দোহার-নবাবগঞ্জে উজ্জীবিত জাতীয় পার্টি
নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উচ্ছ্বাস ও উদ্দীপনা
আজ্হারুল হক, নবাবগঞ্জ
প্রকাশ: ০৮ জুন ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
দোহার-নবাবগঞ্জ (ঢাকা-১) আসনের সংসদ সদস্য সালমা ইসলাম। ছবি: যুগান্তর
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
৫ জুন ঢাকা জেলা জাতীয় পার্টির সম্মেলনের পর থেকেই দোহার-নবাবগঞ্জে জাতীয় পার্টি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঝে একধরনের ভিন্ন আমেজ বিরাজ করছে। নিষ্ক্রিয় নেতাকর্মীরাও যেন জেগে উঠেছেন। সেই সঙ্গে এলাকার সাধারণ মানুষ ও সুধীজনের মধ্যে বেশ আগ্রহ লক্ষ করা গেছে।
রাজধানী ঢাকার পার্শ্ববর্তী উপজেলা নবাবগঞ্জের বর্ধনপাড়া এলাকায় দলীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণে সম্মেলন যেন বিশাল জনসমুদ্রে রূপ নেয়। কমতি ছিল না কোনো সাজসজ্জারও। প্রচার-প্রচারণায় ছিল গোটা এলাকা মুখোর। রাজনৈতিক মহল থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ, শ্রমিক, কৃষক, তাঁতি এবং খুদে ব্যবসায়ী-সবার সালমা ইসলামের প্রতি ভালোবাসা ও জনসমর্থন বেড়েছে, সর্বত্রই চলছে সেই আলোচনা। দেশবরেণ্য রাজনীতিবিদদের উপস্থিতিতে ঢাকা জেলা জাতীয় পার্টির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদের এমপি, জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এমপিসহ একাধিক কো-চেয়ারম্যান এবং দলের নীতিনির্ধারণী ফোরামের নেতারা ঢাকা জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি হিসাবে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সালমা ইমলাম এমপিকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দোহার-নবাবগঞ্জ (ঢাকা-১) আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেন। এর ফলে হাজার হাজার নেতাকর্মী করতালির মাধ্যমে তাদের স্বাগত জানান। ‘সালমা ইসলাম এগিয়ে চলো, আমরা আছি তোমার সাথে’-স্লোগানে মুখরিত করে তোলে সম্মেলন প্রাঙ্গণ।
সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জাতীয় নেতারা দোহার-নবাবগঞ্জ (ঢাকা-১) আসনে সালমা ইসলাম এমপিকে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করার পর থেকে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উচ্ছ্বাস ও উদ্দীপনা লক্ষ করা যাচ্ছে। বিশেষ করে দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলার ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলার কৈলাইল ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির নেতা সাওকাত হোসেন মোল্লা ও ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সভাপতি আইনুল হোসেন চৌধুরী বলেন, ঢাকা জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি হিসাবে সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সালমা ইমলাম এমপি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১ আসন থেকে সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হলে সাধারণ মানুষের জীবনমানের ব্যাপক উন্নয়ন হবে। এছাড়া রাজধানীর পাশে অবস্থিত এই উপজেলা দুটি মডেল উপজেলায় রূপান্তর হবে, ইনশাআল্লাহ।
দোহার উপজেলার জাতীয় পার্টির নেতা হায়দার ব্যাপারী বলেন, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও আমাদের নেত্রী অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি বিগত সময়ে অবহেলিত দোহার ও নবাবগঞ্জের ব্যাপক উন্নয়ন করেন। বিশেষ করে গ্রামীণ কাঁচাপাকা সড়ক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নতুন ভবন নির্মাণ, পুরোনো ভবনের সংস্কারসহ, আধুনিক বিজ্ঞানশিক্ষার অগ্রগতি ও উন্নয়নে নিজস্ব অর্থায়নে কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করেন একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।
নবাবগঞ্জ উপজেলা জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. বোরহান উদ্দিন বলেন, আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী অ্যাডভোকেট সালমা ইসলামের নিরলস পরিশ্রমে বিগত সময়ে এই অঞ্চলে ব্যাপক উন্নয়ন কাজ হয়েছে। শতভাগ বিদ্যুতায়ন, গ্রামীণ সড়ক নির্মাণ এবং কালীগঙ্গা-ইছামতী নদীতে বেশ কয়েকটি বড় সেতু নির্মাণ করা হয়। এর ফলে নবাবগঞ্জ উপজেলার সঙ্গে মানিকগঞ্জসহ দেশের বেশ কয়েকটি জেলার সড়কপথে যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। আমাদের দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলার স্বল্প আয়ের মানুষ প্রতি ঈদ ও পূজা-পার্বণে সালমা ইসলামের বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা পেয়ে থাকেন। আগামী দিনে তাকে এখান থেকে এমপি নির্বাচিত করতে পারলে অবহেলিত এই এলাকা একটি উন্নয়নমুখী অঞ্চলে রূপান্তর হবে বলে আমরা মনে করি।
জাতীয় পার্টির নবাবগঞ্জ উপজেলা সভাপতি জুয়েল আহমেদ মনে করেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রতিষ্ঠিত জাতীয় পার্টির একজন কর্মী হতে পেরে আমি নিজেকে ধন্য মনে করি। বাংলাদেশের সব উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে জাতীয় পার্টির রয়েছে ব্যাপক অবদান। বিশেষ করে সালমা ইসলাম সব শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে একজন মানবিক নেত্রী হিসাবে উপাধি পেয়েছেন। তার নেতৃত্বে কাজ করতে পেরে আমি গর্বিত। এই মানুষটি নিজের সংসার, ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপশি দোহার-নবাবগঞ্জের মেহনতি মানুষের খোঁজখবর নেন এবং সার্বক্ষণিক জনগণের পাশে থাকেন।
স্কুলশিক্ষক রাকিব বলেন, নারী নেত্রী হিসাবে সালমা ইসলামের গুণাবলি সাধারণ মানুষকে মুগ্ধ করেছে। আগামী দিনে তার মতো একজন নেত্রী এ অঞ্চলের এমপি হলে সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে। সম্মেলনে উপস্থিত গৃহবধূ রাজিয়া বলেন, জীবনে কখনো কোনো এমপির সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হয়নি। কিন্তু অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম একজন সাধারণ মানুষের মতো কথা বলেন। সহজসরল চিন্তার এ নেত্রী এমপি হলে আমাদের দুঃখ-কষ্টে তাকে কাছে পাব বলে মনে করি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বলেন, এ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে সালমা ইসলামের জনপ্রিয়তা ও ব্যক্তিগত ইমেজ বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি সারা বছরই জনগণের পাশে থাকেন। আগামী দিনে তার মতো মুক্তমনা একজন নেত্রী আমাদের পাশে থাকলে দোহার-নবাবগঞ্জে উন্নয়নকাজে সহায়ক হবে।
একজন সংবাদকর্মী জানান, প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামের অভাব পূরণে সালমা ইসলাম সাধারণ মানুষের কথা মনে করে তাদের পাশে থাকেন। এটা নবাবগঞ্জ-দোহারবাসীর জন্য এক পরম পাওয়া। সাধারণ মানুষ ও নেতাকর্মীদের কাছে তিনি যে আস্থা ও সমর্থন অর্জন করেছেন, তা এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। আমরা তার আগামী দিনের চলার পথের সহযোগী হয়ে কাজ করতে চাই।
