনিবার স্বাস্থ্য অধিদফতর ও মন্ত্রণালয়ের একটি টিম মেডিকেল কলেজ পরিদর্শন করে। এ সময় মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের কাছে শিক্ষার্থীরা এসব অভিযোগ তুলে ধরেন।
স্বাধীন পলাতক থাকায় এসব অভিযোগের বিষয়ে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া যায়।
মন্ত্রণালয়ের টিমের কাছে কয়েকজন ছাত্রী অভিযোগে বলেন, রাত ১২টার পর হোস্টেলে গিয়ে নাম ধরে ধরে মেয়েদের নিজের রুমে ডাকতেন স্বাধীন। তারা ২-৩ জন একসঙ্গে যেতে চাইলে তিনি আপত্তি করতেন। বলতেন, যাকে ডাকা হবে সেই আসবে। একবার তিনি মেয়েদের হোস্টেলের বাথরুমে গোপন ক্যামেরাও রেখেছিলেন। এ নিয়ে ছাত্রীরা প্রতিবাদ করলে উল্টো তাদেরই হয়রানি করা হয়। ছাত্রীরা আরও বলেন, এসব বিষয় অভিভাবকদের জানানো হলে স্বাধীন আরও বেপরোয়া আচরণ করতেন। অনেক সময় স্বাধীন তার ক্যাডার বাহিনীও লেলিয়ে দিতেন। একজন অভিভাবক বলেন, আমরা এই খারাপ লোকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। আমরা আমাদের মেয়েদের এই কলেজে আর একদিনের জন্যও রাখতে চাই না। শিক্ষার্থীরা জানান, কলেজটি রাজশাহী মহানগরীর বাইরে নির্জন এলাকা খড়খড়িতে অবস্থিত। সেখানে নিরাপত্তা বলতে কিছুই নেই। তারা বলেন, মেডিকেল কলেজটিতে শিক্ষার ন্যূনতম ব্যবস্থা নেই। নেই শিক্ষক, নেই গবেষণা সরঞ্জাম। হাসপাতাল চালু না হওয়ায় ব্যবহারিক কোনো শিক্ষাও তারা পান না।
যখনই সরকারি কোনো টিম কলেজ পরিদর্শন করতে আসত, তখন ভাড়া করা শিক্ষক নিয়ে আসা হতো।
নীতিমালা লঙ্ঘনের অভিযোগে ২ নভেম্বর রাজশাহীর আলোচিত শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজটি বন্ধ ঘোষণাসহ শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধের নির্দেশ জারি করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ সচিব আবদুল মান্নান বলেন, কোনো শিক্ষার্থীর ওপর হামলা, নির্যাতন বা যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটে থাকলে আইনি প্রক্রিয়ায় অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা হবে। শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজটিতে আর শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমতি দেয়া হবে না। এই কলেজের কোনো নিবন্ধন নেই।
অভিযোগের বিষয়ে আরএমপির কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।