খাদ্যশস্য রপ্তানি নিয়ে রাশিয়া ইউক্রেন চুক্তি
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ জুলাই ২০২২, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
খাদ্যশস্য রপ্তানির জন্য ইউক্রেনের কৃষ্ণসাগরীয় বন্দরগুলো খুলে দিতে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে রাশিয়া ও ইউক্রেন। তুরস্কের ইস্তাম্বুলে স্থানীয় সময় শুক্রবার দুপুরে এ চুক্তি হয়। এতে ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে সৃষ্ট বৈশ্বিক খাদ্য সংকট কমে আসতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। খবর দ্য গার্ডিয়ান, বিবিসি ও রয়টার্সের।
ইউক্রেনে হামলা করার পর দেশটির গুরুত্বপূর্ণ বন্দরগুলোর বেশিরভাগই দখল করে রাশিয়া। এরপর সেগুলো বন্ধ করে দেয় তারা। ফলে বন্ধ হয়ে যায় ইউক্রেনের খাদ্যশস্য রপ্তানিও। এতে করে বিশ্বে খাদ্য সংকটের শঙ্কা দেখা দেয়। কারণ বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম গম উৎপাদনকারী ও রপ্তানিকারক দেশ হলো ইউক্রেন।
রাশিয়া-ইউক্রেনের খাদ্যশস্য চুক্তির বিষয়টি নিয়ে মধ্যস্থতা করেছে তুরস্ক। শুক্রবার রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং ইউক্রেনের অবকাঠামোমন্ত্রী চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান এবং জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতারেস।
এ চুক্তির মাধ্যমে আটকে থাকা ইউক্রেনের বন্দরগুলো আবার খুলে খেল। এখন ইউক্রেনের উৎপাদিত গম, সূর্যমুখী তেল, বার্লি ও ভুট্টা রপ্তানির দ্বারও খুলে গেল। চুক্তি অনুযায়ী ইউক্রেনের তিনটি বন্দর ব্যবহার করে শস্য রপ্তানি করবে দেশটি। এর মধ্যে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ওডেসা বন্দরও। আশা করা হচ্ছে চুক্তি হওয়ায় রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ বিরাজমান থাকলেও শস্য নিয়ে কোনো ঝামেলা হবে না।
এদিকে শস্য রপ্তানি এবং বাইরে থেকে ইউক্রেনের বন্দরে জাহাজ প্রবেশের বিষয়টি নজরদারি করবে তুরস্ক। ইউক্রেন যেন শস্য রপ্তানির আড়ালে জাহাজ দিয়ে কোনো অস্ত্র না আনতে পারে সেটি দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তুরস্ককে। তুরস্কের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হালুসি আকার বলেন, চুক্তি অনুযায়ী পোতাশ্রয়ে শস্যের চালানগুলো যৌথভাবে তল্লাশি করে দেখা হবে। শস্য রপ্তানিতে ইউক্রেন, রাশিয়া ও জাতিসংঘকে নিয়ে একটি সমন্বয় কেন্দ্র চালু করবে তুরস্ক।
ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওলেগ নিকোলেঙ্কো বলেন, কৃষ্ণসাগরের রপ্তানি রুটগুলোর নিরাপদ কার্যক্রম নিশ্চিতে পক্ষগুলোর ওপর বাধ্যবাধকতা দিয়ে একটি নথি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
জাতিসংঘের সাবেক সহকারী মহাসচিব লর্ড ম্যালোচ ব্রাউন বলেন, এ চুক্তিটি হচ্ছে ‘একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচনা’। তিনি এটিকে তুর্কি কূটনীতির জন্য একটি অভ্যুত্থান হিসাবে উল্লেখ করেন।
ব্রাউন বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে গমের দাম কমতে শুরু করেছে। এ চুক্তির মাধ্যমে বণ্টন, দাম ও ক্রয়ক্ষমতার সমস্যা অনেকটাই কমতে পারে। এটি কেবল তখনই বজায় থাকবে যদি চুক্তিটির অগ্রগতি হয়। প্রতিবন্ধকতাগুলো কাটিয়ে উঠে এ চুক্তিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ শুরু হিসাবে উদযাপন করা উচিত।
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর থেকে বিশ্ব খাদ্য সংকটে পড়ে। এতে আফ্রিকা ও এশিয়ার কিছু দেশে দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়তে পারে বলেও হুঁশিয়ারি দেয় জাতিসংঘ। নিরাপদে ইউক্রেনীয় শস্য রপ্তানির বিষয়ে তুরস্ক, রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিরা জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় বেশ কিছুদিন ধরে আলোচনা চালিয়ে আসছিল।
