Logo
Logo
×

শেষ পাতা

বঙ্গবন্ধু টানেল ঘিরে চট্টলাবাসীর উচ্ছ্বাস

প্রহর গণনা শুরু

Icon

শহীদুল্লাহ শাহরিয়ার, চট্টগ্রাম

প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০২২, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

বঙ্গবন্ধু টানেল ঘিরে চট্টলাবাসীর উচ্ছ্বাস

কর্ণফুলী নদীর তলদেশে দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম টানেল ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’ ঘিরে চট্টগ্রামবাসীর মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস সৃষ্টি হয়েছে। এ টানেল নিয়ে চট্টগ্রাম নগর ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের সর্বস্তরের মানুষ মুখিয়ে আছে।

প্রধানমন্ত্রী নিজেও বলেছেন, তার মন পড়ে আছে চট্টগ্রামে। পুরো টানেল চালু করার জন্য তিনিও অপেক্ষার প্রহর গুণছেন। টানেলের ভেতর দিয়ে এপার-ওপার ঘুরে আসার প্রবল ইচ্ছার কথাও জানান তিনি।

শনিবার টানেলের দক্ষিণ টিউবের পূর্ত কাজের সমাপ্তি উদযাপন করা হয়। ঢাকার গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদযাপন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন।

টানেল নির্মাণসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ২০২৩ সালের জানুয়ারির শেষ দিকে অথবা ফেব্রুয়ারিতে বহুল প্রতীক্ষিত টানেলটি যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। টানেলটি নির্মাণে ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে। টানেলের প্রথম টিউবের নির্মাণ কাজের সমাপ্তি উপলক্ষ্যে পতেঙ্গাপ্রান্তে ছিল সাজসাজ রব। পুরো এলাকাটি নানা সাজে সাজানো হয়।

টানেল সম্পর্কিত তথ্য, ভেতরের ছবির বিভিন্ন ডিজিটাল পোস্টার, ব্যানার এলাকায় ছেয়ে গেছে। সূত্র জানায়, টানেল চালুর জন্য আরও দুই মাস অপেক্ষা করতে হতে পারে।

আনোয়ারা উপজেলা চেয়ারম্যান তৌহিদুল হক চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, পতেঙ্গাপ্রান্ত থেকে শুরু হয়ে টানেলটি কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে তার এলাকা আনোয়ারায় যুক্ত হয়েছে। এটি ব্যবহার করে সব ধরনের যানবাহন আনোয়ারা হয়ে দক্ষিণ চট্টগ্রাম তথা কক্সবাজার যাবে।

‘ওয়ান সিটি টু টাউনের’ ধারণা থেকে টানেল নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে আনোয়ারা সবচেয়ে বেশি সুফলভোগী বা লাভবান হবে। এ কারণে আনোয়ারাবাসীর আনন্দ-উচ্ছ্বাসের শেষ নেই। টানেল ঘিরে ইতোমধ্যে আনোয়ারায় পর্যটন শিল্পের বিকাশ শুরু হয়েছে। শিল্পায়নও হচ্ছে। টানেল প্রকল্প বাস্তবায়নে তিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

পতেঙ্গাপ্রান্তে টিউবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, হুইপ সামশুল হক চৌধুরী, চট্টগ্রাম সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, এমএ লতিফ এমপি, নগর আওয়ামী লীগ সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এ উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসন মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে আঞ্চলিক ভাষায় পরিবেশিত গান প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে উপভোগ করেন।

টানেলের তথ্য : কর্ণফুলীর দুই তীর সংযুক্ত করার লক্ষ্যে টানেল প্রকল্প গ্রহণ করে সরকার। দুই টিউব সংবলিত মূল টানেলের দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার। টানেল টিউবের দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার এবং ভেতরের ব্যাস ১০ দশমিক ৮০ মিটার। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম টানেল টিউবের বোরিং কাজ উদ্বোধন করেন।

২০২০ সালের ১২ ডিসেম্বর সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দ্বিতীয় টিউবের কাজ উদ্বোধন করেন। এ প্রকল্পে অর্থায়ন করছে চীনের এক্সিম ব্যাংক। ২ শতাংশ হার সুদে পাঁচ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা দিচ্ছে এ ব্যাংক। বাকি চার হাজার ৪৬১ কোটি টাকা জোগান দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।

টানেলের প্রকল্প পরিচালক হারুনুর রশীদ জানান, টানেলের দ্বিতীয় টিউবের পূর্ত কাজও কয়েক দিনের মধ্যেই শেষ হবে। এখন চলছে ইলেকট্রিক্যাল ও মেকানিক্যাল কাজ। টানেলের অভ্যন্তরে নিরাপত্তার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। টানেলে বাতাস চলাচল, অগ্নিনির্বাপণ ও আলো নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা সুনিপুণভাবে করা হচ্ছে। এক টিউব থেকে অপর টিউবে যাওয়া যাবে। ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাসে পানি যাতে ঢুকতে না পারে সেজন্য ফ্লাডগেট নির্মাণ করা হয়েছে। পানি ঢুকে পড়লে তা অটো নিষ্কাশনের ব্যবস্থাও রাখা হচ্ছে। অভ্যন্তরে থাকবে সিসিটিভি। থাকবে সেন্সর ব্যবস্থা। টানেল ব্যবহারকারী যানবাহনের টোল নির্ধারণে কমিটি কাজ করছে।

বঙ্গবন্ধু টানেল উচ্ছ্বাস

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম