গ্রেফতারের পর চাঁদ পাঁচ দিনের রিমান্ডে
প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি
মামলা ডিবিতে
রাজশাহী ব্যুরো
২৬ মে ২০২৩, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘হত্যার হুমকি’ দেওয়ার অভিযোগে করা মামলায় গ্রেফতার বিএনপি নেতা আবু সাঈদ চাঁদকে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বিকালে রাজশাহীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৪ এর বিচারক রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন। এর আগে বেলা সোয়া ১১টার দিকে রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়া থানার ভেড়িপাড়া মোড় থেকে চাঁদকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর পুঠিয়া থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে করা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে চাঁদকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। রিমান্ড আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা পুঠিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুজন আলী।
আবেদনে বলা হয়, আবু সাঈদ চাঁদ একজন দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী নেতা। অতীতে হত্যা, অগ্নিসংযোগ, গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া, নাশকতাসহ অর্ধশতাধিক মামলা রয়েছে তার নামে। গত ১৯ মে বিকালে এক সমাবেশে প্রধানমন্ত্রীকে সরাসরি হত্যার হুমকি দেন তিনি। এ ধরনের হুমকি বিএনপি নেতা চাঁদের ব্যক্তিগত নাকি দলীয় সিদ্ধান্ত তা জানতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। এ কারণে তাকে রিমান্ডে নেওয়া দরকার। আদালতে পেশ করা রিমান্ড আবেদনের কারণে চাঁদের পক্ষে এদিন জামিন আবেদন করতে পারেননি তার আইনজীবীরা।
শুনানিতে রিমান্ডের বিরোধিতা করে বক্তব্য দেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি অ্যাডভোকেট পারভেজ তৌফিক জাহেদিসহ অর্ধশত আইনজীবী। বিএনপির আইনজীবীরা আদালতে বলেন, সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে মামলা দিয়ে বিএনপি নেতা চাঁদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদিকে রিমান্ডের পক্ষে বক্তব্য উপস্থাপন করেন সংশ্লিষ্ট আদালতের সহকারী পিপি অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দিন। কোর্ট পরিদর্শক রবিউল ইসলামও রিমান্ডের পক্ষে বক্তব্য তুলে ধরেন আদালতে। দুপক্ষের শুনানি শেষে বিচারক চাঁদকে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিকে রাজশাহী জেলা পুলিশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পুঠিয়া থানায় চাঁদের বিরুদ্ধে করা সন্ত্রাস দমন আইনের মামলাটি বৃহস্পতিবার দুপুরে পুঠিয়া থানা থেকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশে স্থানান্তর করা হয়েছে। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক আতিকুর রেজা সরকারকে মামলার নতুন তদন্ত কর্মকর্তা নিযুক্ত করা হয়েছে। জেলা ডিবির অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল হাই বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আইনি প্রক্রিয়া ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী আসামি আবু সাঈদ চাঁদকে ডিবি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
রাজশাহী জেলা ও মহানগর পুলিশ (আরএমপি) যৌথভাবে সড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে একটি প্রাইভেটকার থেকে চাঁদকে গ্রেফতার করা হয় বলে পুলিশের দাবি। তবে বিএনপি নেতাদের দাবি চাঁদ আদালতে যাচ্ছিলেন গাড়িতে করে। আদালতে প্রবেশের আগেই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর তাকে প্রথমে মহানগর পুলিশ সদর দপ্তরে নেওয়া হয়।
চাঁদকে গ্রেফতারের বিষয়ে দুপুরে আরএমপির সদর দপ্তরে ব্রিফিং করেন মহানগর পুলিশ। এ সময় আরএমপি কমিশনার এম আনিসুর রহমান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেওয়ায় পুঠিয়া থানায় প্রথম চাঁদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ওই মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।’
ব্রিফিংয়ে রাজশাহী রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আবদুল বাতেন জানান, বিভিন্ন অপরাধে চাঁদের বিরুদ্ধে আগে থেকেই ২০ থেকে ২৫টি মামলা চলমান আছে। প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকির ঘটনায় রাজশাহী জেলা ও মহানগরের থানাগুলোতে আরও ছয় থেকে সাতটি মামলা হয়েছে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে আরও মামলা হয়েছে। সবকিছুই আইনি প্রক্রিয়ায় হচ্ছে।
তিনি বলেন, আবু সাঈদ চাঁদ একটি প্রাইভেটকারে চড়ে পালাচ্ছিলেন। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জেলা ও মহানগর পুলিশ যৌথভাবে চেকপোস্ট বসিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। ব্রিফিংয়ে রাজশাহীর পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেনসহ অন্য পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, আবু সাঈদ চাঁদ বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং রাজশাহী জেলা কমিটির আহ্বায়ক। তিনি চারঘাট উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। গত ১৯ মে বিকালে পুঠিয়া উপজেলার শিবপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জেলা ও মহানগর বিএনপি আয়োজিত এক সমাবেশে চাঁদ বলেন, ‘আর ২৭ দফা ১০ দফার মধ্যে আমরা নাই। এক দফা-শেখ হাসিনাকে কবরস্থানে পাঠাতে হবে। শেখ হাসিনাকে কবরস্থানে পাঠাতে হবে। শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করার জন্য যা যা করার দরকার আমরা করব।’
তার এই বক্তব্যের ভিডিও একদিন পর ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। রাজশাহী জেলা ও মহানগরসহ দেশের বিভিন্ন থানায় তার নামে সন্ত্রাসবিরোধী ও মানহানি আইনে ১০টির মতো মামলা হয়েছে। ২১ মে রাতে পুঠিয়া থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে প্রথম মামলা হওয়ার পর থেকে আবু সাঈদ চাঁদ আত্মগোপনে ছিলেন।
চাঁদের গ্রেফতারের বিষয়টি হাইকোর্টকে অবহিত করেছে রাষ্ট্রপক্ষ : চাঁদের গ্রেফতারের বিষয়টি হাইকোর্টকে অবহিত করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লা ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকার্ট বেঞ্চকে অবহিত করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ইমরান আহমদ ভূঁইয়া। তখন আদালত বলেন, আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে।
এর আগে সোমবার হাইকোর্ট চাঁদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা জানতে চেয়েছিলেন। ওইদিনই রাষ্ট্রপক্ষ আদালতকে চাঁদের নামে পুঠিয়া থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়েছে বলে জানায়।
রাজবাড়ীতে চাঁদসহ ৫ জনের নামে মামলা : রাজবাড়ী প্রতিনিধি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘হত্যার হুমকি’ দেওয়ায় বিএনপি নেতা চাঁদসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৪০-৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন বিশ্বাস বৃহস্পতিবার সকালে জেলার ২নং আমলি আদালতে মামলাটি করেন।
মামলায় নাম উল্লেখ করা অন্য আসামিরা হলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, সাবেক সংসদ-সদস্য নাদিম মোস্তফা।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি
গ্রেফতারের পর চাঁদ পাঁচ দিনের রিমান্ডে
মামলা ডিবিতে
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘হত্যার হুমকি’ দেওয়ার অভিযোগে করা মামলায় গ্রেফতার বিএনপি নেতা আবু সাঈদ চাঁদকে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বিকালে রাজশাহীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৪ এর বিচারক রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন। এর আগে বেলা সোয়া ১১টার দিকে রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়া থানার ভেড়িপাড়া মোড় থেকে চাঁদকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর পুঠিয়া থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে করা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে চাঁদকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। রিমান্ড আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা পুঠিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুজন আলী।
আবেদনে বলা হয়, আবু সাঈদ চাঁদ একজন দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী নেতা। অতীতে হত্যা, অগ্নিসংযোগ, গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া, নাশকতাসহ অর্ধশতাধিক মামলা রয়েছে তার নামে। গত ১৯ মে বিকালে এক সমাবেশে প্রধানমন্ত্রীকে সরাসরি হত্যার হুমকি দেন তিনি। এ ধরনের হুমকি বিএনপি নেতা চাঁদের ব্যক্তিগত নাকি দলীয় সিদ্ধান্ত তা জানতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। এ কারণে তাকে রিমান্ডে নেওয়া দরকার। আদালতে পেশ করা রিমান্ড আবেদনের কারণে চাঁদের পক্ষে এদিন জামিন আবেদন করতে পারেননি তার আইনজীবীরা।
শুনানিতে রিমান্ডের বিরোধিতা করে বক্তব্য দেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি অ্যাডভোকেট পারভেজ তৌফিক জাহেদিসহ অর্ধশত আইনজীবী। বিএনপির আইনজীবীরা আদালতে বলেন, সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে মামলা দিয়ে বিএনপি নেতা চাঁদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদিকে রিমান্ডের পক্ষে বক্তব্য উপস্থাপন করেন সংশ্লিষ্ট আদালতের সহকারী পিপি অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দিন। কোর্ট পরিদর্শক রবিউল ইসলামও রিমান্ডের পক্ষে বক্তব্য তুলে ধরেন আদালতে। দুপক্ষের শুনানি শেষে বিচারক চাঁদকে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিকে রাজশাহী জেলা পুলিশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পুঠিয়া থানায় চাঁদের বিরুদ্ধে করা সন্ত্রাস দমন আইনের মামলাটি বৃহস্পতিবার দুপুরে পুঠিয়া থানা থেকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশে স্থানান্তর করা হয়েছে। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক আতিকুর রেজা সরকারকে মামলার নতুন তদন্ত কর্মকর্তা নিযুক্ত করা হয়েছে। জেলা ডিবির অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল হাই বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আইনি প্রক্রিয়া ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী আসামি আবু সাঈদ চাঁদকে ডিবি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
রাজশাহী জেলা ও মহানগর পুলিশ (আরএমপি) যৌথভাবে সড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে একটি প্রাইভেটকার থেকে চাঁদকে গ্রেফতার করা হয় বলে পুলিশের দাবি। তবে বিএনপি নেতাদের দাবি চাঁদ আদালতে যাচ্ছিলেন গাড়িতে করে। আদালতে প্রবেশের আগেই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর তাকে প্রথমে মহানগর পুলিশ সদর দপ্তরে নেওয়া হয়।
চাঁদকে গ্রেফতারের বিষয়ে দুপুরে আরএমপির সদর দপ্তরে ব্রিফিং করেন মহানগর পুলিশ। এ সময় আরএমপি কমিশনার এম আনিসুর রহমান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেওয়ায় পুঠিয়া থানায় প্রথম চাঁদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ওই মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।’
ব্রিফিংয়ে রাজশাহী রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আবদুল বাতেন জানান, বিভিন্ন অপরাধে চাঁদের বিরুদ্ধে আগে থেকেই ২০ থেকে ২৫টি মামলা চলমান আছে। প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকির ঘটনায় রাজশাহী জেলা ও মহানগরের থানাগুলোতে আরও ছয় থেকে সাতটি মামলা হয়েছে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে আরও মামলা হয়েছে। সবকিছুই আইনি প্রক্রিয়ায় হচ্ছে।
তিনি বলেন, আবু সাঈদ চাঁদ একটি প্রাইভেটকারে চড়ে পালাচ্ছিলেন। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জেলা ও মহানগর পুলিশ যৌথভাবে চেকপোস্ট বসিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। ব্রিফিংয়ে রাজশাহীর পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেনসহ অন্য পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, আবু সাঈদ চাঁদ বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং রাজশাহী জেলা কমিটির আহ্বায়ক। তিনি চারঘাট উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। গত ১৯ মে বিকালে পুঠিয়া উপজেলার শিবপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জেলা ও মহানগর বিএনপি আয়োজিত এক সমাবেশে চাঁদ বলেন, ‘আর ২৭ দফা ১০ দফার মধ্যে আমরা নাই। এক দফা-শেখ হাসিনাকে কবরস্থানে পাঠাতে হবে। শেখ হাসিনাকে কবরস্থানে পাঠাতে হবে। শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করার জন্য যা যা করার দরকার আমরা করব।’
তার এই বক্তব্যের ভিডিও একদিন পর ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। রাজশাহী জেলা ও মহানগরসহ দেশের বিভিন্ন থানায় তার নামে সন্ত্রাসবিরোধী ও মানহানি আইনে ১০টির মতো মামলা হয়েছে। ২১ মে রাতে পুঠিয়া থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে প্রথম মামলা হওয়ার পর থেকে আবু সাঈদ চাঁদ আত্মগোপনে ছিলেন।
চাঁদের গ্রেফতারের বিষয়টি হাইকোর্টকে অবহিত করেছে রাষ্ট্রপক্ষ : চাঁদের গ্রেফতারের বিষয়টি হাইকোর্টকে অবহিত করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লা ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকার্ট বেঞ্চকে অবহিত করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ইমরান আহমদ ভূঁইয়া। তখন আদালত বলেন, আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে।
এর আগে সোমবার হাইকোর্ট চাঁদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা জানতে চেয়েছিলেন। ওইদিনই রাষ্ট্রপক্ষ আদালতকে চাঁদের নামে পুঠিয়া থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়েছে বলে জানায়।
রাজবাড়ীতে চাঁদসহ ৫ জনের নামে মামলা : রাজবাড়ী প্রতিনিধি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘হত্যার হুমকি’ দেওয়ায় বিএনপি নেতা চাঁদসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৪০-৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন বিশ্বাস বৃহস্পতিবার সকালে জেলার ২নং আমলি আদালতে মামলাটি করেন।
মামলায় নাম উল্লেখ করা অন্য আসামিরা হলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, সাবেক সংসদ-সদস্য নাদিম মোস্তফা।