ওসমানী মেডিকেল কলেজ
ছাত্রলীগের বের করে দেওয়া শিক্ষার্থীরা রাতেই ফিরেছেন
সিলেট ব্যুরো
প্রকাশ: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের শহিদ ডা. শামসুদ্দিন আহমদ ছাত্রাবাস থেকে বিতাড়িত শিক্ষার্থীরা ছাত্রাবাসে ফিরেছেন। বুধবার রাতেই তাদের নিজ নিজ কক্ষে তুলে দিয়েছে কলেজ প্রশাসন। এদিকে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ছাত্রাবাসে পুলিশ মোতায়েনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে ছাত্রাবাসে গিয়ে দেখা যায়- সেখানকার পরিবেশ শান্ত। তবে হঠাৎ পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠার শঙ্কায় শিক্ষার্থীরা। সকালে অধ্যক্ষসহ শিক্ষকরা ছাত্রাবাস পরিদর্শন করেছেন। ভোরে ছাত্রাবাসের সামনে থেকে পুলিশ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষার্থীরা জানান, তারা খুবই শঙ্কার মধ্যে রয়েছেন। বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে নেতাকর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগে ছাত্রলীগ প্রায় ৫০ শিক্ষার্থীকে ছাত্রাবাস থেকে বের করে দেয়। ছাত্রলীগের দাবি, যাদের বের করে দেওয়া হয়, তারা সবাই শিবিরের নেতাকর্মী।
বুধবার রাত ১২টা থেকে রাত পৌনে ৩টা পর্যন্ত ছাত্রাবাসের সামনে শতাধিক পুলিশ সদস্যকে অবস্থান করতে দেখা যায়। বাইরে রিকাবীবাজার-চৌহাট্টা সড়কে পুলিশের জলকামান ও সাঁজোয়াযান দেখা যায়। এ সময় ছাত্রাবাসের ভেতরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কিছুক্ষণ পরপর মিছিল করেন। অন্যদিকে ছাত্রাবাসের ফটকের ডান পাশে বিতাড়িত শিক্ষার্থীদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। তবে তারা বক্তব্য দিতে অস্বীকার করেন। রাত পৌনে ১টার দিকে মিছিল করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা রিকাবীবাজারের দিকে চলে যায়। এরপর বিতাড়িত শিক্ষার্থীদের ছাত্রাবাসের নিজ নিজ কক্ষে তুলে দেয় কলেজ কর্তৃপক্ষ। রাত দেড়টার দিকে আবার মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি কিশওয়ার জাহান ও সাধারণ সম্পাদক নাইম আহমদ, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম, ওসমানী মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসানসহ নেতাকর্মীরা ছাত্রাবাসে প্রবেশ করেন। রাত ২টার দিকে তারা মিছিল করেন। এরপর রাত আড়াইটার দিকে তারা ছাত্রাবাস থেকে চলে যান। রাত পৌনে ৩টা পর্যন্ত ছাত্রাবাসের সামনে ও আশপাশের এলাকায় পুলিশ সদস্যদের অবস্থান করতে দেখা যায়।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান যুগান্তরকে বলেন, পরিস্থিতি এখনো থমথমে। বৃহস্পতিবারও প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে শিবিরের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, পরিস্থিতি তাদের অনুকূলে ফিরলে আমাকে দেখে নেবেন। নাজমুল হাসান বলেন, ঐতিহ্য সংস্কৃতি পরিষদ নামে জামায়াত-শিবির নিয়ন্ত্রিত সংগঠনের কর্মীরা ছাত্রাবাসের বি-ব্লকে অবস্থান করছে। তিন দিন আগে ওই ব্লকের একটি কক্ষে রামদা পাওয়া গেছে। এছাড়া শিবিরের বহিরাগত নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে কয়েকজন ওই ব্লকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। এ কারণে ছাত্রলীগের নেতৃত্বে ছাত্রাবাস থেকে তাদের বের করে দেওয়া হয়। তিনি আরও বলেন, ছাত্রাবাসে শিবিরের অস্ত্র মজুত ও বহিরাগতদের অবস্থান এবং হামলা করা নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ যুগান্তরকে বলেন, বুধবার রাতে ছাত্রাবাসে সিট নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া ও পালটা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।
এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মো. ময়নুল হক যুগান্তরকে বলেন, ছাত্রাবাসে শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। কোনো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি। বের হয়ে যাওয়া শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে রাতেই ছাত্রাবাসে ফিরিয়েছি। সকালেও ছাত্রাবাস পরির্দশন করেছি।
