তৃতীয়বারের মতো শুরু হতে যাচ্ছে গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সমন্বিত ভর্তি কার্যক্রম। চলতি মাসেই নতুন শিক্ষাবর্ষের ভর্তি কার্যক্রম শুরু হবে।

শুরুতে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছভর্তি প্রক্রিয়ায় থাকতে দ্বিমত পোষণ করলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আলোচনায় জোরালো কোনো আপত্তি তোলেনি। ফলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সম্মিলিত সিদ্ধান্তে এ মাসেই শুরু হচ্ছে গুচ্ছভর্তি কার্যক্রম।

এছাড়া গুচ্ছভর্তি প্রক্রিয়ায় যুক্ত হতে নতুন কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় আবেদন করলেও নতুনভাবে কাউকে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে না। গুচ্ছভর্তি পরীক্ষাসংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করে।

২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ২২টি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় গুচ্ছভর্তি পরীক্ষা। শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে গুচ্ছভর্তি কার্যক্রম শুরু হলেও এতে ধরা পড়ে নানা ত্রুটি ও অব্যবস্থাপনা। ফলে ভোগান্তি পোহাতে হয় ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের।

এদিকে নিজস্ব স্বকীয়তা ও মান ধরে রাখতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষক সমিতি এ পদ্ধতি থেকে বের হওয়ার দাবি জানিয়েছে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম বলেন, গুচ্ছভর্তি পরীক্ষার কারণে আমরা নিজেদের স্বকীয়তা হারাচ্ছি। মেধাবী শিক্ষার্থীরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। মাত্র কয়েকটা আসন পূরণের জন্য দশের বেশি মেধাতালিকা দিতে হয়। ফলে মেধাবী শিক্ষার্থী হারাচ্ছি আমরা।

তবে গুচ্ছভর্তি প্রক্রিয়ায় জবি থাকবে কিনা এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আগামীকাল বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে বলে জানায় একাধিক সূত্র।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, মন্ত্রীর মিটিংয়ে আমরা সমস্যার কথা বলেছি। কিছু টেকনিক্যাল ত্রুটি ও বিশৃঙ্খল বিষয়ের সমাধা করতে হবে। নিজস্ব প্রক্রিয়ায় ফিরতে আমরা উপাচার্যের কাছে চিঠিও দিয়েছি।

গুচ্ছভর্তি কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক ও জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, সবকিছু ঠিক থাকলে এ মাসেই গুচ্ছভর্তি কার্যক্রম শুরু হবে। জুলাইয়ের শুরুতেই নতুন শিক্ষাবর্ষের ক্লাস শুরু হবে। সব ত্রুটি চিহ্নিত করে একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় ভর্তি কার্যক্রম চলবে। প্রয়োজনে টেকনিক্যাল বিষয়গুলো আরও উন্নত করা হবে।

যুক্ত হচ্ছে না নতুন বিশ্ববিদ্যালয় : এবার গুচ্ছভর্তি প্রক্রিয়ায় ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ভর্তি কার্যক্রম শুরুর আবেদন করে পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের কাছে এ আবেদন জানান বিশ্ববিদ্যালয় তিনটির উপাচার্য। তবে ইউজিসি থেকে নতুন এ তিন বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থী ভর্তির বিষয়ে অনুমোদন দেওয়া হয়নি।

পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী সাইফুদ্দীন বলেন, নতুন শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য আবেদন করা হয়েছিল, কিন্তু এখনো কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।

বাজেট জটিলতা ও অবকাঠামো সমস্যার কারণে এ বছর নতুন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কার্যক্রম শুরু হবে না বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) সদস্য ড. দিল আফরোজা। তিনি বলেন, গুচ্ছের সমস্যাগুলো সমাধান করার চেষ্টা চলছে। কোনো জটিলতা ছাড়াই এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে গুচ্ছ কার্যক্রম সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।