মেসির হাতে বিশ্বকাপ, আনন্দে ভাসছেন মাশরাফি সাকিবরাও
ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৯ ডিসেম্বর ২০২২, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
মাশরাফি মুর্তজা ও সাকিব আল হাসান যে আর্জেন্টিনা দলের বড় ভক্ত সেটা এখন কারও অজানা নয়।
৩৬ বছর পর আর্জেন্টিনার শিরোপা জয়ে ভক্ত-সমর্থকরা আনন্দ, উচ্ছ্বাসে ভাসছে। ফ্রান্সকে হারিয়ে পরম আরাধ্য বিশ্বকাপ ট্রফি এখন বিশ্বসেরা মেসির হাতে।
মহানন্দের সেই ঢেউ লেগেছে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যেও। আর্জেন্টিনার জয়ে উচ্ছ্বসিত মাশরাফি ও সাকিব রাস্তায় নেমে পড়েছিলেন। সাধারণ মানুষের সঙ্গে তারা আনন্দ ভাগাভাগি করে নিয়েছেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট দল ফাইনাল ম্যাচটি দেখেছে চট্টগ্রামের টিম হোটেলে। একমাত্র সাকিব ঢাকায় ফেরেন।
আর্জেন্টিনার পাগলা ভক্ত হিসাবেই নিজেকে দেখাতে ভালোবাসেন মাশরাফি। রোববার বুনো উল্লাসে মেতে উঠতে রাস্তার নেমে পড়েন ছেলে ও মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে। মিরপুরে পাগলাটে উদযাপন মাশরাফি সাধারণ মানুষের সঙ্গে রাস্তায় নেমে ঢোল পিটিয়েছেন। পাশে ছেলে ও মেয়ে ঢোলের তালে নেচেছেন। সাকিব বনানীতে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়েন গায়ে মেসির জার্সি জড়িয়ে। গাড়ির স্টিয়ারিংয়ে বসেই মেসির জার্সি ঝাঁকিয়ে প্রিয় দল ও প্রিয় ফুটবলারের শিরোপা জয়ের উল্লাস প্রকাশ করেন। শুধু সাকিব ও মাশরাফিই নয়, লিটন দাস, তাসকিন আহমেদ, নাজমুল হোসেন শান্ত-জাকির হাসানরা উল্লাস করেছেন।
মাশরাফি নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে ভিডিও শেয়ার করে লিখেছেন, ‘বোঝার পরে আমার ২৮ বছরের অপেক্ষা। শেষমেশ উদযাপনটা বাচ্চাদের সঙ্গেই করতে পারলাম। অভিনন্দন আর্জেন্টিনা। আল্লাহ যদি বাঁচিয়ে রাখেন, কোনো একদিন বাংলাদেশের জন্য এমন উদ্?যাপন করতে চাই।’ তবে মাশরাফি বরাবরই গুরু হিসাবে দিয়েগো ম্যারাডোনাকে স্মরণ করেন। ট্রফি জয়ের পরও করতে ভুললেন না। মাশরাফি ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমিও আজ আবেগাক্রান্ত, আর্জেন্টিনার জয় দেখেছি অনেক, কিন্তু বিশ্বকাপ জয় প্রথম। লিও তোমার প্রতি অফুরান ভালোবাসা। কিন্তু আমার গুরু তো শুধু একজন, আজ এই পৃথিবীতে নেই। সে থাকলে আজ কী করত কে জানে! তার মতো আবেগ দিয়ে কেউ ফুটবল খেলেছে কি না সন্দেহ। গুরু তোমায় আজ অনেক মিস করছি। ওপারে ভালো থেকো, দ্য গ্রেটেস্ট ম্যারাডোনা।’
মাশরাফি লেখেন, ‘শেষমেষ দেখলাম। এমন একটা দলকে সমর্থন করি যে দলটাকে নিয়ে শুধু মজা করতে দেখেছি আর হাসির পাত্র হয়েছি। কিন্তু কখনো দলটার প্রতি বিন্দুমাত্র ভালোবাসা কমেনি বরং বেড়েছে। মাঝে মাঝে মনে হয়েছে বিশ্বকাপ জিতা দেখার প্রয়োজন নেই এভাবেই তোদের ভালোবেসে যাব, দেখি তোরা কত হারতে পারিস।’ তিনি বলেন, ‘আমার হাতের কয়েক জায়গায় কাটা দাগ আছে, ৯৮ সালে বিশ্বকাপে বাদ পড়ার পর হঠাৎ না বুঝে, ব্লেড দিয়ে কয়েক জায়গায় কেটে ফেলি। লজ্জায় কখনো বলিনি, বয়সও কম ছিল। হয়তো আবেগে করে ফেলেছিলাম। পরে ভাবতাম এটা ঠিক করিনি। আসলেই এখন ওটা ভাবলেও নিজের কাছে খারাপ লাগে।’ তিনি লেখেন, ‘তবে ওই যে ভালোবাসা, সেটা কখনো কমেনি। শুধু আশা করতাম মেসি কি একবারও পারবে না। পেরেছে এবং সবকিছু নিজের করে নিয়েছে। এত ভালো কোনো বিশ্বকাপে সে হয়তো খেলেনি। আমি সব সময় বলি স্পোর্টস ইজ ওনলি রিয়েল। এখানে মানুষের চরিত্র বোঝা যায়। এখানে যা কিছু ঘটে, তা ফেরানো যায় না। এটা শুধু আবেগ না এটা কখনো কখনো অস্তিত্ব হয়ে যায়। পৃথিবীর কোনো কাজই সহজ না। তবে স্পোর্টস থেকে জীবনে যা শেখা যায়, অন্য কিছু থেকে তা যায় না।’
লিটন দাস লিখেছেন, ‘এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না। কী এক ম্যাচ আর আর্জেন্টিনার কী এক জয়! মেসি, আপনি এর যোগ্য।’ নাজমুল হোসেন শান্ত লিখেছেন, ‘ট্রফিটা হস্তান্তর হলো ‘জিনিয়াস’ লিও মেসির হাতে। চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা।’
