ঢাবি শিক্ষার্থীকে মারধর
প্রলয় চক্রের দুই সদস্য কারাগারে
ঢাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৮ মার্চ ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
প্রতীকী ছবি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় ‘প্রলয়’ সংঘবদ্ধ চক্রের ২৫ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলার পর দুজনকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সোমবার আসামি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাঈমুর রহমান দুর্জয় এবং সাকিব ফেরদৌসকে আদালতে হাজির করে পুলিশ।
তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (নিরস্ত্র) রাশেদুল আলম। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আহমেদ তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। একই সঙ্গে মামলার এজাহার গ্রহণ করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৯ মে দিন ধার্য করেছেন আদালত।
আসামি দুর্জয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও সাকিব ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগের শিক্ষার্থী। তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জোবায়ের ইবনে হুমায়ুনকে মারধরের ঘটনায় জড়িত ও ‘প্রলয়’ চক্রের সদস্য বলে অভিযোগ আছে। এদিকে সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করে জুবায়েরের ওপর হামলাকারীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন।
কয়েক দিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের কিছু শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে নানা অপকর্মের কথা সংবাদমাধ্যমে প্রচার হচ্ছে। তারা ‘প্রলয়’ চক্রের অধীনে ক্যাম্পাস এলাকায় বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। তাদের বিরুদ্ধে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাদকসেবন ও মারধরের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ বুদ্ধিজীবী ডা. মোহাম্মদ মোর্তজা চিকিৎসাকেন্দ্রের তৃতীয় তলায় তাদের একটি ‘অস্থায়ী কার্যালয়’ রয়েছে বলেও গণমাধ্যমে খবর এসেছে।
শনিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি জসীমউদ্দীন হলের সামনে স্যার এফ রহমান হলের অনাবাসিক শিক্ষার্থী জুবায়েরকে ‘প্রলয়’ চক্রের সদস্যরা মারধর করেছে বলে অভিযোগ ওঠে। তখন থেকে আলোচনায় আসে ‘প্রলয়’ চক্র। মারধরের ঘটনায় ভুক্তভোগী হুমায়ুনের মা সাদিয়া আফরোজ খান রোববার রাতে মামলা করেন। শাহবাগ থানার ওসি নূর মোহাম্মদ যুগান্তরকে বলেন, মামলায় জোবায়েরকে ‘হত্যার উদ্দেশ্যে মারধরের’ অভিযোগ আনা হয়েছে। ১৯ শিক্ষার্থীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৬-৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলায় যাদের নাম আছে-মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের ছাত্র তবারক মিয়া, সিফাত সাহিল, ফয়সাল আহম্মেদ ওরফে সাকিব, মো. সোভন ও সৈয়দ নাসিফ ইমতিয়াজ ওরফে সাইদ; সূর্য সেন হলের ফারহান লাবিব; মুহসীন হলের অর্ণব খান ও আবু রায়হান; কবি জসীমউদ্দীন হলের নাঈমুর রহমান ওরফে দুর্জয়, সাদ, রহমান জিয়া, মোশারফ হোসেন; জহুরুল হক হলের হেদায়েত নূর, মাহিন মনোয়ার, সাদমান তাওহিদ ওরফে বর্ষণ ও আবদুল্লাহ আল আরিফ; জগন্নাথ হলের প্রত্যয় সাহা ও জয় বিশ্বাস এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ফেরদৌস আলম ওরফে ইমন।
সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের (দ্বিতীয় বর্ষ) শিক্ষার্থী।
সাদিয়া আফরোজ অভিযোগে লিখেছেন, শনিবার সন্ধ্যায় তুচ্ছ ঘটনার জেরে জুবায়েরকে অভিযুক্তরা হত্যার উদ্দেশ্যে স্টাম্প, রড, বেল্ট ও বাঁশের লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে। মাথা ও চোখে গুরুতর জখম হয়। ডান পায়ের লিগামেন্ট ছিঁড়ে যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক একেএম গোলাম রব্বানী বলেন, ইতোমধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে।
এদিকে সোমবার দুপুরে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করে জুবায়েরের ওপর হামলায় জড়িতদের স্থায়ী বহিষ্কারের পাশাপাশি ‘গ্যাং’মুক্ত ক্যাম্পাসের দাবি জানান। মানববন্ধন শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামানের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন জুবায়েরের সহপাঠী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
