পোশাক রপ্তানির প্রবৃদ্ধি নিয়ে শঙ্কা
বিজিএমইএ’র সংবাদ সম্মেলন
যুগান্তর প্রতিবেদন
১৯ মার্চ ২০২৩, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
উচ্চ মূল্যের পোশাক রপ্তানির কারণে বর্তমানে পোশাক প্রবৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে। পরিমাণগত দিকে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি কমেছে। যে মডেল ফলো করে পোশাক শিল্পকে এগিয়েছে, তার ওপর ভিত্তি করে আগামীতে কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জন করা কঠিন হবে।
শনিবার রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ’র কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন সংগঠনের সভাপতি ফারুক হাসান। পোশাক খাতের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, কোভিড-১৯ এর ক্ষত সেরে উঠতে না উঠতেই আমরা একটি নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছি। সাম্প্রতিক সময়ে ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে এক অস্থির পরিস্থিতি বিরাজ করছে, যার প্রভাব পড়েছে আমাদের অর্থনীতি ও শিল্পে। রপ্তানির প্রধান বাজারগুলোতে বিশেষত ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি রেকর্ড পর্যায়ে পৌঁছেছে। এসব উন্নত দেশের ভোক্তারা ভোগ্যপণ্যের ব্যয় কমিয়ে দিয়েছেন, ফলে কমে আসছে পোশাকের চাহিদা। তাই পোশাকের অর্ডার কমিয়ে দিয়েছে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো। তিনি আরও বলেন, এতসব চ্যালেঞ্জের মধ্যে থেকেও আমরা রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে পেরেছি। ২০২২ সালে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৭ দশমিক ৬৪ শতাংশ। আর ২০২৩ সালের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে মোট পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৮৩৭ কোটি ডলারের, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ দশমিক ১২ শতাংশ বেশি। তবে এই প্রবৃদ্ধি মূলত মূল্যভিত্তিক। পরিমাণের দিক থেকে কোন প্রবৃদ্ধি হয়নি, বরং ঋণাত্মক হয়েছে।
ভবিষ্যতে প্রবৃদ্ধি অর্জন কঠিন হবে মন্তব্য করে ফারুক হাসান বলেন, যে মডেল ফলো করে পোশাক শিল্প এগিয়েছে, তার ওপর ভিত্তি করে আগামী দিনে কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জন করা কঠিন হবে। সামনের দিনগুলোতে প্রতিযোগী সক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ পদক্ষেপ নিতে হবে। গত চার দশকে তৈরি পোশাক রপ্তানি ৪৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছলেও পণ্যের ম্যাটেরিয়াল ডাইভারসিফিকেশন হয়নি বললেই চলে।
তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশনের (এএএফএ) সাথে প্রথাগত লেবেলিংয়ের পরিবর্তে কিউআর কোডের মাধ্যমে ডিজিটাল লেবেলিংয়ের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এটি একদিকে যেমন পণ্যের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে, অন্যদিকে কাউন্টারফিট পণ্য উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। ডিজিটাল লেবেলিং উৎপাদন খরচ কমাবে এবং পোশাক উৎপাদনের কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমিয়ে আনবে।
ফারুক হাসান বলেন, বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য নীতিতে যে পরিবর্তনগুলো আসছে, সে বিষয়গুলোতে দেশের যথেষ্ট প্রস্তুতির প্রয়োজন আছে, তা না হলে বড় ধরনের সংকটের মধ্যে পড়তে হবে। বিশেষ করে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ মানবাধিকার ও ডিউ ডিলিজেন্স প্রটোকল গ্রহণ করছে, যেগুলো প্রতিপালন করতে সক্ষমতা তৈরি করতে হবে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
বিজিএমইএ’র সংবাদ সম্মেলন
পোশাক রপ্তানির প্রবৃদ্ধি নিয়ে শঙ্কা
উচ্চ মূল্যের পোশাক রপ্তানির কারণে বর্তমানে পোশাক প্রবৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে। পরিমাণগত দিকে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি কমেছে। যে মডেল ফলো করে পোশাক শিল্পকে এগিয়েছে, তার ওপর ভিত্তি করে আগামীতে কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জন করা কঠিন হবে।
শনিবার রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ’র কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন সংগঠনের সভাপতি ফারুক হাসান। পোশাক খাতের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, কোভিড-১৯ এর ক্ষত সেরে উঠতে না উঠতেই আমরা একটি নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছি। সাম্প্রতিক সময়ে ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে এক অস্থির পরিস্থিতি বিরাজ করছে, যার প্রভাব পড়েছে আমাদের অর্থনীতি ও শিল্পে। রপ্তানির প্রধান বাজারগুলোতে বিশেষত ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি রেকর্ড পর্যায়ে পৌঁছেছে। এসব উন্নত দেশের ভোক্তারা ভোগ্যপণ্যের ব্যয় কমিয়ে দিয়েছেন, ফলে কমে আসছে পোশাকের চাহিদা। তাই পোশাকের অর্ডার কমিয়ে দিয়েছে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো। তিনি আরও বলেন, এতসব চ্যালেঞ্জের মধ্যে থেকেও আমরা রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে পেরেছি। ২০২২ সালে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৭ দশমিক ৬৪ শতাংশ। আর ২০২৩ সালের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে মোট পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৮৩৭ কোটি ডলারের, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ দশমিক ১২ শতাংশ বেশি। তবে এই প্রবৃদ্ধি মূলত মূল্যভিত্তিক। পরিমাণের দিক থেকে কোন প্রবৃদ্ধি হয়নি, বরং ঋণাত্মক হয়েছে।
ভবিষ্যতে প্রবৃদ্ধি অর্জন কঠিন হবে মন্তব্য করে ফারুক হাসান বলেন, যে মডেল ফলো করে পোশাক শিল্প এগিয়েছে, তার ওপর ভিত্তি করে আগামী দিনে কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জন করা কঠিন হবে। সামনের দিনগুলোতে প্রতিযোগী সক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ পদক্ষেপ নিতে হবে। গত চার দশকে তৈরি পোশাক রপ্তানি ৪৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছলেও পণ্যের ম্যাটেরিয়াল ডাইভারসিফিকেশন হয়নি বললেই চলে।
তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশনের (এএএফএ) সাথে প্রথাগত লেবেলিংয়ের পরিবর্তে কিউআর কোডের মাধ্যমে ডিজিটাল লেবেলিংয়ের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এটি একদিকে যেমন পণ্যের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে, অন্যদিকে কাউন্টারফিট পণ্য উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। ডিজিটাল লেবেলিং উৎপাদন খরচ কমাবে এবং পোশাক উৎপাদনের কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমিয়ে আনবে।
ফারুক হাসান বলেন, বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য নীতিতে যে পরিবর্তনগুলো আসছে, সে বিষয়গুলোতে দেশের যথেষ্ট প্রস্তুতির প্রয়োজন আছে, তা না হলে বড় ধরনের সংকটের মধ্যে পড়তে হবে। বিশেষ করে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ মানবাধিকার ও ডিউ ডিলিজেন্স প্রটোকল গ্রহণ করছে, যেগুলো প্রতিপালন করতে সক্ষমতা তৈরি করতে হবে।