রমজানে ঘরে বসে থাকবে না আ.লীগ
সদস্য সংগ্রহ, বিরোধ মীমাংসা ও তৃণমূলের কমিটি গঠনে কাজ করবেন নেতারা
আবদুল্লাহ আল মামুন
প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের লোগো
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
রমজানে ঘরে বসে থাকবে না আওয়ামী লীগ। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সংগঠন শক্তিশালী করতে কাজ করবেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। সেই সঙ্গে সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রম এবং বিরোধপূর্ণ এলাকার নেতাদের ডেকে তাদের ঐক্যবদ্ধ করার কাজটিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেবে আওয়ামী লীগ। সম্মেলন হওয়ার পরও মাসের পর মাস, এমনকি বছর পেরিয়ে গেলেও বেশ কিছু জেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়নি। এসব জেলার কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার ব্যাপারে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলেও যুগান্তরকে নিশ্চিত করেছেন আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ নেতা।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক যুগান্তরকে বলেন, প্রতিবছর দলের নেতাকর্মীরা নিজ নিজ এলাকায় ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে থাকেন। এবারও এর ব্যতিক্রম হবে না। তবে যেহেতু জাতীয় সংসদ নির্বাচন আর দূরে নয়, তাই এই রমজানে সংগঠন শক্তিশালী করার কাজটিও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। আওয়ামী লীগের সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রমের প্রক্রিয়াটি চলমান। রমজানে অন্য কর্মসূচি কম থাকায় সব শাখা ও ইউনিট কমিটির নেতাদের সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়ার জন্যও বলা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য আবদুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, সদস্য সংগ্রহ অভিযান একটি চলমান প্রক্রিয়া। তবে যেহেতু রমজানে জাতীয় দিবস ছাড়া অন্য কোনো কর্মসূচি নেই, তাই এ কাজে বেশি মনোযোগ দিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি নেতাকর্মীদের জনসংযোগ বাড়ানোর জন্য বলা হয়েছে। কারণ, সংসদ নির্বাচন আর বেশি দূরে নয়। তিনি জানান, ইতোমধ্যে বেশ কিছু জেলার অপূর্ণাঙ্গ কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হয়েছে। বাকি যেগুলো রয়েছে, তাও দ্রুত দেওয়া হবে। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন যুগান্তরকে বলেন, রমজানে এলাকায় ইফতার মাহফিল চলবে। পাশাপাশি সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কার্যক্রম এবং সম্মেলনে সম্পন্ন হওয়া ইউনিট কমিটিগুলোর পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন এবং অনুমোদনের কাজও চলবে।
পবিত্র রমজানে কর্মসূচি কম থাকায় ইতোমধ্যে সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচি বেগবান করতে আওয়ামী লীগ বিভিন্ন শাখা ও ইউনিটের নেতাদের নির্দেশ দিয়েছে। সেই সঙ্গে যেসব জেলায় সম্মেলন করার পর এখনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি, সেগুলোর পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি ইফতার মাহফিল ছাড়াও অন্য সব উপায়ে মানুষের কাছে যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নেতাকর্মীদের। লক্ষ্য-সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম তুলে ধরা এবং প্রতিপক্ষ বিএনপির অভিযোগ খণ্ডন।
সর্বশেষ অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমপিদের হুঁশিয়ার করে বলেন, এবার নিজ দায়িত্বে জয়ী হয়ে আসতে হবে। আওয়ামী লীগ কাউকে টাকাপয়সা দিয়ে জয়ী করে আনবে না। সেজন্য এলাকায় দলের পাশাপাশি নিজের ভাবমূর্তি বাড়াতে হবে। তিনি ঘরে ঘরে গিয়ে সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম প্রচারের নির্দেশও দেন।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ১৫ মার্চ দলটির এক যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, রমজানের পবিত্রতা রক্ষার পাশাপাশি সাংগঠনিক কর্মসূচি হিসাবে সদস্য সংগ্রহ করতে হবে। সর্বোচ্চ সদস্য সংগ্রহে অভিযান চলবে মাসব্যাপী। এই অভিযান পরিচালনা করবেন বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা।
জানা যায়, নির্বাচনের আগে দলীয় ঐক্যের বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড। এর অংশ হিসাবে বিরোধপূর্ণ এলাকার নেতাদের ঢাকায় ডেকে অথবা তৃণমূলে গিয়ে তাদের মধ্যকার বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, সিলেট ও রাজশাহীর মতো বড় জেলা ও মহানগরগুলোর নেতাদের অন্তর্দ্বন্দ্ব নিয়ে বেশ চিন্তিত আওয়ামী লীগ হাইকমান্ড। দলের নীতিনির্ধারকরা আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগেই এসব জেলা ও মহানগরের নেতাদের বিরোধ মিটিয়ে ফেলতে চান।
