পেয়ারা খাওয়ায় বেত্রাঘাত
কুমিল্লায় শিক্ষকের নির্দয় প্রহারে ছাত্রের মৃত্যু
কুমিল্লা ব্যুরো
প্রকাশ: ০৫ আগস্ট ২০২২, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
কুমিল্লার বরুড়ায় মেড্ডা আল মাতিনিয়া নূরানী মাদ্রাসার শিক্ষকের বেদম প্রহারে মো. সিহাব হোসেন নামের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। সিহাব উপজেলার ঝলম ইউনিয়নের শশইয়া গ্রামের শুকুর আলী ডিলারের ছেলে। অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম আব্দুর রব।
তিনি ওই মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন। হতভাগ্য সিহাব ওই শিক্ষকের তত্ত্বাবধানেই নূরানী শিক্ষা গ্রহণ করছিল। জানা গেছে, মৃত্যুর আগে সিহাব তার মায়ের কাছে শিক্ষকের বেত্রাঘাতের কারণ হিসাবে বলেছেন, সহপাঠীর কাছ থেকে একটি পেয়ারা খাওয়ায় তাকে ২শ বেত মারা হয়। বেত্রাঘাত করার সময় সিহাব বারবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলছিলেন। কিন্তু বেপরোয়া শিক্ষক ২শ বেত মারার পর ক্ষান্ত হন।
ফেসবুকে সিহাবের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানেও শিক্ষকের বেপরোয়া মারধরের সত্যতা পাওয়া যায়। এ ঘটনায় শুক্রবার সন্ধ্যায় শিক্ষক আব্দুর রবকে আটক করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে বরুড়া থানার ওসি জানিয়েছেন।
রাতে পুলিশ সিহাবের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
সিহাবের ভাবি সাবিকুন নাহার ঝুমুর বলেন, সিহাবকে কয়েকদিন আগে মাদ্রাসার শিক্ষক আব্দুর রব বেত্রাঘাত করেন। এ সময় সিহাব অসুস্থ হয়ে পড়লে শিক্ষকরা তাকে ওষুধ এনে খাওয়ান। তাতেও সে সুস্থ না হওয়ায় বৃহস্পতিবার মাদ্রাসা থেকে ফোন করে সিহাবের অসুস্থতার খবর দেয়। পরে আমার শ্বশুর মাদ্রাসায় গিয়ে তাকে বাড়িতে নিয়ে আসে। সিহাবের অবস্থা খারাপ হওয়ায় শুক্রবার সকালে তাকে বরুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
সেখানে নেওয়ার কিছুক্ষণ পর দুপুর দেড়টার দিকে সিহাবের মৃত্যু হয়। শিক্ষকের বেত্রাঘাতে ছাত্রের মৃত্যুর খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এ নিয়ে এলাকায় তোলপাড় চলছে। অভিযুক্ত শিক্ষক আব্দুর রবকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হলেও কোনো উত্তর মেলেনি।
মেড্ডা আল মাতিনিয়া নূরানী মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা আহমেদ শফি বলেন, আমি সিহাবের পরিবারের সঙ্গে কথা বলছি। এখন এ বিষয়ে কোনো কিছু বলতে পারছি না। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।
ঝলম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বলেন, আমি স্থানীয় মেম্বারের কাছে ঘটনাটি শুনেছি। আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি। বরুড়া থানার ওসি ইকবাল বাহার মজুমদার বলেন, ফেসবুকে এমন একটি বিষয় দেখার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। যাচাই-বাছাই করে সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বরুড়া থানার ওসি ইকবাল বাহার মজুমদার বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হবে।
