রয়েল টিউলিপের শেয়ার কারসাজি তদন্তের নির্দেশ

কারসাজির আরও তথ্য
 মনির হোসেন 
২১ আগস্ট ২০২৩, ১২:০০ এএম  |  প্রিন্ট সংস্করণ

শেয়ারবাজারে রয়েল টিউলিপ সী পার্লের শেয়ার কারসাজির তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কোম্পানির শেয়ারে কারসাজি নিয়ে যুগান্তরে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের পর রোববার সকালে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে (ডিএসই) এ নির্দেশ দেন বিএসইসির সংশ্লিষ্ট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিশনার মো. আবদুল হালিম। ইতোমধ্যে দুই ব্রোকারেজ হাউজ পরিদর্শন করেছে ডিএসই-এর টিম। সংশ্লিষ্ট সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এদিকে কোম্পানির শেয়ারে কারসাজির আরও তথ্য এসেছে যুগান্তরের হাতে।

প্রসঙ্গত, শেয়ারবাজারে কারসাজির মাধ্যমে কক্সবাজারের পাঁচ তারকা হোটেল রয়েল টিউলিপ সী পার্লের শেয়ারের দাম সাড়ে ৭ মাসে সাড়ে ৭ গুণ বাড়ানো হয়। এর নেতৃত্ব দেয় মো. লুৎফুল গনি টিটু নামের এক ব্যক্তির নেতৃত্বাধীন একটি চক্র। ৮টি ব্রোকারেজ হাউজ থেকে ৫০টি বিও অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে এসব কারসাজি করা হয়েছে। এর সঙ্গে ইনসাইডার ট্রেডিং রয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে রোববার অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে যুগান্তর। এরপর নড়েচড়ে বসে কমিশন। তদন্ত করতে ডিএসইকে নির্দেশ দেওয়া হয়। তদন্তকালে ডিএসই যুগান্তরে প্রকাশিত বিও অ্যাকাউন্টগুলো ধরে সংশ্লিষ্ট ব্রোকারেজ থেকে তথ্য সংগ্রহ করবে। এরপর হাউজগুলো এবং সংশ্লিষ্টদের বক্তব্যসহ রিপোর্ট তৈরি করবে।

সূত্র জানায়, শেয়ার কারসাজির বিষয়টি চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতেই এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে কমিশনকে জানিয়েছিল ডিএসই। ওই সময় বেশ কয়েকটি ইনসাইডার ট্রেডিংয়ের (উদ্যোক্তাদের বেআইনি শেয়ার লেনদেন) বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য উল্লেখ করা হয়। তখন তাদের জরিমানা কিংবা অন্য কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নিয়ে চিঠি দিয়ে সতর্ক করে দেওয়া হয়। এরপরও চক্রটি থেমে থাকেনি।

এদিকে মো. লুৎফুল গনি টিটোর আরও বিও অ্যাকাউন্টের সন্ধান পেয়েছে যুগান্তর। নম্বরগুলো হলো ১২০৫৬৭০০৬৭৭৩৯৭০০, ১২০৬০৮০০৬৮৮৩৫৩৮৭, ১২০৩৭১০০১০২৩৯৭৬৪ ও ১৬০১৭৬০০৪৬৮২২৩৮০। এছাড়াও স্ত্রী শাম্মী নেওয়াজের নামে তিনি আরও দুটি অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করছেন, যার নম্বর ১২০৬০৮০০৬৮৮৩৫৪৫১ ও ১৬০১৭৬০০৪৬৮১৪৩৪১। এ ঘটনায় বেশকিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলেছে। ইনসাইডার ট্রেডিংয়ের পাশাপাশি কারসাজিতে জড়িত সরকারি কিছু কর্মকর্তা, একটি বেসরকারি ব্যাংকের ব্রোকারেজ হাউজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, ব্যাপক পরিচিত একজন মার্চেন্ট ব্যাংকারের গ্রুপ এবং বেসরকারি একটি টেলিভিশনের এক নারী উপস্থাপকের নেতৃত্বে গণমাধ্যমের কয়েকজন কর্মীর সম্পৃক্ততা মিলেছে। ইতোমধ্যে তাদের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ হয়েছে। সূত্রমতে, সবকিছুই বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত করা হবে।

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন