Logo
Logo
×

শেষ পাতা

অগ্নিসেনা হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হলো ইয়াসমিন-নাহারদের

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

অগ্নিসেনা হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হলো ইয়াসমিন-নাহারদের

গতি সেবা ত্যাগ- এই মূলমন্ত্র সামনে রেখে যে কোনো দুর্যোগ দুর্ঘটনায় জীবনবাজি রেখে সবার আগে ঝাঁপিয়ে পড়েন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের সদস্যরা।

প্রতিষ্ঠার ৪ দশক পার হলেও এ সংস্থায় এতদিন নিয়োগ দেওয়া হয়নি কোনো নারী অগ্নিসেনা। এতে ফায়ার ফাইটার হওয়ার স্বপ্ন অধরাই থেকে গেছে নারীদের। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নারীর ক্ষমতায়নের স্লোগান ধারণ করে সব সেক্টরেই কমবেশি নিয়োগ পেতে শুরু করেন নারীরা। এরই ধারাবাহিকতায় সারা দেশ থেকে ২ হাজার ৭শর বেশি প্রার্থী থেকে যোগ্যতা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ১৫ নারী নিয়োগ পেলেন।

এর মাধ্যমে একদিকে সৃষ্টি হলো নতুন ইতিহাস, অন্যদিকে ছোটবেলা থেকে লালিত স্বপ্ন পূরণ হলো নিয়োগ পাওয়া ১৫ নারী অগ্নিসেনার। তারা বলছেন, ফায়ার ফাইটারদের চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত তারা। সেই সঙ্গে নিয়োগ পেয়ে আনন্দ ও উচ্ছ্বাসে ভাসছেন সবাই। তেমনই একজন চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিজনেস ম্যানেজমেন্ট টেকনিক্যাল কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ইয়াসমিন খাতুন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বরে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ট্রেনিং কমপ্লেক্সে ফায়ার সার্ভিসে যোগদান করা প্রথম ব্যাচের মহিলা ফায়ার ফাইটারদের এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের অনুভূতির কথা জানান অনেকে। এ সময় ইয়াসমিন বলেন, ফায়ার সার্ভিস যে কোনো দুর্যোগে অংশ নেয়।

ছোটবেলা থেকেই ফায়ার ফাইটারদের এই কাজ আমার পছন্দের। ফাইটারদের চ্যালেঞ্জিং কাজগুলো ভালোবাসতাম। আমি যদি কখনো সুযোগ পাই, ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সে যোগদান করব, এমনটি ছোটবেলা থেকে স্বপ্ন বুনেছি।

ইয়াসমিন বলেন, আমি ফায়ার সার্ভিসে নারী ফায়ার ফাইটারদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখার পর আবেদন করি। সুযোগও মিলে গেল। প্রতিটা ডিপার্টমেন্টে নারী আছে। কিন্তু এই ডিপার্টমেন্টে ছিল না। আমরা এখন ইতিহাসের অংশ। হাটহাজারী কলেজের শিক্ষার্থী নাজমুল নাহার দিনা নারী ফায়ার ফাইটার হিসাবে নিয়োগ পাওয়ায় উচ্ছ্বসিত। তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিস একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। আমার প্রধান লক্ষ্য থাকবে সেবা করা।

মেহেরপুর জেলা থেকে নিয়োগ পাওয়া প্রিয়াঙ্কা বলেন, আমরা ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের গর্বিত একজন অগ্নিযোদ্ধা হতে চাই। যারা কিনা বাংলাদেশের দুর্যোগ, দুর্ঘটনা ও উদ্ধার কাজে ভূমিকা রাখবে। এটা আমাদের কাছে আশীর্বাদস্বরূপ এবং আমরা অত্যন্ত আনন্দিত এই ডিপার্টমেন্টের সদস্য হতে পেরে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন বলেন, ফায়ার ফাইটার নারী ব্যাচে ১৫ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এটা ইতিহাসের একটা অংশ, প্রধানমন্ত্রীর নারীর ক্ষমতায়নের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এই অগ্নিসেনারা নিয়োগ পেল। ইতোপূর্বে ফায়ার সার্ভিসে নারী কর্মকর্তা থাকলেও ছিল না কোনো নারী ফায়ার ফাইটার।

তিনি বলেন, কেন ফায়ার সার্ভিসে নারী ফায়ার ফাইটার নিয়োগ করলাম এ রকম একটা প্রশ্ন আসতেই পারে। অগ্নি বা যে কোনো দুর্যোগ দুর্ঘটনায় যেসব মহিলা আক্রান্ত বা আহত হন তাদের উদ্ধার করার ক্ষেত্রে অভিযান পরিচালনা করতে হয়। অভিযানে যদি মহিলা ফাইটার থাকে তাহলে কাজটি সহজ হয়। আরেকটি উদ্দেশ্য হচ্ছে রাষ্ট্রীয়ভাবে নারীর ক্ষমতায়নে যে উদ্যোগ প্রধানমন্ত্রী গ্রহণ করেছেন সেটির অংশ হিসাবে ফায়ার সার্ভিসের নারী ফায়ার ফাইটার নিয়োগ করা হলো।

যা বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী : অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বত্তৃদ্ধতায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, বিজিবি-পুলিশসহ সব সেক্টরেই নিয়োগ পেয়ে নারীরা সাহসিকতার সঙ্গে কাজ করছেন। ফায়ার সার্ভিসে ছিল না নারী অগ্নিসেনা। প্রথমবারের মতো ১৫ নারীকে নিয়োগ দিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকনির্দেশনায় প্রত্যেক উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন করেছি। উপজেলার বাইরেও যেখানে প্রয়োজন ফায়ার সার্ভিস স্টেশন তৈরি করছি। নিয়োগ পাওয়া নারী ব্যাচের সদস্যরা আরও ভালো করবেন বলে প্রত্যাশা আসাদুজ্জামান খানের।

অগ্নিসেনা

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম