Logo
Logo
×

শেষ পাতা

ঢাকায় বেশি আক্রান্ত যাত্রাবাড়ী এলাকায়

ডেঙ্গুতে মৃত্যু আরও ১২, হাসপাতালে ২৭১১

ভর্তির ১ থেকে ২ দিনের মধ্যে মারা গেছেন। যাদের অধিকাংশই ডেঙ্গু শক সিন্ড্রোম ও প্লাজমা লিকেজ

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০৩ আগস্ট ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ডেঙ্গুতে মৃত্যু আরও ১২, হাসপাতালে ২৭১১

ফাইল ছবি

ডেঙ্গু রোগ সংক্রমণের ঊর্ধ্বমুখী ধারায় আগস্টের প্রথম দুদিনে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৫ হাজার (৫২৯৫) ছাড়িয়ে গেছে। দুদিনে ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। সবশেষ গত একদিনে সারা দেশের হাসপাতালে আরও ২ হাজার ৭১১ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছে। এ সময় ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৭ হাজার ১২৭ জনে। তাদের মধ্যে ২৭৩ জন মারা গেছেন মশাবাহিত এই রোগে। দেশে এর আগে শুধু ২০১৯ সাল এবং ২০২২ সালে এর চেয়ে বেশি রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। ২০২২ সালে ২৮১ জনের মৃত্যু হয়েছিল, যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত একদিনে যত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, তাদের মধ্যে ১ হাজার ৫৮১ জনই ঢাকার বাইরের। আর ঢাকায় ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ১৩০ জন। এনিয়ে গত ৪ দিনে ঢাকায় ভর্তি ৯ হাজার ১৩৯ জন এবং বাইরে ৬ হাজার ১০৭ জন। বুধবার সারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ৯ হাজার ৩২৫ জন রোগী ভর্তি ছিলেন। তাদের মধ্যে ঢাকায় ৪ হাজার ৮৬৯ জন এবং ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলায় ৪ হাজার ৪৫৬ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন শাখার (এমআইএস) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, এখন ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু আক্রান্তের হার কিছুটা বাড়তি থাকলেও রাজধানীতে ডেঙ্গু পরিস্থিতি অনেকটাই স্থিতিশীল। এমনকি রাজধানীতে সবচেয়ে ব্যস্ততম হাসপাতালগুলোতেও এখন ডেঙ্গু রোগীদের জন্য নির্ধারিত শয্যা ফাঁকা আছে বলে দাবি করেন তিনি।

বুধবার দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানিয়ে তিনি বলেন, ঢাকায় বর্তমানে সবচেয়ে বেশি ৪৯৮ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছেন মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। হাসপাতালটিতে রোগীদের জন্য শয্যা রয়েছে ৬০০টি।

রাজধানীতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ডেঙ্গু রোগী ভর্তি (৩২৩ জন) রয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এছাড়া অন্যান্য প্রায় সব হাসপাতালেই শয্যা ফাঁকা রয়েছে। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সেগুলোতে অতিরিক্ত শয্যার ব্যবস্থাও রয়েছে। তবে ঢাকার কয়েকটি এলাকায় এখনো ডেঙ্গু ঊর্ধ্বমুখী। সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো যাত্রাবাড়ী, মুগদা, উত্তরা, জুরাইন, মিরপুর। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু রোগী যাত্রাবাড়ী এলাকায়। বিভাগীয় পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা যায়, আক্রান্তের দিক থেকে ঢাকার পরেই চট্টগ্রামের অবস্থান। ডেঙ্গুতে মৃত্যু প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যারা মারা গেছেন (২৭৩ জন), তাদের প্রায় প্রত্যেকেই হাসপাতালে ভর্তির ১ থেকে ২ দিনের মধ্যে মারা গেছেন। মৃতদের মধ্যে অধিকাংশই ডেঙ্গু শক সিন্ড্রোম, যাদের প্লাজমা লিকেজ হয়েছে। এছাড়া শক সিন্ড্রোমের কারণে তাদের দেহের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আক্রান্ত হয়েছে।

এ বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ শুরু হয়েছিল বর্ষা মৌসুমের আগেই। ভরা বর্ষায় জুলাই মাসে তা ভয়ংকর রূপ নেয়। জুলাইয়ে ৩১ দিনেই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪৩ হাজার ৮৫৪ জন, মৃত্যু হয়েছে ২০৪ জনের। আগস্টের প্রথম দুই দিনে ৫ হাজার ২৯৫ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন হাসপাতালে; মৃত্যু হয়েছে ২২ জনের।

এ বছর এডিস মশা শনাক্তে চালানো জরিপে ঢাকায় মশার যে উপস্থিতি দেখা গেছে, তাকে ঝুঁকিপূর্ণ বলছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা মনে করেন এ অবস্থায় সামনে ডেঙ্গুর প্রকোপ আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ডেঙ্গু হাসপাতাল মৃত্যু

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম