সারা দেশে ৮৬ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা
কুমিল্লায় ১০৮ বস্তা আলু জব্দ করে নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি
বগুড়ায় আলুর বাজারে স্বস্তি * কোথাও কৃত্রিম সংকট তৈরির পাঁয়তারা
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
আলু, পেঁয়াজ ও ডিমসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে সারা দেশে অভিযান অব্যাহত রেখেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এর সুফলও পাওয়া যাচ্ছে।
শনিবার বগুড়ায় সরকার নির্ধারিত দরে আলু বিক্রি করতে দেখা গেছে। এতে ক্রেতার মাঝে স্বস্তি ফিরেছে। তবে কোথাও কোথাও হিমাগার থেকে আলু বের না করে কৃত্রিম সংকট তৈরির পাঁয়তারা করছে কিছু ব্যবসায়ী। কুমিল্লায় ১০৮ বস্তা আলু জব্দ করে সরকার নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি করেছে ভোক্তা অধিকার।
শনিবার অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অভিযানে মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করা, ক্রয়ের রসিদ দেখাতে না পারাসহ নানা অনিয়মের কারণে সারা দেশে ৮৬ প্রতিষ্ঠানকে ২ লাখ ৩২ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ব্যুরো ও প্রতিনিধির পাঠানো খবর-
কুমিল্লা : নগরীর চকবাজারে অভিযান চালিয়ে সাড়ে ৬ হাজার কেজি আলু জব্দ করে সরকার নির্ধারিত ৩৫ টাকা দরে বিক্রি করেছে ভোক্তা অধিকার। ভোক্তার কুমিল্লার সহকারী পরিচালক আছাদুল ইসলাম জানান, কিছু ব্যবসায়ী বগুড়া ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ এলাকার ভাউচার নকল করে নিজেদের মতো দাম বসিয়ে আলু বিক্রি করছিলেন। তাদের গোডাউনে রক্ষিত ৬ হাজার ৪৮০ কেজি (১০৮ বস্তা) আলু জব্দ করা হয়। পরে সরকার নির্ধারিত দরে ১৯ বস্তা আলু খুচরা বিক্রেতাদের কাছে এবং ৮৯ বস্তা আলু নগরীর বিভিন্ন স্থানে ট্রাকের মাধ্যমে সাধারণের মাঝে বিক্রি করে দেওয়া হয়।
বগুড়া : শহরের রাজাবাজারে প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে সরকার নির্ধারিত ৩৬ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি হচ্ছে। এতে ক্রেতাদের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে। তবে পাকরিসহ অন্যান্য আলু ৫০ টাকার বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। আলু বিক্রেতা শাহীন হোসেন, আবদুর রশিদ ও মিজানুর রহমান জানান, শুক্রবার তারা খুচরায় ৪২ থেকে ৪৪ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করেছেন। তবে শনিবার জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কোল্ড স্টোরেজ থেকে পাইকারি ৩০ টাকা কেজি দরে আলু কিনেছেন। এরপর সরকার নির্ধারিত ৩৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন।
রংপুর : নগরীর সিটি বাজার, ধাপ বাজার, লালবাগ ও কামাল কাছনাসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রকার ভেদে আলু ৩৮ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। দাম আরও কমতে পারে বলে ধারণা করেছে সংশ্লিষ্টরা। তবে নগরীর বাইরে গ্রামঞ্চলের হাট-বাজারে আলু, ডিম ও পেঁয়াজের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে চড়া দামে বিক্রি করা হচ্ছে। ভোক্তা অধিকারের রংপুর বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. আজহারুল ইসলাম বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বেশি দামের আশায় আলু মজুত রাখছে। সরকার নির্ধারিত দাম নিয়ন্ত্রণে অভিযান চলমান থাকবে।
কালাই (জয়পুরহাট) : বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা বাজারে বেঁধে দেওয়া দাম কেউই মানছেন না। বেশি দামে আলু বিক্রি হচ্ছে। দেশি পাকরি (লাল) প্রতি কেজি ৬০ টাকা, স্ট্রিক ৫০ টাকা, ডায়মন্ড (সাদা) ৫০ টাকা, ফাটা পাকরি ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পুনট বাজারে খুচরা আলু ব্যবসায়ী ফরিদ উদ্দিন বলেন, গত ৩ দিন ধরে হিমাগারে গিয়ে আলু পাচ্ছি না। প্রশাসনের লোকজন প্রতিদিন হিমাগারে আসে তাই মজুতদাররা আলু বের করছে না। জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা রতন কুমার রায় বলেন, হিমাগার থেকে মজুতদাররা আলু বের করছে কম। এতে খুচরা বাজারে দাম কমানো যাচ্ছে না। তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ফরিদপুর : নগরকান্দা পৌরসভার পেঁয়াজ বাজারে অভিযান চালিয়েছে জেলা ভোক্তা অধিদপ্তর। এ সময় কৃষকের কাছ থেকে পেঁয়াজ ক্রয়ের রসিদ ও বিক্রয়মূল্য তালিকা হালনাগাদ না থাকায় হাজী ট্রেডার্সের মালিক আলমগীরকে ৫ হাজার টাকা, মাহবুব ট্রেডার্সের মাহবুবকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া রাজিব বাণিজ্যালয়ের রাজিবকে ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
সিরাজদিখান (মুন্সীগঞ্জ) : সিরাজদিখান উপজেলার ইছাপুরা বাজারে মূল্যতালিকা না থাকায় ৪টি প্রতিষ্ঠানকে ১২ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিকার। এরমধ্যে রুবেল স্টোরকে ৫ হাজার টাকা, আল্লাহ ভরসা স্টোর ২ হাজার টাকা, নজরুল স্টোর ৩ হাজার টাকা ও মেসার্স লিটন স্টোরকে ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
হাকিমপুর (দিনাজপুর) : হিলিতে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বাড়তি দামে আলু বিক্রি করায় এক ব্যবসায়ীকে ৫শ টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
সিলেট ও গোলাপগঞ্জ : নগরীর কালীঘাট, কাজির বাজার ও রিকাবীবাজারে বিভিন্ন আড়তের পাইকারি ও খুচরা দোকানে অভিযান চালিয়েছে জেলা প্রশাসন। এ সময় বাজারমূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। গোলাপগঞ্জ উপজেলা পৌর শহরের চৌমুহনীতে ৩টি দোকানিকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
