যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্ট নিয়োগ

দেশের স্বার্থে যেখানে দরকার তদবির চালাব: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

 যুগান্তর প্রতিবেদন 
১৫ জানুয়ারি ২০২২, ১২:০০ এএম  |  প্রিন্ট সংস্করণ

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন বলেছেন, দেশের স্বার্থে যেখানে তদবিরের প্রয়োজন হবে সেখানে সরকার তদবির চালাবে। শুক্রবার সকালে রাজধানীর ধানমন্ডিতে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ‘ল’ অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের (বিলিয়া) এক আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ বিজিআর নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে লবিস্ট হিসাবে নিয়োগ দেয়। র‌্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ নতুন করে লবিস্ট নিয়োগ করবে কি না, জানতে চাইলে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমি এসব বলতে পারব না। আমেরিকার চর্চা এটি (লবিস্টদের কাজ)। এটা বোধ হয় ২০১৩-১৪ সালে করেছিল এবং ওরা কাজ করে। প্রত্যেক দেশেই এটি হয়, আমাদের দেশে আমরা তদবির বলি। ওই দেশে বলে প্রাতিষ্ঠানিক তদবির। যেখানে দরকার, সেখানেই আমরা তদবির চালাব। দেশেও তো কাজ করতে গেলে অনেক সময় তদবির লাগে।

‘মানবাধিকার লঙ্ঘনের’ অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র গত ১০ ডিসেম্বর র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) এবং প্রতিষ্ঠানের সাবেক ও বর্তমান ছয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সময় সময় আমাদের অনেক ধরনের দুর্যোগ আসে। আমরা সেগুলো সমাধান করি। এখনো একটা হয়তো অসুবিধা আসছে। কিন্তু আমরা এটা সমাধান করতে পারব। আমেরিকানরা পরিপক্ব জাতি। তারা দেখবে। যদিও র‌্যাবের ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলছে গত কয়েক বছরে সন্ত্রাস কমেছে। এটা তাদের নিরপেক্ষ সমীক্ষা। সেগুলো নিয়ে তারা চিন্তাভাবনা করবে। পৃথিবীজুড়ে সন্ত্রাস দূর করা ও সন্ত্রাসীদের ধরা তাদের লক্ষ্য। মাদক ও মানবপাচার কমানো তাদের লক্ষ্য। র‌্যাব এগুলো সফলভাবেই করছে। এ কারণেই র‌্যাব জনগণের আস্থা অর্জন করেছে। আমার মনে হয় সবাই এটা বুঝবে। তখন হয়তো অবস্থার পরিবর্তন হবে। মন্ত্রী আরও বলেন, গণতান্ত্রিক কারণে এ দেশ সৃষ্টি হয়েছে। গণতন্ত্রে অনেক ধাক্কা আসে। সব গণতন্ত্রেই অপরিপূর্ণতা আছে। এটা একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। আমরা দিনে দিনে পরিপক্বতা অর্জন করেছি। আমেরিকা পরিপক্বতা অর্জন করার মধ্যেও ধাক্কা খায়। এ ধরনের ধাক্কাটাক্কা আসে। কোথাও দুর্বলতা থাকলে আমরা অবশ্যই তা দূর করার চেষ্টা করব।

বিলিয়া’র ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন উপলক্ষ্যে মহামারি চলাকালীন এবং পরবর্তী সময়ে আইন ও আইনি শিক্ষা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সম্মেলনটি যৌথভাবে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ‘ল’ অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স (বিলিয়া) এবং এশিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অব ‘ল’ প্রফেসরসের (এএএলপি) উদ্যোগে আয়োজন করা হয়।

উদ্বোধনী বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মানব শিল্পের ভিত্তি এবং প্রকৃতপক্ষে মানুষের আত্মা হলো আশা। করোনা মহামারি আমাদের অনেক সময় ব্যয় করেছে। এটা আমাদের জীবনকে যেমন দীর্ঘায়িত করেছে, তেমনি চাকরি জীবনেও প্রভাব পড়েছে। অস্বীকার করার উপায় নেই যে, আমরা সম্ভবত সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং সময়ে বাস করছি। এটি এখন ব্যাপকভাবে স্বীকৃত যে, করোনা মহামারি মানব সুরক্ষা এবং উন্নয়নের সংযোগে বহুমুখী প্রভাব ফেলেছে।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিলিয়া’র চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম, সাবেক রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জমির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের অধ্যাপক ও ডিন ড. মো. রহমত উল্লাহ এবং বিলিয়ার পরিচালক অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান।

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন