Logo
Logo
×

শেষ পাতা

সর্বাধুনিক গভীর সমুদ্রবন্দর হবে মাতারবাড়িতে

১২শ’ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ শুরু * এপ্রিলে শুরু হবে এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের কাজ * ব্যয় হবে ৩৬ হাজার কোটি টাকা

Icon

বিশেষ সংবাদদাতা

প্রকাশ: ০৬ জানুয়ারি ২০১৮, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়িতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের আওতায় নির্মিতব্য বন্দরটিই পরে গভীর সমুদ্রবন্দরে রূপান্তরিত করা হবে। শুক্রবার মাতারবাড়িতে প্রকল্প এলাকা পরিদর্শনে এসে এ তথ্য জানিয়েছেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

মাতারবাড়িতে ১২০০ মেগাওয়াট আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফায়ার্ড পাওয়ার প্রজেক্টের অগ্রগতি বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সাংবাদিকদের জানান, এখানে একটা ডিপ সি পোর্ট তৈরি হচ্ছে ড্রেজিং করে। ১৭ মিটার ড্রাফট এখানে। ১২০০ মেগাওয়াটের কোল (কয়লা) পাওয়ার প্ল্যান্ট হচ্ছে, কোল টার্মিনাল নির্মিত হচ্ছে। কেবল তাই না, ভবিষ্যতে ল্যান্ড বেস (ভূমিতে) একটা এলএনজি টার্মিনাল করা হবে।

মাতারবাড়িতে বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের অংশ হিসেবে যে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মিত হবে, তা বিশ্বের ‘সর্বাধুনিক আর্টিফিসিয়াল ডিপ সি পোর্ট’ হবে বলেও মন্তব্য করেন প্রতিমন্ত্রী। নসরুল হামিদ বলেন, এটা হবে এনার্জি-পাওয়ার ডিপ সি পোর্ট। যেটা শুরুতে পাওয়ার, এনার্জি ও কোলের জন্য ব্যবহার করব। পরবর্তীকালে এটার এক্সটেনশন একটা গভীর সমুদ্রবন্দর হবে মাল্টিপারপাস ইউজের জন্য।

মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্রবন্দর করার লক্ষ্য ধরেই এ প্রকল্পটিতে ৩৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হচ্ছে। মাতারবাড়িতে জাপান সরকারের ঋণ সহায়তায় বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের ঠিকাদারি সংস্থা জাপানি কনসোর্টিয়াম। প্রকল্পটির দ্বিতীয় প্যাকেজের অংশ হিসেবে ১৪ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ, ২৫০ মিটার চওড়া এবং সাড়ে ১৮ মিটার গভীরতার সমুদ্র চ্যানেল নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছেন কোল পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেডের এমডি আবুল কাশেম। এছাড়া বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের অংশ হিসেবে কোল লোডিং-আনলোডিংয়ের জন্য জেটি, কোল স্টোরেজ ইর্য়াড এবং অ্যাশ পন্ড নির্মাণ করা হবে।

প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, এখানে জায়গা রাখা হচ্ছে ল্যান্ড বেসড এলএনজি টার্মিনাল এবং কোল টার্মিনাল করার জন্য। এ কোল টার্মিনাল হলে পরে সারা বাংলাদেশে যতগুলো কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র আছে সেখানে খুব সহজে কয়লা সরবরাহ দিতে পারব। এ প্রকল্পে প্রতিদিন ৮-১০ হাজার টন কয়লা লাগবে। পরে আরও বেশি কয়লা আমদানি করা হবে, যা বিভিন্ন কেন্দ্রে সাপ্লাই করব। শুক্রবার প্রকল্প এলাকায় সাংবাদিকরা পরিদর্শনে গেলে দেখা গেছে, জাপানি প্রকৌশলীদের নেতৃত্বে দেশি-বিদেশি প্রকৌশলীসহ বিভিন্ন স্তরের লোকজন কাজ করছে।

কয়েকশ’ জাপানি নয় মাস ধরে এখানে কাজ করছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। প্রকল্প এলাকায় সমুদ্র চ্যানেল নির্মাণের কাজ চলছে। প্রকল্প এলাকার দক্ষিণে বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং উত্তর অংশে বন্দর নির্মাণ করা হবে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের যন্ত্রাংশ ও কাঁচামাল কয়লা এ বন্দর ব্যবহার করেই আনা হবে। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ৪০ নটিক্যাল মাইল দূরে মাতারবাড়ির এ প্রকল্প এলাকা।

প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ২০৪০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ উৎপাদনের যে লক্ষ্য তাতে বড় সহায়ক হবে এ বিদ্যুৎ প্রকল্প। মহেশখালী-মাতারবাড়ি এলাকায় প্রায় ১৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য আছে। এর আগে সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দর করার কথা বললেও পরে সে অবস্থান থেকে সরে আসে সরকার। মাতারবাড়িতে এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির পাশাপাশি চলতি বছরের এপ্রিল থেকে গভীর সাগরে ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের কাজ শুরু হবে বলে জানান নসরুল হামিদ। এ এলাকাজুড়ে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল করারও পরিকল্পনা আছে বলে জানান তিনি।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম